কোরআন মানব জীবনের মহান পথপ্রদর্শক



ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
কোরআন মানব জীবনের মহান পথপ্রদর্শক, ছবি: সংগৃহীত

কোরআন মানব জীবনের মহান পথপ্রদর্শক, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যা বারবার পড়তে হয়, তাকেই কোরআন বলা হয়। ‘কোরআন’ আরবি শব্দ। কোরআন যেহেতু বারবার পঠিত হয়, তাই এর এরূপ নামকরণ। অথবা কোরআন অর্থ সংযুক্ত করা। যেহেতু এক আয়াত অন্য আয়াতের সঙ্গে এবং এক সূরা অন্য সূরার সঙ্গে সংযুক্ত করে কোরআন শরিফকে গ্রন্থে রূপদান করা হয়েছে, তাই এরূপ নামকরণও সার্থক হয়েছে।

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়তের সুদীর্ঘ ২৩ বছর জীবনকালে হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন সময় প্রয়োজন অনুযায়ী যে বাণী অবতীর্ণ করেছেন, তার সংকলিত রূপই হলো- কোরআন। কোরআন সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় বর্তমানের মানবজাতির নিকট মজুত আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে- ইনশাআল্লাহ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি কোরআন নাজিল করেছি এবং আমিই এর হেফাজতকারী।’

তথ্য-প্রযুক্তির চাকচিক্যময় চোখ ধাঁধানো এ যুগেও যে গ্রন্থটি সম্পর্কে বিশ্ববাসীর বিস্ময়ের অন্ত নেই তার নাম কোরআনে কারিম। কোরআন একাধারে বিশ্ব পরিচালনার সংবিধান, বিজ্ঞান গ্রন্থ, সমাজ বিজ্ঞান এবং একটি আধ্যাত্মিক গ্রন্থ। জ্ঞানের এমন কোনো শাখা আজও উদ্ভব হয়নি, যে সম্পর্কে কোরআনে উল্লেখ নেই। কিয়ামত পর্যন্ত মানব জাতির সব চাহিদা ও জিজ্ঞাসার জবাব এই কোরআন।

কোরআনের ব্যবহারিক পরিচয়
সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব: কোরআন ১০৪ খানা আসমানি কিতাবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ বিধান গ্রন্থ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘এটা অতীতের সব কিতাবের সত্যতা প্রমাণকারী।’

পরিপূর্ণ জীবন বিধান: আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আজকের এই দিনে আমি দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিলাম।’ বস্তুত কোরআন নাজিল শেষ করার পরই আল্লাহ এই ঘোষণা প্রদান করেন। কিয়ামত পর্যন্ত মানব জাতির জীবন সমস্যার সকল সমাধান কোরআনে রয়েছে।

সর্বশেষ আসমানি কিতাব: কোরআন নাজিলের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা দ্বীনকে মানব জাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ রূপদান করেছেন। বন্ধ করে দিয়েছেন নবুওয়ত ও আসমানি কিতাবের দরজা সুতরাং এটা সর্বশেষ খোদায়ী বিধান গ্রন্থ।

ইসলামি আইনের উৎস: ইসলামি আইন হচ্ছে, বিশ্বমানবতার জন্য সর্বাপেক্ষা নিরপেক্ষ ও ইনসাফপূর্ণ আইন। আর এর উৎস হচ্ছে- কোরআনে কারিম।

কোরআনের ভাষাগত মাহাত্ম্য
কাব্যিক অনুরণন: কোরআনের ভাষার কাব্যিক অনুরণন সবচেয়ে আকর্ষণীয়। অতি শক্তিশালী ভাবসম্পন্ন এবং গুরুগম্ভীর বিষয় ও ছন্দের ঝঙ্কারে এর ভাষা হৃদয়গ্রাহী হয়ে ওঠে। পৃথিবীর আর কোনো গ্রন্থে কাব্যিক সৌন্দর্য ও শক্তিশালী মতবাদের এমন সহাবস্থান লক্ষ্য করা যায় না।

