ঈদের প্রয়োজনীয় মাসয়ালা ও আমল



ইসলাম ডেস্ক

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদতে মশগুল থাকবে তার অন্তর সেদিনও মৃত্যুবরণ করবে না, যেদিন সবার অন্তর মৃতপ্রায় হয়ে যাবে।’ -সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৭৮২

ঈদের দিনের সুন্নতসমূহ
১. অন্যদিনের তুলনায় সকালে ঘুম থেকে উঠা। -তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ২৮৫৯

২. মিসওয়াক করা। -তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ২৮৫৯

৩. গোসল করা। -সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩১৫

৪. শরিয়তসম্মত সাজসজ্জা করা। -সহিহ বোখারি শরীফ: ৯৪৮

৫. সামর্থ্য অনুযায়ী উত্তম পোশাক পরিধান করা। উল্লেখ্য, সুন্নত আদায়ের জন্য নতুন পোশাক জরুরি না। -তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ২৮৯

৬. সুগন্ধি ব্যবহার করা। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৬৮

৭. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে মিষ্টি জাতীয় জিনিস, যেমন খেজুর ইত্যাদি খাওয়া। তবে ঈদুল আজহাতে কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া এবং ঈদের নামাজের পর নিজের কোরবানির পশুরু গোশত দ্বারা আহার করা উত্তম। -সহিহ বোখারি শরীফ: ৯৫৩

৮. সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া। -সুনানে আবু দাউদ: ১১৫৭

৯. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করা। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৬৮

১০. ঈদের নামাজ ঈদগাহে আদায় করা সুন্নত। বিনাউজরে মসজিদে আদায় করা উচিত না। -সহিহ বোখারি শরীফ: ৯৫৬

১১. যে রাস্তায় ঈদগাহে যাবে সম্ভব হলে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা। -সহিহ বোখারি শরীফ: ৯৮৬

১২. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া। -তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ২৯০

১৩. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে তাকবির বলতে থাকা। তাকবির হলো- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

তবে ঈদুল আজহাতে যাওয়ার সময় তাকবির উচ্চ আওয়াজে পড়তে থাকবে। -বায়হাকি: ৬১৩০

ঈদের মুস্তাহাবসমূহ
১. সাধ্যানুযায়ী অধিক পরিমাণে দান-খয়রাত করা। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৬৯

২. আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে ঈদ মনে করে আনন্দ এবং খুশি প্রকাশ করা। -তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ২৮৯

. নিজ মহল্লার মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করা। ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে সর্বদা আদায় করা অত্যন্ত জরুরি এবং ওয়াজিব। তবে দুই ঈদের ফজরের নামাজ মহল্লার মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা অতি উত্তম। -তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ২৮৯-২৯০

ঈদের নামাজের নিয়মকানুন
প্রথমে কান বরাবর উভয় হাত তুলবে। তারপর নিয়ত করবে, আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ এই ইমামের পিছনে পড়ছি। অতঃপর তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত নাভির নিচে বাঁধবে এবং সানা (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা) পুরোটা পড়বে। তারপর তিনটি অতিরিক্ত তাকবির বলবে। প্রথম দু’বার হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে হাত ছেড়ে দিতে হবে, পরে তৃতীয় বার হাত কান পর্যন্ত তুলে আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে চুপ করে ইমামের কেরাত শ্রবণ করবে।

এভাবে প্রথম রাকাত আদায়ের পর দ্বিতীয় রাকাতের কেরাতের পর তিন বার হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে প্রত্যেকবার আল্লাহু আকবার বলে হাত ছেড়ে দেবে। এরপর চতুর্থ বার হাত না তুলে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে চলে যাবে এবং অবশিষ্ট নামাজ অন্য নামাজের ন্যায় সম্পন্ন করবে। -ফাতাওয়ায়ে শামি: ১/১৭২

ঈদের মাসআলা-মাসাইল
১. মসজিদের বিছানা, চাটাই ও শামিয়ানা ইত্যাদি ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া দুরুস্ত। -ফাতাওয়ায়ে শামি: ৩/৩৫৯

২. যে ব্যক্তি দাড়ি শেভ করে অথবা একমুষ্ঠির কম রাখে তাকে ইমাম বানানো জায়েয নেই। ঈদ এবং অন্যান্য নামাজের ক্ষেত্রেও একই হুকুম। ইমামতির ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারীর দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। বরং শরীয়তের দৃষ্টিতে ইমামতির যোগ্য হওয়া জরুরি। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/৫৫৯

৩. ঈদের নামাজের পূর্বে নিজ ঘরে বা ঈদগাহে ইশরাক ইত্যাদি নফল পড়া নিষিদ্ধ। ঈদের জামাতের পরেও ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া মাকরূহ। হ্যাঁ, ঘরে ফিরে ইশরাক, চাশত নফল পড়তে কোনো অসুবিধা নেই। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৬৯

. ঈদের নামাজের সালাম ফেরানোর পর মোনাজাত করা মোস্তাহাব। ঈদের খুতবার পরে মোনাজাত করা মোস্তাহাব নয়। -মুসনাদে আহমদ: ২২১৮

