ক্রীড়ায় হিজাবি নারীরা ভাঙছেন শত বছরের বাধা



নুসরাত জাবীন বিভা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
অলিম্পিকে মিসরীয় পদকজয়ী নারী খেলোয়াড় হেদায়া মালাক, ছবি: সংগৃহীত

অলিম্পিকে মিসরীয় পদকজয়ী নারী খেলোয়াড় হেদায়া মালাক, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৬ সালের রিও অলিম্পিক গেমস, বীচ ভলিবলে জার্মানীর বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচের পরের দিন। একদিনেই সবার নজর কেড়েছেন মিসরের দোয়া এলঘোবাশি।

উদ্বোধনী ম্যাচে খেলার সময় নেটে মুখোমুখি দু’জনের ছবি। নেটের একপাশে হিজাব, ফুলহাতা শার্ট এবং লেগিংস পরা এলঘোবাশি, আরেক পাশে বিকিনি পরা জার্মানী প্রতিদ্বন্দ্বী কিরা ওয়াল্কেনহর্স্ট। সেবারের অলিম্পিক আসরে ভাইরাল হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছবিগুলোর মধ্যে একটি।

অলিম্পিক গেমস থেকে প্রত্যাশিত সাংস্কৃতিক মিলনের একটি প্রতিচ্ছবি এটি। কিন্তু এই ছবিতে মানুষ যে ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল আন্তর্জাতিক আসরে এমন বৈচিত্রের বিষয়টি এখনও বেশ নতুন।

এলঘোবাশি দ্য ন্যাশনালকে বলেন, ‘শুধু আমার ছবি দেখে অনেকে আমার সাথে কথা বলতে আসে। হঠাৎ করেই আমি যেন বিখ্যাত হয়ে যাই। আমার ধারণাও ছিলো না কেন। তারপর বুঝলাম বীচ ভলিবলে হিজাব পরে খেলা এই খ্যাতির কারণ।’

দ্বিতীয় ম্যাচের দিন কোপাকাবানা বীচে দর্শক উপচে পড়ে। ১০ হাজার দর্শকের সামনে এলঘোবাশি ও নাদা মেয়াওয়াদরা ইতালির বিরুদ্ধে খেলে। সেদিনের স্মৃতি মনে করে এলঘোবাশি বলেন, ‘মানুষ শুধু দোয়া এলঘোবাশিকে দেখতে আসে যে হিজাব পরে খেলাকে এই মেয়ে যার ছবি পুরো ইন্টারনেটজুড়ে। আমরা ওই ম্যাচ হেরে যাই কিন্তু ম্যাচ শেষে দর্শকরা আমাদের দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমরা যতটুকু অর্জন করতে পেরেছি তাতেই সবাই ভীষণ খুশি ছিল।’

সেবার এলঘোবাশি এবং মেয়াওয়াদ প্রথম মিসরীয় জুটি হিসেবে অলিম্পিকে অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়েছে ঠিকই কিন্তু এলঘোবাশির পোশাক তাকে স্পটলাইটে নিয়ে এসেছে। দশ বছর যাবত সে হিজাব পরেই খেলছে। তবে রিওতে অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণের জন্য তাকে তার পোশাকের জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছিল।

২৩ বছর বয়সী এলঘোবাশি বলেন, ‘পুরো বিষয়টি আমার কাছে নতুন ছিলো, প্রথম হিজাবি খেলোয়াড় হিসেবে বীচ ভলিবল খেলা এবং প্রথম মিসরীয় ও আরব নারী হিসেবে অলিম্পিক গেমসে অংশ নেওয়া। এরপর থেকে কোনো সমস্যা ছাড়াই আমি হিজাব পরে যেকোনো আন্তর্জাতিক আসরে খেলতে পারছি।’

মিসরের দোয়া এলঘোবাশি, ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশন (এফআইভিবি) শরীরের কতখানি ঢাকা হবে তার ভিত্তিতে তিন ধরনের পোশাকের অনুমতি দিয়েছে।

সে বছর অলিম্পিকে মিসরীয় দু’জন পদকজয়ী নারী খেলোয়াড় হেদায়া মালাক এবং সারা আহমেদ হিজাব পরেই তায়কোন্দো এবং ভার উত্তোলনে অংশ নেন।

ব্রোঞ্জজয়ী মালাক দ্য ইন্টারন্যাশনালকে বলেন, ‘অলিম্পিক শেষে অনেকে আমাকে মেসেজ পাঠিয়ে বলেছে, আমি তাদের আদর্শ। কারণ আমি হিজাব পরছি এবং নিজের খেলাও চালিয়ে যাচ্ছি। তায়কোন্দোর কারণে আমি হিজাব ছাড়িনি। অনেকে আমাকে দেখে উৎসাহিত হয়েছে।’