আবেদনময় ভাষা: কোরআনের ভাষা সহজেই মনকে প্রভাবিত করে। এর ভাষার যে শক্তিশালী মিল, বন্ধনগত আবেদন রয়েছে তা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। তবে যে ব্যাপারটি লক্ষণীয়, তা হলো- ভাষার বন্ধন শক্তিশালী করতে গিয়ে কখনও ব্যাকরণের নিয়ম লঙ্ঘিত হয়নি। মরিস বুকাইলি তাই বলেছেন, ‘কোরআন ভাষাবিদদের জন্য শব্দকোষ আর ব্যাকরণবিদদের জন্য ব্যাকরণ গ্রন্থ।’

উৎকৃষ্ট সাহিত্যমানসম্পন্ন ভাষা: আরবের তৎকালীন সমস্ত কবিভাষ্যবিদরা মিলেও কোরআনের একটি আয়াতের সমতুল্য আয়াত রচনায় সক্ষম হননি। এর আঙ্গিক সৌন্দর্য ও অভ্যন্তরীণ সুষমায় বিশ্বের অসংখ্য খ্যাতনামা সাহিত্যিক হতবাক হয়েছেন। ছন্দবদ্ধ পদ্য ও গদ্যের অপূর্ব সমাহারে ভরপুর এই গ্রন্থ সর্বকালের অপ্রতিদ্বন্দ্বী সাহিত্য।

মানবজীবনের পথপ্রদর্শক হিসেবে কোরআন
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘এই কিতাবে সব মানুষের জন্য ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় স্থায়ী কার্যকারিতা ও হক না হকের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। আর পথনির্দেশ ও নসিহত রয়েছে মুত্তাকিদের জন্য।’

নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
ব্যক্তিগত জীবনে কোরআন: মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের যাবতীয় দিক যথা তার আচরণ, তার জীবনযাত্রা, তার সামগ্রিক জীবনযাপনের প্রণালী কোরআনে কারিমে রয়েছে।

পারিবারিক জীবনে কোরআন: পরিবারের গঠন, পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব-কর্তব্য ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধে কোরআনে কারিমে আলোচনা রয়েছে।

সমষ্টিগত জীবনে কোরআন: বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের গঠনরীতি, এগুলোর সদস্য হিসেবে মানুষের আচরণ কেমন হবে সে ব্যাপারে কোরআনে কারিমে নির্দেশিকা রয়েছে।

সাংস্কৃতিক জীবনে কোরআন: মুসলিম সংস্কৃতির কাঠামো, সংস্কৃতির উপাদান, সাংস্কৃতিক পবিত্রতা ইত্যাদির বিষয়েও কোরআনে নির্দেশ আছে।

ধর্মীয় জীবনে কোরআন: ধর্মের মূলনীতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ধর্মের গঠন ইত্যাদি কোরআনে কারিমে আলোচিত হয়েছে বিশদভাবে।

রাজনৈতিক জীবনে কোরআন: রাষ্ট্রীয় জীবন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবেশের প্রকৃতি কেমন হবে সে ব্যাপারেও কোরআনে কারিমে নির্দেশ আছে। তেমনি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলদের দায়িত্ব স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে।

অর্থনৈতিক জীবনে কোরআন: ইসলামি অর্থব্যবস্থার গঠন-প্রকৃতি, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের গঠনসহ সব অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের প্রকৃতি সম্পর্কে কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক জীবনে কোরআন: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসলামি রাষ্ট্রের ভূমিকা, আন্তর্জাতিক নীতি কেমন হবে সে ব্যাপারেও কোরআনে নির্দেশিকা রয়েছে।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায়, কোরআন মাজিদ এমন এক পরিপূর্ণ বিধান গ্রন্থ যা মানবজীবনের সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছে এবং মানুষের জীবন প্রণালী সম্পর্কে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেয়। এ কারণে ইসলামকে আল্লাহ দীন হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এটি তথাকথিত ধর্মের মতো কোনো ধর্ম নয়।

   

