ঋণগ্রস্তকে জাকাত প্রদান: বাস্তবতা, তাৎপর্য ও বিধান



ড. মুহাম্মদ শামসুল হক সিদ্দিক, অতিথি লেখক

  • Font increase
  • Font Decrease

ঋণগ্রস্তকে জাকাত দানের বিষয়টি খোদ কোরআনে কারিমে স্পষ্ট বাক্য দ্বারা বর্ণিত হয়েছে। সূরা তওবার ৬০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘জাকাত কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য এবং যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা উদ্দেশ্য তাদের খাতে, দাস মুক্তির খাতে, ঋণগ্রস্তদের উদ্দেশে, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’

এখন প্রশ্ন হলো, অনেক কারণেই তো মানুষ ঋণ করেন। কেউ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে, কেউ সামাজিক প্রয়োজনে আবার কেউ ব্যবসায়িক প্রয়োজনে। তাহলে এদের মধ্যে কাদেরকে প্রকৃত ঋণগ্রস্ত বলে ভাবা যাবে? যাদের যাকাতের টাকায় সহায়তা করা যাবে।

এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, ইসলামি স্কলারদের মতানুসারে তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে, ‘গারিমিন’ তথা ঋণগ্রস্তদের আওতায় আনা যায়।

এক. নিজের প্রয়োজনে যারা ঋণগ্রস্ত হয়েছেন।
দুই. অন্যের প্রয়োজনে যারা ঋণগ্রস্ত হয়েছেন।
তিন. সমাজের স্বার্থে যারা ঋণগ্রস্ত হয়েছেন।

এই তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে ঋণগ্রস্তদের খাতের আওতায় জাকাত দেওয়া যাবে। তবে বিষয়টি একটু ব্যাখ্যার দাবি রাখে।

নিজের প্রয়োজনে ঋণগ্রস্ত হওয়া
যখন কেউ নিজের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের জন্য ঋণ নেয়, যেমন নিজের এবং যাদের ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব পালন করতে হয়, তাদের থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ ও প্রয়োজনীয় লেখাপড়ার খরচাপাতি চালিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে ঋণ নেয়, তখন তাকে শরিয়তের পরিভাষায় বলা হয়- ‘নিজের প্রয়োজনে ঋণগ্রস্ত।’ এই মর্মে প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আত তারগিব ওয়াত-তারহিব সঙ্কলক মুহাদ্দিস ইবনে জানজুওয়েহ (জন্ম ১৮০হি.-মৃত্যু ২৫১হি.) ইমাম মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করে বলেন, তিন ব্যক্তি (কোরআনে কারিমে বর্ণিত) ঋণগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।

১. জলস্রোত যার সম্পদ ভাসিয়ে নিয়ে গেল (অর্থাৎ বন্যা, প্রবল বৃষ্টিপাত ইত্যাদির কারণে যার সম্পদ বিনষ্ট হলো)।
২. যার সম্পদ আগুনে পুড়ে ছাই হলো।
৩. যার কোনো সম্পদ নেই, কিন্তু পরিবার আছে এবং ঋণ করে করে সে তাদের ব্যয়ভার বহন করে।

সে হিসেবে বলা যায়- বন্যা, সাইক্লোন অথবা অন্যকোনো দুর্যোগের কারণে যাদের সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যায়, মৌলিকভাবে ধনীদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও সাময়িক সঙ্কট থেকে উদ্ধারের জন্য জাকাতের টাকা দিয়ে তাদের সাহায্য করা বৈধ। দুর্গতদের সহায়তার নিশ্চয়ই এ এক সুবর্ণ সুযোগ।

জাকাত নিয়ে গবেষণার ‘জাকাত বিষয়ক আন্তর্জাতিক শরিয়াহ বোর্ড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জাকাত বিষয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে বোর্ডটির সিদ্ধান্ত সব মহলেই সমাদৃত। এই বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উল্লিখিত ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিদের জাকাতের টাকা থেকে দেওয়া হলে, সে টাকা কেবল ঋণ আদায়ের জন্য ব্যয় করতে হবে। অন্যকোনো প্রয়োজনে ব্যয় করলে তা শুদ্ধ হবে না। বিষয়টি ঋণগ্রস্ত জাকাতগ্রহীতাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে। হ্যাঁ, যদি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঋণের কথা উল্লেখ না করে কেবল দরিদ্রতার কথা উল্লেখ করে জাকাত নেয় অথবা জাকাতদাতা তাকে ঋণগ্রস্ত হিসেবে নয় বরং দরিদ্র হিসেবে জাকাত দেয়, তবে লব্ধ টাকা উভয় উদ্দেশেই ব্যবহার করতে পারবে। -ফাতাওয়া ওয়া তাউসিয়াত, পৃষ্ঠা: ১২৬

