যে কারণে রমজান বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ

  • ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রমজান বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ মাস, ছবি: সংগৃহীত

রমজান বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ মাস, ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার সৃষ্টির মধ্যে দিন, রাত, মাস, বছর ইত্যাদি প্রতিটি বিষয়ই অনুপম, সুন্দর ও অনন্য। একমাত্র মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা ছাড়া আর কারো পক্ষে এসব সৃষ্টি করা কখনোই সম্ভব নয় এবং সম্ভব হতেও পারে না। এসব সৃষ্টিসমূহ এবং কায়েনাতের যাবতীয় সৃষ্টি সম্ভার আল্লাহর কুদরতের কারিশমা।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার সৃষ্টির মধ্যে কোনো কোনো বিষয় বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা লাভ করে। তেমনিভাবে প্রতিটি মুসলমানের জানা আছে যে, রমজান কয়েকটি বিশেষ কারণে শ্রেষ্ঠ মাসের অন্যতম। যেসব বৈশিষ্ট্যের কারণে রমজান বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ, তা সকলের সামনেই স্পষ্ট এবং এসব বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র রমজানের ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। যেমন-

বিজ্ঞাপন

১. রমজানে ইসলামের অন্যতম রোকন বা স্তম্ভ সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে।

২. কোরআন নাজিলের কারণে কোরআনের মাস হিসাবে রমজান সম্মানিত।

বিজ্ঞাপন

৩. এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সহিহ মুসলিম শরিফের একটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন রমজান মাস আসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।’

৪. রমজানে রয়েছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ‘লাইলাতুল কদর’। রমজানে এমন একটি রাত আছে, যাকে কোরআনে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ রাতের প্রশংসায় আল্লাহ তায়ালা একটি স্বতন্ত্র সূরা পবিত্র কোরআনে নাজিল করেছেন। সেই সূরা কদরে বলা হয়েছে, ‘কদরের রাত হাজার মাস (তথা চুরাশি বছর চার মাস) থেকেও উত্তম।’

৫. রমজানে রোজাদারের দোয়া কবুল হয়। রমজানে রোজাদারের দোয়া কবুল করা হয়। দিনে-রাতে যে কোনো সময় রোজাদারের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। বিশেষত ইফতার সামনে রেখে দোয়া কবুলের বিষয়ে বহু বর্ণনা রয়েছে। রমজানে আল্লাহতায়ালা অধিক হারে বান্দাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। মুসনাদে আহমাদের একটি হাদিসে দোয়া কবুল ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি বিষয়ে বলা হয়েছে।

৬. রমজান গোনাহ মাফের মাস। এ মাসে আল্লাহ বান্দার গোনাহ মাফ করেন। রমজানে অধিক তওবা ও আমলের মাধ্যমে গোনাহ মাফ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। রমজান পেয়েও গোনাহ মাফ করাতে না পারা ব্যক্তিকে ‘হতভাগ্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৭. এ মাস জাহান্নাম থেকে মুক্তি আদায়ের মাস। রমজানের সঙ্গে নাজাত, মাগেফেরাত সম্পর্কিত। আমল ও রহমত আর বরকতের সঙ্গে সঙ্গে মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার সুযোগ রমজান মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অন্যতম।

৮. রমজানে আমলের সওয়াব বা প্রতিদান বহু গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। নফল ইবাদতের সওয়াব অন্য মাসের ফরজের সমতুল্য করে দেওয়া হয়। এমনকি, রমজানের উমরার সওয়াব হজের সমতুল্য করে দেওয়া হয়। আবু দাউদ শরিফের ১৯৯১ নম্বর হাদিস এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘রমজান মাসে উমরা পালন করা আমার সঙ্গে হজ করার সমতুল্য।’

অতএব, বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ পবিত্র মাহে রমজানের সব ধরনের কল্যাণ হাসিলের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোই প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর একান্ত কর্তব্য হওয়া উচিত।