কখন কোন ইস্যুতে কথা বলতে হবে, তা ইসলামি দলগুলোর শিখতে হবে

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লেবাননে ইসরায়েলি হামলা, ছবি: সংগৃহীত

লেবাননে ইসরায়েলি হামলা, ছবি: সংগৃহীত

দখলদার ইসরায়েল আমেরিকার নাচের পুতুল। আমেরিকার ইন্ধন ছাড়া ইসরায়েলের কিছু করার ক্ষমতা নেই। বাংলাদেশের আলেম-উলামা ও ইসলামি দলগুলোকে বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে।

এভাবেই আমেরিকার নেতৃত্বে ইসরায়েলের মুসলিম নিধন ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা। তারা বলছেন, গাজার পর লেবানন ও যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইয়েমেনে আমেরিকার প্রত্যক্ষ ইন্ধনে হত্যাযজ্ঞ চলছে। অথচ বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়ছে না।

বিজ্ঞাপন

তারা আরও ক্ষোভ জানান, ১০/১২ দিন আগে ভারতে মহানবী (সা.) কে কটূক্তির ঘটনায় প্রতিদিন কোনো না কোনো ইসলামি দলের পক্ষ থেকে প্রতিবাদের সংবাদ আসলেও মার্কিন নেতৃত্বে মুসলিম নিধনের মতো আরও গুরুতর ইস্যুতে এখনও প্রতিবাদ চোখে পড়ছে না। ইহুদিবাদী ও তাদের দোসররা পরিকল্পিতভাবে ইসলামি দলগুলোর দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনে দেদারসে মুসলিম নিধন করছে বলে মন্তব্য করছেন কেউ কেউ।

অনলাইনে ইসলামি দলগুলোর দূরদর্শীতা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। শেখ হাসিনার পতনের পরও ৫ মে শ্বাপলা চত্বরে বিপুল সংখ্যক আলেম-উলামা ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের গণহত্যার ঘটনায় এখনও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারায় এসব ইসলামি দলের বিরুদ্ধে উদ্বেগ জানিয়েছেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

গত এক বছর যাবৎ ইসরায়েল গাজায় হামলা ও গণহত্যা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪০ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য মানুষ আহত ও পঙ্গু হয়েছে। গাজাকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। গাজাযুদ্ধে ইসরায়েল ভয়ংকর বাংকার ব্লাস্টার বোমাসহ বিভিন্ন ধরনের বোমা ব্যবহার করছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্তত ২৫ হাজার টনের মতো বোমা গাজায় ফেলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এই হত্যা ও ধ্বংসকাণ্ড অব্যাহত আছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসরায়েল যে মুসলিম গণহত্যা করেছে তা কাগজে-কলমে যুক্তরাষ্ট্রই করছে। তার মিত্ররা করছে। ইসরায়েল চলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থে। তার গোলা বারুদ, সামরিক সরঞ্জামাদি যোগান দেয় যুক্তরাষ্ট্র। গাজাযুদ্ধে এ পর্যন্ত ইসরায়েলকে ১৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধে যে অস্ত্র ও বোমা ব্যবহৃত হচ্ছে, তাও সব যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া।

ইসরায়েল যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস করছে, গণহত্যা করছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লংঘন বা নস্যাৎ করছে, তার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের কোনো বিকার নেই, উদ্বেগ নেই। বরং দৃঢ় সমর্থন আছে। এর আগে নানা অজুহাত ও কুযুক্তিতে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা হামলা চালিয়েছে, দখল করেছে, ধ্বংস করেছে এবং অবাধ গণহত্যা চালিয়েছে।

এসব গুরুতর ইস্যুতে বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারায় কিংবা প্রতিবাদে সোচ্চার না হওয়ায় সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা। তাদের আহ্বান, সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে এসে ইসরায়েলের মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে। এ ধরনের বেপরোয়া, একদেশদর্শী যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে মুসলমানদের সতর্ক ও সাবধান হতে হবে। জাতীয় ঐক্য সংহত করতে হবে।

এ নিয়ে হামিদ রেজা লিখেছেন, আক্ষেপ হয় আমেরিকার সহায়তায় সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল লেবানন ও ইয়ামেনে গণহত্যা চালাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে তেমন কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়ছে না। তারা আছে ছোটখাটো ইস্যু নিয়ে। কখন কোন ইস্যু নিয়ে কথা বলতে হবে সেই জ্ঞান অনেক ইসলামি দলের নেই। ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশে অসংখ্য আলেম-উলামাকে হত্যা করলেও তার বিরুদ্ধে তারা এখনও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

জুলফিকার আলী লিখেছেন, আমেরিকা ছাড়া ইসরায়েলের নিজস্ব কোনো কিছু নেই। ইসরায়েল আমেরিকার নাচের পুতুল। আমেরিকার প্রত্যক্ষ ইন্ধনেই মুসলিম গণহত্যা চালাচ্ছে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটি। ইসলামি দলগুলো যত দ্রুত তা বুঝবে ততই ভালো।

জাকির হোসেন লিখেছেন, আমেরিকার প্রত্যক্ষ ইন্ধন না থাকলে ইসরায়েলের পক্ষে কখনোই এই নারকীয় তাণ্ডব চালানো সম্ভব না। অথচ এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ইসলামি দলগুলোর তেমন কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়ছে না। সবাই ১০-১২ দিন আগের ইস্যু নিয়ে পড়ে আছে, আর আমেরিকার ইন্ধনে ইসরায়েল মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।

মোহাম্মদ আহসান লিখেছেন, দরবারি আলেমরা বাংলাদেশে ইসলামি পলিটিক্সের ব্যাপক ক্ষতি ক্ষতি করেছে এবং করে যাচ্ছে এখনও। এর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে একটি বিশেষ পার্টি যারা পতিত স্বৈরাচারকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে যা অত্যন্ত ভয়ংকর।