নবীর শহর মদিনায় যেভাবে পালিত হয় রমজান



যাইনাব আল গাযী, অতিথি লেখক, ইসলাম, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে কিছুটা ভিন্ন নবীর শহর বলে পরিচিত মদিনা মোনাওয়ারার রমজান চিত্র। এখানকার খাওয়া-দাওয়া ইবাদত-বন্দেগি, বাচ্চাদের ছোটাছুটি, খেলাধুলা, ইফতার ও সেহেরির আয়োজন- সব মিলিয়ে খুব মনোরম এক পরিবেশ সৃষ্টি হয় রমজান মাসে। এ পরিবেশ অন্য মাসগুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। আলাদা ঘ্রাণ অনুভূত হয়, যেন দয়াময় আল্লাহ তার রহমত দিয়ে ঢেকে নিয়েছেন এই শহরকে।

মদিনায় শাবান মাস থেকেই শুরু হয় রমজানের প্রস্তুতি। তখন থেকেই সবাই যেন মনে এটা লিখে নেন, আগত মাস উত্তম আখলাকের মাস। সবাইকে সাহায্য করার মাস। সবাইকে নিজের করে নেওয়ার মাস, সবার সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার মাস।

রমজানে শহর সাজানো হয় লাইট এবং লাল নীল প্রিন্টের কাপড় দিয়ে। উঁচু উঁচু বিল্ডিং, শপিংমল এবং রাস্তার দু’ধারের সড়কবাতির খুঁটিগুলোতে লাগানো ছোটছোট লাইট। হোটেলের দরজা, টেবিলের দস্তরখান ও ঘরবাড়ির দেয়াল থেকে শুরু করে বিভিন্নস্থানে লাল নীল কাপড় লাগিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় শহরকে।

ধনাঢ্য আরব পরিবারগুলো তাদের পরিচিত অসহায় পরিবারগুলোর প্রতি বিশেষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। অনেকে তো ঘরের ভাঙা ফার্নিচার বদলানো থেকে শুরু করে চাল ডাল তেল সব কিনে দেন। নিজেরাও নতুন প্লেট, বাটি, চামচ, গ্লাস, জগ কেনেন। পাড়া-পড়শীদের ইফতার ও সেহেরি দেওয়ার রেওয়াজ তো অনেক পুরোনো। এটা তাদের হররোজকার আমল।

রমজানে সুপারমার্কেটগুলোয় দেওয়া হয় নানা অফার। অন্যমাসে যে খাবারের দাম থাকে ১০ রিয়াল তা রমজান উপলক্ষে হয় ১ রিয়াল। খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুরই দাম একদম কমে যায়।
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য

বিভিন্ন প্রকারের পানীয়, দই, জুস, ফল, খেজুর ও কেক ইত্যাদি দিয়ে ইফতারের প্যাকেট বানিয়ে ধনীরা পথে-ঘাটে মসজিদে বিতরণ করেন। এ ছাড়া পথে পথে, বিভিন্ন অলিগলিতে পেতে দেওয়া হয় টেবিল। ওই সব টেবিলে এলাকার বাচ্চারা এরাবিয়ান স্পেশাল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, মান্তু ও বালিলা (চটপটির মতো) নিয়ে বসে থাকে রোজাদারদের আপ্যায়নের জন্য।

রমজানে প্রায় ঘরেই এ্যারাবিয়ান স্পেশাল সুরবা (স্যুপ) রান্না করা হয়। ওটস ও তাজা খাসির গোস্ত দিয়ে খুব ঘন করে রান্না হয়। এটা সারাদিন না খেয়ে থাকার ঘাটতি পূরণ করে খুব সহজে। রমজানে সুরবা হলো- আরবদের মূল খাবার। আমাদের দেশে যেমন বুটমুড়ি। সুরবা ছাড়া আরবদের ইফতার অনেকটাই অসম্পূর্ণ থাকে।