অন্যের স্বার্থে ঋণগ্রস্থ হওয়া
কেউ কারও কাছ থেকে ঋণ নিলো। আর আপনি ওই ঋণের জিম্মাদার হলেন। অর্থাৎ যদি ঋণগ্রহীতা ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়, তাহলে আপনি তা আদায়ের ব্যবস্থা করবেন বলে নিশ্চয়তা দিলেন, জিম্মাদারি নিলেন। এরপর দুর্ভাগ্যবশত যদি ওই ঋণ আপনাকেই আদায় করতে হয়- তাহলে এটাকেই বলা হবে অন্যের স্বার্থে ঋণগ্রস্থ হওয়া।

যারা উল্লিখিত কায়দায় অন্যের ঋণের বোঝা নিজের মাথায় নেন, তারা ব্যক্তিগতভাবে ধনী হওয়া সত্ত্বেও যাতে ওই ঋণ আদায় করতে গিয়ে সবকিছু খুইয়ে না বসেন, সে জন্য তাদেরকে জাকাত দিয়ে সহায়তা করা যাবে।

ঋণ নেওয়া দোষের কিছু নয়। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও ঋণ নিতেন। আর ঋণগ্রহীতার স্বার্থে জিম্মাদার হওয়াও কল্যাণকর কাজ। অন্যথায় মানুষ ঋণ পাবে কি করে? তবে যদি জিম্মাদার বিপদে পড়ে যায়, তাহলে জাকাতের টাকা দিয়ে হলেও তাকে সাহায্য করার বিধান রয়েছে। নানাবিধ আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও অন্যের উপকার করার প্রেরণা যাতে বিলুপ্ত না হয়ে যায়, সে কারণে এই শ্রেণির ঋণগ্রস্তকে জাকাতের টাকা দিয়ে সাহায্য করার কথা বলা হয়েছে।

সমাজের স্বার্থে ঋণগ্রস্ত হওয়া
একটি সমাজে বসবাসরত লোকদের পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে যদি টাকা-পয়সা ব্যয় করতে হয়, বিষয়টি যে শুধু অনুমোদিত তা নয় বরং আপনি যদি এ ধরণের কল্যাণমূলক কাজ করতে যেয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে আপনি ধনী হলেও জাকাতের টাকা নিয়ে উক্ত ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। - রাফিক ইউনুস আল মিসরি, জাকাতুদ্দুয়ুন: পৃষ্ঠা-৪৩

মৃতব্যক্তির ঋণ আদায়ে জাকাত
কোনো ব্যক্তি যদি ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যান এবং তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ঋণ আদায়ের জন্য যথেষ্ট না হয়, তাহলে ওই ব্যক্তির ঋণ আদায়ের জন্য জাকাত দেওয়া যাবে বলে ইসলামি স্কলারদের কেউ কেউ মত দিয়েছেন।

জাকাত বিষয়ক আন্তর্জাতিক শরিয়াহ বোর্ডও এই মতের পক্ষে রায় দিয়েছেন। বোর্ডের এক ফতোয়ায় বলা হয়েছে, ‘জাকাতের সম্পদ থেকে মৃতব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করা বৈধ, যদি তার রেখে যাওয়া সম্পদ তা আদায়ের জন্য যথেষ্ট না হয় এবং তার উত্তারাধিকারীরা তা আদায় করতে ব্যর্থ হয়। জাকাতের টাকায় ঋণ আদায় করার মাধ্যম্যে ঋণের বোঝা থেকে ব্যক্তিকে অব্যহতি দেওয়া হয় এবং ঋণদাতাদের সম্পদও রক্ষা করা হয়।

শেষোক্ত ফতোয়াটি যেহেতু আধুনিক সম্মিলিত ইজতিহাদের ফলাফল এবং বর্তমানে যেহেতু বায়তুল মাল থেকে মৃতব্যক্তির ঋণ আদায়ের কোনো ব্যবস্থা নেই; অতএব জাকাতের টাকা দিয়ে উল্লিখিত অবস্থায় মৃতব্যক্তির ঋণ আদায় করা যাবে না বলে হানাফি মাজহাবের যে প্রাচীন ফতোয়া আছে তা রিপ্লেস করা যায় কিনা, আশা করি বিজ্ঞ মুফতি সাহেবরা চিন্তা করে দেখবেন।

   

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;