৫. শরিয়ত অনুমোদিত সমস্যা ব্যতীত ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করা সুন্নতের খেলাফ। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৬৯

৬. যদি ইমাম অতিরিক্ত তাকবির ভুলবশতঃ না বলে, আর ঈদের জামাত অনেক বড় হয়; তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কায় সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় না। সুতরাং সিজদায়ে সাহু করতে হবে না। আর যদি এমন হয় যে, উপস্থিত সবাই সিজদায়ে সাহু সম্পর্কে অবগত হতে পারে; তাহলে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। - আদ্দুররুল মুখতার: ২/৯২

৭. ঈদের দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর তাকবির ওয়াজিব। যদি কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে শরিক হয় তাহলে সে প্রথমে দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলবে। অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায় হাত তুলে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলবে। এরপর রুকুর তাকবির বলে রুকুতে শামিল হবে। -আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৭৪

৮. যদি কেউ প্রথম রাকাতে রুকুর পূর্বে জামাতে শরিক হয় এবং তাকবিরে তাহরিমার পর দাঁড়ানো অবস্থায় হাত তুলে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলার সুযোগ না পায় তাহলে রুকুতে গিয়ে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলবে। তবে সেক্ষেত্রে কান পর্যন্ত হাত উঠাবে না। -আদ্দররুল মুখতার: ১/২৭৪

৯. যদি প্রথম রাকাত ছুটে যায় তাহলে ইমামের সালামের পর দাঁড়িয়ে প্রথমে সূরা-কেরাত পড়বে। অতঃপর রুকুর পূর্বে তিন বার হাত তুলে তিন তাকবি দেবে। তারপর রুকুর তাকবির বলে রুকু সিজদা করে যথা নিয়মে নামাজ সম্পন্ন করবে। -রুদ্দুল মুহতার: ২/১৭৪

১০. ঈদের ময়দানে জানাজার নামাজ পড়া জায়েজ। প্রথমে ঈদের নামাজ অতঃপর জানাজার নামাজ এরপর খুতবা হবে। -রদ্দুল মুহতার: ৪/৩৫৬

১১. বর্তমানে অনেক খতিব ঈদের খুতবার শুরুতে ও মাঝে যে তাকবিরে তাশরিক বলেন নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। বরং এ ব্যাপারে সঠিক মাসয়ালা হলো, প্রথম খুতবার শুরুতে নয় বার, দ্বিতীয় খুতবার শুরুতে সাত বার এবং দ্বিতীয় খুতবার শেষে মিম্বর থেকে নামার পূর্বে চৌদ্দ বার শুধু ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। এটাই মোস্তাহাব। খুতবার সময় বা খুতবার মাঝে তাকবিরে তাশরিক বলবে না। হ্যাঁ, ঈদের নামাজ শেষে সালাম ফিরিয়ে তাকবিরে তাশরিক একবার বলবে। - আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৭৫

১২. নামাজের পর ঈদের দুই খুতবা শ্রবণ করা ওয়াজিব। যদি খুতবা শোনা না যায়, তাহলে চুপচাপ বসে থাকবে। অনেক লোক সালামের পর খুতবা না শুনেই চলে যায়, এটা সুন্নতের খেলাফ।
-আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৫৯

১৩. খুতবার মধ্যে মুসল্লিদের কথাবার্তা বলা নিষেধ। এমনকি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম উচ্চারিত হলে মুখে দরূদ পড়া নিষেধ। তবে অন্তরে পড়তে পারবে। তেমনিভাবে খুতবার মধ্যে দানবাক্স বা রুমাল চালানোও নিষেধ এবং গুনাহের কাজ। -মুসনাদে আহমদ: ১০১৪০

১৪. উভয় খুতবা শেষ হলে ঈদের নামাজের সব কাজ শেষ হলো। এরপর ঈদের আর কোনো কাজ নাই। সুতরাং খুতবা শেষ হলে সবাই নিজের বাড়িতে ফিরে আসবে।

বর্তমানে দেখা যায়, ঈদের খুতবার পরে লম্বা মোনাজাত হয়; এটা মোস্তাহাব নয়। তারপর মানুষ পরস্পরে কোলাকুলি করে। এগুলো ঈদের কোনো আমল নয়। সুতরাং এটা ঈদের সুন্নত মনে করা ভুল, বরং এটা দেখা সাক্ষাতের সুন্নত।

কোনো ভাইয়ের সঙ্গে অনেক দিন পর সাক্ষাত হলে প্রথমে সালাম বিনিময় করবে, তারপর মুসাফাহা করবে; তারপর কোলাকুলি করবে। সুতরাং ঈদের নামাজের আগে সাক্ষাত হলে তখনই এটা সেরে ফেলবে। আর যদি ঈদের খুতবার পর এরূপ কারও সঙ্গে সাক্ষাত হয় তাহলে কোলাকুলি করবে। এরূপ করবে না যে, সাক্ষাত হলো নামাজের পূর্বে কিন্তু কোলাকুলি করা হলো- খুতবার পরে। -ফাতাওয়ায়ে শামি: ৬/৩৮১

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;