মাগরিবের এক ঘন্টা আগে থেকেই শুরু হয় বাসায় বাসায় ইফতারি দেওয়া। প্রতিবেশীর ঘরে পাঠানো ইফতারের তালিকায় থাকে সুরবা, গাহওয়া, খেজুর, সমুচা, জেলি, ক্যারোমিল ও পাস্তা ইত্যাদি। অবস্থাটা এমন কেউ যদি ঘরে ইফতার নাও বানায়, তাহলেও তার দস্তরখানা ভরে যায় নানান পদের খাবারে।

আরবরা কখনও একা ইফতার বা সেহেরি করেন না। এখানকার বয়স্ক নারীরা রমজান আসার আগে পাড়ার দু’তিন জনকে বলে রাখেন একসঙ্গে ইফতার বানানোর জন্য। রমজানে তারা একসঙ্গে ইফতার বানায় এবং আশেপাশে ১০/১৫ ঘর, দোকানপাট যা আছে সবখানে ইফতার পাঠান। আজানের আগে আগে ইফতার নিয়ে ছোট বাচ্চাদের এ বাড়ি-ও বাড়ি ছুটোছুটি করার দৃশ্য বড়ই চক্ষুশীতলকারী। বিশ্বের আর কোনো দেশে এমন দৃশ্য দেখা যায় কিনা জানি না।

মদিনায় ইফতারের প্রধান খাবার হচ্ছে- সুরবা, সমুচা ও পাস্তা। প্রধান পানীয় হচ্ছে ভিমটু (রূহআফজা) ও ট্যাং। আর ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত কিছুক্ষণ পরপর খাওয়া হয় গাহওয়া ও খেজুর। গাহওয়া হচ্ছে- খুবই তিতা কিন্তু খুবই উপকারী একটা কফি।
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য

মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কিছু খাবার খেয়ে নামাজ আদায় করেন। এরপর শুরু হয় খাবারের মূলপর্ব। এই হলো- ঘর-বাড়ির ইফতার। এবার মসজিদের ইফতার আয়োজনের কথা বলা যাক। মসজিদে নববীতে ইফতারে অন্য রকম আয়োজন করা হয়। মসজিদের ভেতরে এক রকম আর বাইরে আরেক রকম।

মসজিদের ভেতরে প্রতি কাতারে লম্বা দস্তরখানা বিছানো হয়। প্রতিজনকে এক কাপ দই, একবাটি খেজুর, বাদাম, জমজম পানি, রুটি, গাহওয়া ও একটা বিশেষ এক প্রকারের মশলা দেওয়া হয়। যার আরবি নাম দুজ্ঞা। অনেকটা আমাদের দেশের চটপটির মশলার মতো।

আর মসজিদের বাইরের আয়োজন তো বিশাল কারবার। সেখানে থাকে কাবসা, বিরিয়ানি, চিকেনফ্রাই, পরোটা, বিভিন্ন প্রকারের ফল, খেজুর ও জমজম। এক কথায় কোনো খাবারের অভাব নেই। লম্বা লম্বা দস্তরখানা বিছানো হয়। নামকরা রেস্টুরেন্টগুলো থেকে গাড়ি ভর্তি খাবার আসে। এসব খাবার দস্তরখানায় সাজিয়ে মানুষদের জোর করে এনে বসায়। আর হাসিমুখে বলে, আজ আমাদের সঙ্গে ইফতার করুন।

যে খাবারটা অর্ডার করতে ১ ঘন্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকবেন বছরের অন্য মাসে। ঠিক ওই খাবারটা খাওয়ানোর জন্য আপনাকে জোর করা হবে রমজান মাসে।

ইকামত হওয়ামাত্র পুরো মাঠ পরিষ্কার হয়ে যায়। আজান থেকে ইকামত- এটুকু সময় থাকে খাবারের। মানুষজন নামাজে দাঁড়াতে দাঁড়াতে ক্লিনাররা দস্তরখানা পরিষ্কার করে দিয়ে যান। এই হলো মসজিদে নববীর ইফতার আয়োজন।

