হিসাব রক্ষক ও ফিল্ড সুপারভাইজার এখন সরকারি হজগাইড!



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন হজমৌসুমে সৌদি আরবে সরকারি হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সেবাদানের জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৪৯ জন হজগাইডের চূড়ান্ত একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় হাজিদের গাইড হিসেবে নাম এসেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগীয় অফিসের পরিচালক, উপ-পরিচালক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ফিল্ড সুপারভাইজার, মাস্টার ট্রেইনার ও হিসাব রক্ষকের।

প্রতি ৪৫ জন হজযাত্রীর জন্য একজন হজগাইড নির্বাচন করা হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি হজগাইড নির্বাচন করেন। কিন্তু হজগাইড নির্বাচনে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অফিস, হাব ও বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তদবিরই হলো- হজগাইড নির্বাচনের অন্যতম মাপকাঠি। এভাবে অযোগ্য, অনভিজ্ঞদের হজগাইড নির্বাচনের কূফল পড়ে হাজিদের ওপর।

এক কথায়, হজগাইড নিয়োগে কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। যোগ্য ও শিক্ষিত আলেম ও ইসলামি ব্যক্তিত্বকে নিয়োগ না দিয়ে উপরোক্ত শ্রেণির লোকদের হজগাইড নিয়োগ করার কারণে হজযাত্রীরা গাইডের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এবারের নিয়োগপ্রাপ্ত হজগাইডের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের দেখাশোনা করা, তাদের হজের কাজে সর্বাত্মক সহায়তা করা, মক্কা-মদিনা-মিনা-মুজদালিফা ও আরাফায় পথ প্রদর্শন ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য যে হজগাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে; তার অধিকাংশই নতুন ও অনভিজ্ঞ। এমনকি তারা আরবি পড়তে ও লিখেতে জানেন না। যেখানে তারা নিজেরেই নতুন, সেখানে তারা হাজিদের কীভাবে সেবা দেবে তা বোধগম্য নয়।

বিগত হজ মৌসুমে দেখা গেছে, সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত এসব গাইডের অধিকাংশ আরবি জানেন না, এমনকি প্রয়োজনীয় ইংরেজিও না। ফলে তারা সৌদি আরবে হজ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। হজযাত্রীদের সমস্যাগুলো সৌদি হজকর্মী ও মোয়াল্লেমদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরতে পারেন না। ইশারা-ইংগিত আর সেই সঙ্গে আধো আরবি-ইংরেজি ও উর্দুর মিশেলে এমনভাবে কথা বলেন, তা আর বুঝার কোনো উপায় থাকে না। ফলে হজযাত্রীদের সমস্যার সমাধান না হয়ে সমস্যা আরও বাড়ে। হজযাত্রীরা উপকার বা কোনো সহায়তা পান না।

ভুক্তভোগী হজযাত্রী ও আলেম-ওলামারা বলেন, পূর্বঅভিজ্ঞতা ছাড়া একজন হজগাইড কোনো হজযাত্রীকে অর্থবহ সহযোগিতা করতে পারেন না। তাদের প্রশ্ন আরবি ভাষা না জানা গাইড হজযাত্রীদের কেনাকাটা, চলাফেরা ও রাস্তাঘাট চিনিয়ে দেওয়া এবং টাকা পয়সা লেনদেন কি সঠিকভাবে সহায়তা করবেন? তাদের মতে কী ধরণের মানদণ্ডের ভিত্তিতে সরকার হজগাইড নিয়োগ দিয়ে থাকেন- তা স্পষ্ট করা উচিত। এ ব্যাপারে একটি নীতিমালা অনুসরণ করা উচিত। কোনো ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ফল ভালো হয় না। হজগাইড মনোনয়নে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি হওয়া হজযাত্রীদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

অভিজ্ঞদের মতে, একটি কাফেলার হজযাত্রীদের হজ নষ্ট করার জন্য একজন অনভিজ্ঞ গাইডই যথেষ্ট। আলেম-ওলামাদের মতে অতীতে হজযাত্রীদের জন্য বিমান ভাড়া, বাড়ি ভাড়া ও গাইড নিয়োগে অনেক রাজনীতি ও দুর্নীতি হয়েছে। গাইড মনোনয়নে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় প্রভাবশালীদের সুপারিশ ও দলের অযোগ্য আলেমদের ফ্রি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কারণে অতীতে সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। এসব দিক বিবেচানায় হজগাইড নিয়োগে সরকারকে অধিকতর আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। অন্তত একবার হজ করেছেন এমন ব্যক্তিকে হজগাইড হিসেবে নিয়োগ দান, গাইডের বয়স ৫০ এর অধিক না হওয়া, উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া এবং আরবিতে পারদর্শীদের হজগাইড হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তারা।