মালয়েশিয়া থেকে সাইকেলে হজযাত্রা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র হজ পালনে সাইকেলে করে মক্কার উদ্দেশে বের হয়েছেন মালয়েয়িশার চার মুসলিম। ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র হজ পালনে সাইকেলে করে মক্কার উদ্দেশে বের হয়েছেন মালয়েয়িশার চার মুসলিম। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন পবিত্র হজ পালন করতে সাইকেলে করে সৌদি আরবের মক্কায় উদ্দেশে বের হয়েছেন মালয়েয়িশার চার মুসলিম। স্থলপথে তাদের সময় লাগবে প্রায় সাত মাস। আগামী বছরের মে মাসে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তারা সৌদি আরবের মক্কায় পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময় তারা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, আমিরাতসহ ছয় দেশ পাড়ি দেবেন।

মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দি সান সূত্রে জানা যায়, সাইকেলে হজযাত্রা শুরু করা এ দলে রয়েছেন দেশটির সংবাদ সংস্থার সাবেক সাংবাদিক চে সাদ নরদিন (৭৩)। অন্যরা হলেন- আহমেদ মোহাম্মদ ইসা (৩৫), নোরাদিলাহ মোহাম্মদ সাপি (৩৬) ও বন গবেষণা কর্মী আবদুল হালিম তালহা (৫৬)।

তারা তাদের সাইক্লিং মিশনের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফেসবুক পেজ কেমবারা মেমবুরু হিকমাহ (কেএমএইচ) জানাচ্ছেন।

সাদ নরদিন বলেন, মূলত ২০১৯ সাল থেকে সাইকেলে করে আমাদের পবিত্র হজ পালন করার পরিকল্পনা ছিল। তবে পরবর্তীতে কোভিড-১৯ সংকটের কারণে কয়েকবার এ পরিকল্পনা বিলম্ব করতে হয়।

সাইকেল ভ্রমণের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মসহ সবাইকে আমি একটি বার্তা দিতে চাই। তা হলো- একজন মালয়েশিয়ান হিসেবে আমি আমার এ বয়সেও বিভিন্ন দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। আমি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে ভ্রমণ করার মতো সুস্বাস্থ্য দিয়েছেন। মক্কা যাওয়ার পুরো ভ্রমণ আমি উপভোগ করতে চাই।

তিনি আরো জানান, গত আগস্ট থেকে অন্য তিন বন্ধুসহ তারা দীর্ঘ ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ জন্য তারা বীমা ও ভিসা নেওয়ার পাশাপাশি সাইকেল চালানোর অনুশীলন এবং শারীরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তা ছাড়া ভ্রমণকালে তাদের সবাইকে সাইকেলে করে প্রাথমিক চিকিৎসার কিট, ক্যাম্পিং সরঞ্জাম, সোয়েটার, ক্যামেরা ও সাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশসহ আনুমানিক ৬০ কেজি বহন করতে হয়েছে।

সাইকেলে হজযাত্রার একমাত্র নারী সদস্য নোরাদিলা জানান, ২০১৬ সালে তার স্বামীর সঙ্গে তিনিও সাইকেল চালিয়ে ওমরাহ করতে মক্কায় গিয়েছিলেন। তবে আগের তুলনায় এবারের সাইকেল যাত্রা পুরোপুরি ভিন্ন।

কারণ এবার আমরা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ পালন করব। ভ্রমণকালে যেসব অতিক্রম করবে সেখানে আমরা একসঙ্গে হানিমুনেও যেতে পারি। তবে তা দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে হবে।

;

সৌদিতে বিভিন্ন দেশের ৫০ হাজারের বেশি লোকের ইসলাম গ্রহণ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌদি আরবে ২০২৩ সালের শুরু থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৫৬১ জন ইসলাম গ্রহণ করেন

সৌদি আরবে ২০২৩ সালের শুরু থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৫৬১ জন ইসলাম গ্রহণ করেন

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামের জন্মস্থান এবং মসজিদুল হারামাইন তথা পবিত্র দুই মসজিদের ভূমি হিসেবে সৌদি আরব সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বাদশাহ আবদুল আজিজের সময় থেকে এই ভূখণ্ডের নেতারা সর্বদা ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখিয়েছেন। কয়েক দশক ধরে সৌদি আরব বিভিন্নভাবে বিশ্বের মুসলমানদের সেবা ও সহযোগিতা করে আসছে। সৌদি আরব সর্বদা মুসলমানদের স্বার্থ এগিয়ে নেওয়ার কাজে সক্রিয়। এ জন্য দেশটি বহু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির একটি হলো- সৌদি আরবে কাজের জন্য আসা অমুসলিমদের উদারহস্তে সেবা, সহায়তা ও দানের উদ্যোগ। এর ফলে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে।

