ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সৌদি শায়েখ
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার একটু আগে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করলেন সৌদি আরবের এক বাবা।
ইসলামের বিধানে ‘দিয়ত’ (নিহত ব্যক্তির রক্তের বিনিময়স্বরূপ যে অর্থ তার (নিহতের) উত্তরাধিকারীদের দেওয়া হয়, তাকে ‘দিয়ত’ (রক্তপণ) বলা হয়।) নিয়ে হত্যাকারীকে ক্ষমার বিধান থাকলেও এই বাবা এ ধরনের কোনো অর্থ গ্রহণ করেননি। তিনি দয়াময় আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় ছেলের ঘাতককে এমনিই ক্ষমা করে দিয়েছেন।
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, মহানুভবতার পরিচয় দেওয়া এই বাবার নাম মোহাম্মদ বিন সাগাহ। তিনি সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল আসিরের বেসার এলাকার বাসিন্দা।
সৌদি আরবে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। দণ্ড কার্যকরের সময় অনেক মানুষ উপস্থিত থাকেন। ছেলের হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের দিন তিনি উপস্থিত মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধুমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রক্তের অর্থ হিসেবে এক রিয়ালও গ্রহণ করবো না।
তবে তার ছেলে কবে এবং কীভাবে হত্যার শিকার হয়েছিল সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যেহেতু হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে, তাই সংবাদমাধ্যমে তার পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি।
ক্ষমা ঘোষণার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কালো বিশত পরিহিত মোহাম্মদ বিন সাগাহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমার কথা ঘোষণা করছেন। এ সময় উপস্থিত জনতা আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে এবং তার কল্যাণের জন্য সমস্বরে দোয়া করছে। গোত্রের নেতারা তার হাতে চুমো খাচ্ছে।
সৌদি আরবে সাম্প্রতিক সময়ে হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেওয়ার অনেক ঘটনা শোনা গেছে। এ বছরই এক বাবা তার ছেলের হত্যাকারীকে দণ্ড কার্যকর করার একটু আগে ক্ষমা করে দেন। যদি তিনি ক্ষমা না করতেন তাহলে ওই ঘাতকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে যেত।
ইসলামে ক্ষমাকে একটি মহৎ গুণ হিসেবে ধরা হয়। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সব মুসলিমকে ক্ষমা প্রদর্শনের কথা বলেছেন। এমনকি যারা অমুসলিম তাদেরও ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।