জানা গেছে, হজগাইড নিয়োগ করার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটি রয়েছে। কমিটির বাছাইকৃত তালিকা ও সুপারিশ আমলে নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্তভাবে হজগাইড নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

শুধু হজগাইড নয়, পবিত্র হজের সময় বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সেবার জন্য একাধিক দল পাঠানো হয়। তারা সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় অবস্থান করে হজযাত্রী নানাবিধ সেবা দিয়ে থাকেন। নিঃসন্দেহে এটা একটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু হজযাত্রীদের সেবার জন্য বিভিন্ন দলে যাদের নাম বাছাই করা হয়- তাতে বড় রকমের দুর্নীতি হয় প্রতিবার।

হজের সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান আলাদা আলাদা কয়েকটি দল গঠনে কাজ করেন। এই তালিকা তৈরি নিয়ে ব্যাপক তদবির হয়, সেই সঙ্গে রয়েছে এলাকাপ্রীতি, স্বজনপ্রীতি এবং অর্থ লেনদেনেরও অভিযোগ। কোনো দলের সদস্য হজের মৌসুমে সৌদি আরবে এক-দেড় মাস কাজ করার জন্য ৫/৬ লাখ টাকা থেকে শুরু করে কেউ কেউ ৭/৮ লাখ টাকা পর্যন্ত পান। আবার অনেকেই পান শুধুমাত্র বিনা খরচে হজের সুযোগ।

   

মক্কা প্রবেশে কঠোর বিধি-নিষেধ, ১৩৮ ভাষার অনুবাদ ডিভাইস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মক্কার একটি চেকপয়েন্ট, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার একটি চেকপয়েন্ট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের স্থানীয় হিসাবে বৃহস্পতিবার জিলকদ মাসের ১৫ তারিখ। আজ থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে প্রবেশে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে। পবিত্র হজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির জননিরাপত্তাবিষয়ক অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে, ১৫ জিলকদ) থেকে শুরু হওয়া এ বিধি-নিষেধ হজের পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে। এ সময়ে স্থানীয়দের মক্কায় প্রবেশে প্রয়োজন হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন।

আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন হজের প্রস্তুতি এবং হজযাত্রীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বিনা অনুমতিতে মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে হজের স্থানগুলোতে কাজ করার অনুমোদন, মক্কায় বসবাসকারীর আইডি ও হজের অনুমোদন ছাড়া মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, অনুমোদন ছাড়া যারা মক্কায় প্রবেশ করতে চাইবে তাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ফিরিয়ে দেবে।

সব ধরনের ভিজিট ভিসায় মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধুমাত্র হজ ভিসাধারীরা মক্কায় প্রবেশ করতে পারবেন। ভিজিট ভিসার ধরন যাই হোক না কেন, এটি হজ পারমিট নয় এবং এই ধরনের ভিসাধারী ব্যক্তিদের হজ করার অনুমতি নেই'। মন্ত্রণালয় সতর্কতা জারি করে আরও বলেছে, কোনো ভিজিট ভিসাধারী যদি মক্কায় থাকে, তাদের অবিলম্বে চলে যেতে হবে। হজ ভিসা ব্যতীত অন্য যেকোনো ধরণের ভিসাধারীরা মক্কায় প্রবেশের চেষ্টা করলে বা মক্কার ভেতরে পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৩৮ ভাষায় তাত্ক্ষণিক অনুবাদ ডিভাইস
সৌদি পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগের মুখপাত্র মেজর নাসির আল ওতাইবি জানিয়েছেন, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য, কর্মকর্তাদের ১৩৮ ভাষায় দ্রুত অনুবাদের ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হজযাত্রীদের সম্ভাব্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩ লাখের বেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

;

৬৫ বছর বয়সী ভ্যানচালকের উমরার স্বপ্নপূরণ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী, ছবি: সংগৃহীত

ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিল সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়ালার ঘর তওয়াফ ও মদিনা শরিফে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবরক জিয়ারত করার, রাসুলের রওজায় সালাম পেশ করার। অবশেষে লালিত সেই স্বপ্ন ২০২৪ সালের ২ মে পূরণ করেছেন ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী। ৬৫ বছর বয়সী এই ভ্যানচালক বরিশালের মুলাদী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বড়চর মাধবপুরের মো. আ. রব বেপারীর ছেলে।

পবিত্র উমরার স্বপ্নপূরণ প্রসঙ্গে ফরিদ বেপারী বলেন, ‘ভালো কাজের নিয়ত করলে আল্লাহতায়ালা তার ব্যবস্থা করে দেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতেই আমার উমরা পালন করা সম্ভব হয়েছে।’

জানা গেছে, ভ্যান চালিয়ে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করেন। সংসারের খরচ চালানোর পরে হাতে কিছুই থাকে না। তার পাঁচ ছেলে সন্তান রয়েছে। ছোট ছেলে তার সঙ্গে থাকে। বাকি ছেলেরা আলাদা সংসার করে। নিজের আয় দিয়েই উমরা পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য তিনি দিন-রাত ভ্যান চালিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন।

গত ৩০ বছর ধরে তিনি ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছেন। স্ত্রীর শরীরের অবস্থা ভালো না থাকায় উমরা পালনে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি বলে মনে অনেক দুঃখ তার। উমরা পালন করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। উমরা পালন করতে কোনো ঋণ করেননি তিনি। কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে টাকা উপার্জন করে উমরা পালন করেছেন তিনি।

ফরিদ বেপারী আবারও উমরা পালন করার আশা করছেন। এ জন্য সবার দোয়াও কামনা করেন তিনি।

;

ইন্দোনেশিয়ান নারীর ২২ বার হজ-উমরার অবিস্মরণীয় স্মৃতি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৬৪ সালে ছয় বছর বয়সী ইন্দোনেশিয়ান মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো হজপালন করতে সৌদি আরব যান। তারপর থেকে তিনি উমরা এবং হজপালনের জন্য আরও ২২ বার মক্কা-মদিনা ভ্রমণ করেছেন।

সুরাবায়া বিমানবন্দরের মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ হলে মরিয়ম মুনির তার ২২ বার সৌদি আরব ভ্রমণের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে আলাপ করছিলেন সৌদি প্রেস এজেন্সির এক প্রতিনিধির সঙ্গে।

আলাপকালে তিনি বলেন, আজ থেকে ৬০ বছর আগে, তার পরিবার হজ করার জন্য প্রথম ভ্রমণ করেন, ভ্রমণটি ছিল বেশ ব্যয়বহুল। একটি পুরোনো জাহাজে করে সৌদি আরব আসতে পাঁচ থেকে আট মাস সময় লেগেছিল।

জাহাজগুলো প্রথমে জাকার্তা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। পরে ভারত, আরব সাগর এবং লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে জেদ্দা বন্দরে পৌঁছায়। তিনি বলেন, যাত্রাটি বিপদ, চ্যালেঞ্জ এবং ভয়ে পরিপূর্ণ ছিল। তবে, ফরজ ইবাদতপালনের বাধ্যবাধকতার জন্য তার পরিবারের ইচ্ছা ও সাধনা পথের কষ্ট সেভাবে দাগ কাটেনি। বরং এ সময়টা আমাদের আরও শক্তি জুগিয়েছে। কাবা দেখার ইচ্ছাকে প্রবল করেছে। মসজিদে নববিতে যাওয়ার এবং রাসুলের রওজা জিয়ারতের ভালোবাসা সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, মক্কা নগরিতে পৌঁছার পর আমাদের শরীর পুরোপুরি সতেজ হয়ে উঠে। আর মসজিদে নববিতে যেয়ে মনে হতো, আত্মা যেন সতেজ হয়ে উঠছে।

মুনির অতীতে হজকে ঘিরে ইন্দোনেশিয়ানদের বিভিন্ন ঐতিহ্য সম্পর্কেও কথা বলেন।

ইন্দোনেশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ হজপালনে সৌদি আরব যান

মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বলেন, হজযাত্রীরা সবাই জাকার্তায় জড়ো হবেন এবং যাত্রার আগে তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদায় জানাবেন- এটাই আমাদের রীতি। হজ শেষ করে দেশে ফেরার পর হজযাত্রীদের পরিবার তাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন এবং তাদের ধর্মীয় যাত্রার পরিপূর্ণতা উদযাপন করে বিভিন্ন উপহার দিয়ে উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়।