সম্প্রতি সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, সৌদি আরবে গত এক বছরে বিভিন্ন দেশের ৫০ হাজারের বেশি লোক স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। গত ১১ মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে তারা ইসলাম গ্রহণ করেন।

জানা যায়, ২০২৩ সালের শুরু থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৫৬১ জন ইসলাম গ্রহণ করেন।

এর মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ৪১ হাজার ৬০৯ জন এবং নারী রয়েছেন ১৪ হাজার ৯৫২ জন। তারা এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের অধিবাসী।

সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শাখার তত্ত্বাবধানে অমুসলিমদের কাছে ইসলামের শিক্ষা উপস্থাপন করা হয়। সংশ্লিষ্ট শাখার বিশেষজ্ঞ আলেমরা বিভিন্ন ভাষায় ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

সাধারণত বক্তৃতা, পাঠদান, সেমিনার, কর্মশালাসহ সফরের আয়োজন করা হয়। কোম্পানি, হাসপাতাল, অভিবাসী শ্রমিকদের জমায়েতের স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে এসব আয়োজন করা হয়। সেখানে তারা ইসলাম সম্পর্কে বিশদভাবে জানার সুযোগ পান। এর পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

 

;

শেষ হলো ছারছীনা দরবারের তিন দিনব্যাপী মাহফিল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছারছীনা দরবার শরিফের পীর হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ আখেরি মোনাজাত করছেন, ছবি : সংগৃহীত

ছারছীনা দরবার শরিফের পীর হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ আখেরি মোনাজাত করছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ছারছীনা থেকে মো. আবদুর রহমান : ঈমান ও আকিদা সহিহ-শুদ্ধ করে নিয়মিত তরিকা মশক করে আমলি জিন্দেগি গঠনের মাধ্যমেই দয়াময় আল্লাহর রেজামন্দি (সন্তুষ্টি) হাসিল করা সম্ভব।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বাদ জুমা তিন দিনব্যাপী ছারছীনা দরবারের বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব মাহফিলের আখেরি মোনাজাতের আগে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মানুষের উদ্দেশ্যে আমিরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা দরবার শরিফের পীর সাহেব হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি সমবেত জনতাকে গোনাহমুক্তির জন্য জন্য তওবা করিয়ে জিকিরের তালিম দেন। ব্যস্ততার মধ্যেও সকাল-সন্ধ্যা জিকির ও অজিফা পালনের মাধ্যমে তরিকা মশকের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, তরিকা চর্চার মাধ্যমে একজন মানুষ আদববান মানুষে পরিণত হতে পারে। তরিকা কখনোই বেয়াদবি শিক্ষা দেয় না।

আখেরি মোনাজাতের আগে বিশেষ হেদায়েতি বয়ানে হজরত পীর সাহেব কেবলা সবাইকে বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সংগঠনভুক্ত হয়ে তালিমি জলসা কায়েম, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা এবং নিজ নিজ সন্তানদের যেসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। এছাড়া তিনি আগামী মাহফিলে সবাইকে আসার জন্য দাওয়াত দেন।

আখেরি মোনাজাতে হজরত পীর সাহেব কেবলা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। দোয়ার সময়ে লাখো জনতার ক্রন্দনে এক হৃদয়বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। মোনাজাতে পীর সাহেব কেবলা বিশ্ব শান্তির জন্য বিশেষ করে ফিলিস্তিনের বিপন্ন মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য দোয়া করেন। দোয়ার সময় উপস্থিত জনতার আমিন আমিন ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে।

ছারছীনা দরবারের তিন দিনব্যাপী মাহফিলের আখেরি মোনাজাতের দৃশ্য

 

