ইউরোপজুড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে মুসলিমরা
ইউরোপজুড়ে মুসলিমদের জীবন ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা এজেন্সি ফর ফান্ডামেন্টাল রাইটসের (এফআরএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোয় বসবাসরত প্রায় অর্ধেক মুসলমান তাদের দৈনন্দিন জীবনে বৈষম্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্যের সম্মুখীন হচ্ছেন। ‘বিং মুসলিম ইন ইউরোপ: এক্সপেরিয়েন্সেস অব মুসলিমস’ শিরোনামে একটি জরিপ করে এফআরএ। এতে ইইউ’র ১৩টি দেশের নয় হাজার ৬০০ মুসলিম অংশ নেয়।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ ও বৈষম্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। জরিপটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের অক্টোবরের মধ্যে করা হয়েছে। জরিপে অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, সুইডেনে বসবাসকারী মুসলমানরা অংশ নেন।
মুসলিমরা জানিয়েছেন, তাদের সন্তানেরা স্কুলে বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। সেইসঙ্গে তারা চাকরির সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে অসমতা, এমনকি বাড়ি ভাড়া বা কেনার ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের আগে ইউরোপের দেশগুলোয় মুসলিমরা বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন ৩৯ শতাংশ। এরপর ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ শতাংশে।
যেসব দেশে মুসলিমরা বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তার মধ্যে অন্যতম অস্ট্রিয়া (৭১ শতাংশ), জার্মানি (৬৮ শতাংশ) এবং ফিনল্যান্ডে (৬৩ শতাংশ)। তবে মুসলিমরা যেখানে কম বৈষম্যের শিকার তার মধ্যে প্রথমে রয়েছে সুইডেন (২২ শতাংশ), স্পেন (৩০ শতাংশ) এবং ইতালি (৩৪ শতাংশ)।
গার্ডিয়ান বলছে, জরিপটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগেই সম্পন্ন হয়েছে। ওইদিন গাজা থেকে ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওইদিনের পর থেকে ইউরোপের দেশগুলোয় মুসলিমবিরোধী ঘটনা আরও বেড়েছে। এ জরিপের সহকারী লেখক ভিদা বেরেসনেভিসিউটি বলেছেন, আমরা দেখছি মুসলমানদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ইইউতে মুসলিম হিসেবে বাস করা আরও জটিল হয়ে উঠছে।