মরিয়মের মতে, উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মক্কায় ভ্রমণ এখন অনেক সহজ হয়েছে, যার ফলে পবিত্র নগরীতে উমার ও হজপালনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। অতীতের হজযাত্রাকে বর্তমান যাত্রার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় ভিন্নতার জগৎ।

তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে তারা এখানে (ইন্দোনেশিয়া) বসে মক্কায় পৌঁছেছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা সৌদি সরকারের একটি অনুকরণীয় অর্জন। এ সময় মুনির সৌদি সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জনসংখ্যার নিরিখে ইন্দোনেশিয়া হলো, সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি হজযাত্রী প্রতিবছর হজপালনে সৌদি আরব যান। চলতি বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে ২ লাখ ৪১ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। ১২ মে থেকে দেশটির হজফ্লাইট শুরু হয়েছে।

;

হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ, ছবি: সংগৃহীত

হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কাবাঘরের কিসওয়া তথা কালো গিলাফ নিচ থেকে ওপরে তিন মিটার তুলে তাতে সাদা কাপড়ে মোড়ানো হয়েছে। কেউ বলেন, কাবাকে ইহরাম পড়ানো হয়েছে, এর মাধ্যমে হজের প্রস্তুতির স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

বুধবার ২২ মে (১৫ জিলকদ) প্রতিবছরের মতো এবারের হজের প্রস্তুতি হিসেবে তা করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর এভাবে কাবার গিলাফের নিচের অংশ ওপরের তোলার কারণ কী, তা অনেকের অজানা।

মূলত হজের সময় পবিত্র মসজিদে হারামে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। কাবা ঘরের কালো গিলাফের কিছু অংশ ওপরে উঠিয়ে রাখা এর অন্যতম। এর বদলে একটি সাদা কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাপড়টি আড়াই মিটার চওড়া এবং চার দিকে ৫৪ মিটার দীর্ঘ।

কিসওয়াটি বেশ কয়েকটি পর্যায়ে উত্তোলন করা হয়। প্রথমে চারদিক থেকে কভারের নীচের অংশটি খুলে দেওয়া হয়, ফলে কোণগুলো আলাদা হয়ে যায়। তার পর নীচের দড়ি খুলে ফিক্সিং রিং থেকে সরিয়ে ওপরের দিকে টেনে তোলা হয়।

ইসলামের সূচনাকাল থেকে হজের সময় কাবার গিলাফ সুরক্ষায় এই রীতি চলে আসছে। অতীতে গিলাফের কিছু অংশ হাতের কাছে পেয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে।

অনেকে গিলাফকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক বস্তু বলে মনে করে। অনেকে সেই কাপড়ে নিজের নাম লিখে স্বস্তিবোধ করে। অথচ এসব কাজের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই হাজিদের ভিড়ের মধ্যেও গিলাফ সুরক্ষিত রাখতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কাবার গিলাফ ওপরে তোলা হচ্ছে, ছবি: সংগৃহীত

আর খালি স্থানে সাদা কাপড় দিয়ে কাবাঘর মোড়ানো হয়। মূলত এর মাধ্যমে হজের সময় ঘনিয়ে আসার কথা স্মরণ করানো হয়। কাবার দেয়ালের সাদা কাপড় হজের পূর্বপ্রস্তুতির জানান দেয়। হজের শেষ সময় পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকে। এরপর আগের মতো পুনরায় কালো গিলাফ নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রতিবছর ১৫ জিলকদ বা এর এক দিন আগে-পরে কাবার গিলাফের অংশ ওপরে তোলা হয়। এরপর থেকেই হাজিদের ভিড় ও তাওয়াফ শুরু হয়। প্রচণ্ড ভিড়েরর কারণে তখন আর গিলাফ ওপরে তোলা সম্ভব হয় না।

কাবার গিলাফ ওপরে তুলতে বুধবার রাতে নিরাপত্তা কর্মীরা পবিত্র কাবাকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন। এ সময় বিশেষ প্রযুক্তিগত দল কিসওয়া ওপরে উঠানোর কাজ করে। ১০টি ক্রেনের সাহায্যে ৩৬ জন কর্মী কাজটি সম্পন্ন করেন।

রীতি অনুযায়ী ৯ জিলহজ পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকবে। এরপর হজের দিন নতুন গিলাফ লাগানো হয়।

;