মসজিদে নববীর ইফতারের বিশাল আয়োজনের মতো না হলেও মদিনার অন্য মসজিদগুলোর ইফতার আয়োজনও একেবারে ছোট নয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ ইফতারের আয়োজন করেন। মসজিদের বাইরে বিরাট ডেকচি খাসি দিয়ে রান্না করা এরাবিয়ান বিরিয়ানি, রোজ বোখারি ও কাবসা বিতরণ করা হয়। মসজিদের ভেতরে ও বাইরে ইফতারের জন্য দস্তরখান বিছানো হয়। অনেকে পেটপুরে খেয়ে বাসায়ও খাবার নিয়ে যান।

মদিনায় যারাই ইফতারের আয়োজন করেন না কেন, পথে-ঘাটে থাকা মানুষদের কথা ভুলেন না। তাই ছোট ছোট প্যাকেট সাজান ইফতারের। তাতে দই, রুটি, খেজুর ও জুস থাকে। কোনো প্যাকেটে থাকে বিরিয়ানি। সিগন্যালে গাড়ি থামলে যাত্রীদের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হয় সেই প্যাকেট। ঘরে-বাইরে কোনো একটা মানুষও যেনে অনাহারে না থাকেন- এটা সবাই চিন্তা করেন।
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য

ইফতার শেষে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন তারাবির নামাজে অংশ নিতে। ইফতারের পর পরই মসজিদে নববীর ভেতর কানায় পূর্ণ হয়ে মাঠও ভরে যায়। মসজিদে নববী ছাড়া আরও বেশ কিছু বড় মসজিদে তারাবির নামাজ হয়। শেষ দশ দিন মসজিদগুলো উপচেপড়ে মুসল্লি দ্বারা। তখন রাস্তাঘাটে কার্পেট বিছিয়ে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় সব মসজিদেই মহিলাদের জন্য আলাদা জায়গা থাকে।

মদিনায় খুব ধীরস্থিরভাবে তারাবির নামাজ হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ২০ রাকাত নামাজ পড়তে ২ ঘন্টার বেশি সময় লাগে। তারাবি শেষে ক্লান্ত মহিলারা বাসায় ফেরেন, পুরুষরা চলে যান কর্মস্থলে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খেলাধুলায় মেতে উঠেন রাস্তায়। এভাবে চলে সেহেরি পর্যন্ত।

মদিনায় ইফতারের যেমন আয়োজন হয়, সেহেরির সময়েও তেমন আয়োজন হয়। সেহেরিও আদান-প্রদান হয় ঘরে ঘরে। সেহেরিতে কাবসা, রোজ বুখারি থাকে। মসজিদের খাবার দেওয়া হয়। ইতেকাফকারী থেকে শুরু করে, ওমরা করতে যাওয়া ভিনদেশি ও স্থানীয় সবাই যেখানেই থাকেন না কেন, খাবার তার জন্য আশেপাশেই থাকে।

সেহেরি রান্না হয় ইফতারের সময়। তাই তারাবির পর নারীরা বেশ লম্বা সময় পান। তখন তারা কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকারসহ বিভিন্ন নফল ইবাদতে মশগুল থাকেন। ফজরের পর এলাকার কোরআন শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে সবাই এসে জমা হন। সেখানে উস্তাদের সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে তেলাওয়াত করেন। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন ঘন্টা সময় নিয়ে দেড় পারা করে তেলাওয়াত করা হয়। এরপর সবাই যার যার ঘরে ফিরে ঘুম দেন। ঘুম থেকে উঠে আবার কোরআন তেলাওয়াত করেন। আসরের আগ পর্যন্ত কেউ ঘর থেকে নামাজ ছাড়া বের হন না। কারও সঙ্গে কথা বলেন, কোনো কাজও করেন না। আসরের পরেই শুরু হয় ইফতারের আয়োজন।

রমজানের শেষ দশ দিনের চিত্র আরও ভিন্ন। তখন নারীরা তারাবি পড়ে আর ঘরে ফেরেন না। তারা একসঙ্গে তাহাজ্জুদ শেষে ঘরে ফেরেন।

ঈদের ২-৩ দিন আগে ধনীরা দরিদ্র পরিবারের বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাইকেই ঈদের নতুন কাপড় উপহার দেন। এই হলো নবীর শহর মদিনার রমজানচিত্র।

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;