ছারছীনা দরবারের বার্ষিক মাহফিলে জাতীয় ও দক্ষিণবঙ্গের রাজনীতিবিদদের অনেকেই অংশ নেন। এ সময় তারা সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে উপস্থিত জনতার কাছে দোয়া কামনা করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে বহু দরবার রয়েছে। তবে ছারছীনা দরবার ব্যতিক্রম। ছারছীনা কোনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। দেশ ও জাতির কল্যাণে ছারছীনা দরবারের ভূমিকা সর্বদা ইতিবাচক। বিভিন্ন সময়ে শাসকবর্গকে বুঝিয়ে দেশ ও ইসলামের কল্যাণে এই দরবার যে অবদান রেখেছে তা অন্যকোনো দরবার রাখতে পারেনি।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন- মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসেন, সংসদ সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী, এস. এম. শাহজাদা, অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবদুর রশিদ, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বির আহমদ মোমতাজি, নেছারাবাদ উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হক, স্বরূপকাঠী পৌর মেয়র গোলাম ফারুকসহ বিভাগীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।

;

বদ আকিদায় দেশ ছেয়ে গেছে : ছারছীনার পীর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছারছীনা দরবারের ১৩৩তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিল, ছবি : সংগৃহীত

ছারছীনা দরবারের ১৩৩তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মো. আবদুর রহমান ছারছীনা থেকে : বর্তমানে বদ আকিদায় দেশ ছেয়ে গেছে। আলেমরা কোনটি সঠিক ও কোনটি বদ আকিদা- সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আলেম-উলামারাও তা পার্থক্য করতে পারছেন না। বাতিল ফেরকাকেই অনেকে সঠিক আকিদা হিসেবে গণ্য করে আমল করে থাকেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ছারছীনা দরবার শরিফের ১৩৩তম বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ মাগরিব তালিমের পর আলোচনায় আমিরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরিফের পীর সাহেব হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ এসব কথা বলেন।

উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে পীর সাহেব ছারছীনা বলেন, ছারছীনা শরিফের মরহুম দাদা হুজুর কেবলা আল্লামা শাহ্সূফী হজরত মাওলানা নেছার উদ্দীন আহমদ (রহ.) যাবতীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। মুসলামনদেরকে কালেমা, নামাজ, রোজা ইত্যাদি শিক্ষা দেন।

এ সময় তিনি জমইয়াতে হিযবুল্লাহর কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে তালিমি জলসা কায়েমের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, মাহফিল কায়েমের ক্ষেত্রে ফেসবুকে ভাইরাল দেখে নয় বরং সঠিক আকিদা ও আমলের অনুসারী আলেমদের দ্বারা মাহফিল করার পরামর্শ দেন।

পীর সাহেব ছারছীনা আগামীকাল বাদ জুমা আখেরি মোনাজাতে শরিক হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বানও জানান।

ছারছীনার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমির ও হজরত পীর সাহেব কেবলার বড় সাহেবজাদা হজরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছার উদ্দিন আহমদ হুসাইন।

বাদ মাগরিব আলোচনায় তিনি বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ, দীনিয়া মাদ্রাসা, তালিমি জলসা ও এলাকায় ছারছীনা সিলসিলার প্রচার-প্রসারকল্পে ওয়াজ মাহফিল কায়েমের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ছারছীনা দরবার দলীয় রাজনীতি করে না। নির্দিষ্ট কোনো দলের সঙ্গে এই দরবারের কোনো সখ্যতা বা বৈরিতা নেই। আমরা সরকারের ভালো কাজ যেমন সমর্থন করি, তেমনি ভালো কাজে সহযোগিতা করি। আমরা মুসলিম জনসাধারণকে পরহেজগার মুসলমানে রূপান্তরিত করতে চাই।

এছাড়া দ্বিতীয় দিন আলোচনা করেন- মাওলানা মো. রূহুল আমিন ছালেহী, মাওলানা আ জ ম ওবায়দুল্লাহ্, মাওলানা আবদুল গফফার কাসেমী, ড. মাওলানা সৈয়দ মুহা. শরাফত আলী, মাওলানা কাজী মফিজ উদ্দিন, মাওলানা মো. রূহুল আমীন আফসারী ও মাওলানা হাফেজ মো. বোরহান উদ্দীন ছালেহী প্রমূখ।

;