হিজাবি খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিকভাবে এমন অভূতপূর্বভাবে দেখার মূল কারণ হলো অনেক খেলাই তাদের বহু বছর ধরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছে।

২০১৪ সালে ফিফা নারী খেলোয়াড়দের হিজাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ২০১৭ সালে বাস্কেটবলের আন্তর্জাতিক পরিচালনা কমিটি ফিবাও তাদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তবে এর জন্য আমেরিকান মুসলিম বাস্কেটবল খেলোয়াড় বিলকিস আব্দুল কাদিরের ধন্যবাদ পাওনা আছে। তাকে খেলা অথবা ধর্মীয় বিশ্বাস এর মধ্যে একটি বেছে নিতে বাধ্য করা হয়। বিলকিস হিজাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়েছেন।

এলঘোবাশি তার বাস্কেটবল খেলোয়াড় বন্ধুদের কথা মনে করেন। তাদের মধ্যে কতজন শুধু হিজাব পরার কারণে জাতীয় দলে জায়গা পায়নি।

এলঘোবাশি বলেন, ‘যদি আপনি সত্যিই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক খেলা চান তাহলে আপনার সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। শুধু হিজাব পরার জন্য কেন কারও স্বপ্নকে মেরে ফেলবেন? আমরা একেকজন একেক রকমের সংস্কৃতি থেকে এসেছি। আমাদের সবার গৃহীত হওয়ার অধিকার রয়েছে।’

আন্তর্জাতিক আসরে প্রথম হিজাবি স্কেটার আমিরাতের জাহারা লারি। ২০১২ সালে রক্ষণশীল পোশাকের জন্য পয়েন্ট কাটা যাওয়ায় তিনি আন্তর্জাতিক স্কেটিং ইউনিয়নের (আইসিইউ) সাথে যোগাযোগ করেন। আইসিইউ স্পষ্টভাবে হিজাব সমর্থন না করায় এখনও তাকে বিশেষ বিবেচনায় হিজাব পরে খেলতে হয়।

আমিরাতের জাহারা লারি, ছবি: সংগৃহীত

মিসরীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান গলফ খেলোয়াড় নুর আহমেদ হিজাবি খেলোয়াড় হিসেবে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন, ‘আমি যখনই গলফ মাঠে পা দেই আমার মনে হয় একজন মুসলিম নারী যে খেলতে পারে এবং হিজাব পরে এবং যথেষ্ট ভালোভাবে সেটি আমাকে আবার প্রমাণ করতে হবে।’

‘যতবার আপনি হিজাব পরে খেলতে নামবেন ততবার প্রথাগত ধারণা ভাঙতে পারবেন।’

টেনিসে হিজাবের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলা না থাকলেও আগের নিয়ম অনুযায়ী লেগিংসের ব্যাপারে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল। কেউ লেগিংস পরতে চাইলে তাকে সেটা স্কার্ট বা জামার নিচে পরতে হবে এবং এর ঝুল হাঁটুর সামান্য নীচ পর্যন্ত হতে পারবে। কিন্তু ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী একজন হিজাবি নারীর পুরো পা ঢাকতে হবে।

গতবছর এই নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়। এখন কেউ চাইলে উপরে স্কার্ট বা অন্যকোনো পোশাক ছাড়াই পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকে এমন লেগিংস পরতে পারবে। এর আগে টেনিস কর্তৃপক্ষদের এই বিষয়টি কখনোই ভাবায়নি যে তাদের এমন নিয়মের কারণে নারীদের পুরো একটি অংশ বাদ পড়ে যাচ্ছে যারা সারা শরীর ঢেকে টেনিসে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে চায়।

অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও ম্যাচ শুরুর আগে লেগিংস খুলে ফেলতে বলায় ওমানের টেনিস খেলোয়াড় ফাতেমা আল নাভানি ইন্টারন্যাশনাল টেনিস ফেডারেশনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানান। তিউনিশিয়ায় একবার একজন ফ্রেঞ্চ আম্পায়ার তাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কি ঠান্ডার কারণে লেগিংস পরেছেন নাকি ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে। যদি ধর্মীয় কারণে হয় তাহলে তাকে এটি খুলে ফেলতে হবে।

আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে নিজেদের জায়গা করে নিতে মুসলিম নারীদের দীর্ঘ পথ পারি দিতে হয়েছে। এলঘোবাশি, আব্দুল কাদির, জাহারা লারি ছাড়াও আরো অনেক খেলোয়াড় আছেন যারা বাধা পেরোতে, দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে এবং অন্যদের পথ মসৃণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তারা সবার জন্য অংশগ্রহণমূলক এবং স্বাগত পরিবেশ তৈরিতে তাদের ভূমিকাটা পালন করছে। তাদের এই অপেক্ষায় বসে থাকা উচিত নয় যে, কবে একজন মুসলিম খেলোয়াড় ওপরে উঠবে এবং নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস বজায় রেখে স্বপ্নপূরণের জন্য চলমান নিয়মের ব্যতিক্রম দাবি করবে।

কে জানে, হয়তো এমন দিন আসবে যখন একজন হিজাবি খেলোয়াড় তার ধর্মীয় বিশ্বাস বা সে তার মাথা খোলা রেখেছে না ঢাকা সেটি দেখার আগে তার অর্জনের জন্য স্বীকৃত হবে।

   

৪০ বছর ধরে মদিনায় বিনামূল্যে চা-কফি খাওয়ানো বৃদ্ধের মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চা-কফি নিয়ে বসে আছেন শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা, ছবি : সংগৃহীত

চা-কফি নিয়ে বসে আছেন শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মদিনা জিয়ারতকারীদের অনেকের কাছে পরিচিত নাম শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা। গত ৪০ বছর ধরে তিনি পবিত্র হজ-উমরা পালনকারীদের মাঝে বিনামূল্যে চা, কফি, রুটি ও খেজুর বিতরণ করেছেন। অনেক বাংলাদেশি হাজি তার হাতে চা-কফি পান করেছেন।

সদাহাস্য সিরিয়ান এই নাগরিক মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৯৬ বছর বয়সে মদিনায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হারামাইনের খবর সরবরাহকারী ভেরিফায়েড পেইজ ‘ইনসাইড দ্য হারামাইন’ এই খবর জানিয়ে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।

জানা যায়, প্রতিদিন ৪০টি ফ্লাস্কে করে চা-কফি আনতেন তিনি। এ জন্য একটি বিশেষ ট্রলি ব্যবহার করতেন, মসজিদে নববিতে যাওয়া অন্যতম পথ জায়েদিয়া এলাকায় বসতেন তিনি। সবুজ চা, লাল চাসহ নানা স্বাদের চা বানিয়ে আনতেন। থাকত চিনিযুক্ত, চিনিমুক্ত চা-কফি। এছাড়া এলাচযুক্ত চা, পুদিনা চা, বিভিন্নরকমের মশলাযুক্ত চা আনতেন।

তিনি রাস্তার পাশে বসে পথচারীদের মধ্যে চা, কফি, খেজুর, রুটি ও বিস্কুট বিনামূল্যে বিতরণ করতেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন ছেলেরা। কেউ কিছু দিতে চাইলে বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখান করতেন।

গত বছর সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা আল আরাবিয়া তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সিরিয়ার নাগরিক শায়খ ইসমাইল প্রায় ৪০ বছর ধরে মদিনায় বসবাস করে আসছিলেন। মদিনার কুবা এভিনিউতে একটি সাধারণ বাড়িতে বসবাস করলেও নিজের সম্পদ পুরোটাই উৎসর্গ করেছিলেন হজ ও উমরা যাত্রীদের খেদমতে।

টানা চার দশক ধরে অনন্য এই সেবার কারণে সবার কাছে তিনি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হন। তার মৃত্যুতে মদিনায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাংলাদেশের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করে তার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।

;

দানের এক ডিম সোয়া দুই লাখ রুপিতে বিক্রি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নিলামে তোলা সেই ডিম ও ক্রেতা দানিশ হামিদ, ছবি : সংগৃহীত

নিলামে তোলা সেই ডিম ও ক্রেতা দানিশ হামিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণ একটা মুরগির ডিম নিলামে তুলে বিক্রি হয় ভারতীয় মুদ্রায় সোয়া দুই লাখ রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন লাখ টাকা। একটি ডিমের এমন দাম মেলায় অবাক অনেকেই। মাত্র ছয় রুপির একটি ডিমের এত দাম কী করে হলো? কেনই বা নিলামে চড়ানো হলো ডিমটি?

ঘটনা ভারত অধিকৃত কাশ্মীর উপত্যকার সোপোর জেলার মাল মাপানপুরা গ্রামের একটি মসজিদের।

খবরে প্রকাশ, মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, ঈদ উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা নগদ অর্থ আর বিভিন্ন সামগ্রী দান হিসেবে সংগ্রহ করবে। এ সময় কেউ নগদ অর্থ দিয়েছেন, কেউ থালা-বাসন, মুরগি বা চাল দান করেছেন।

মসজিদ কমিটির এক সদস্য নাসির আহমেদ জানান, ‘আমরা দান সংগ্রহ করছিলাম। তার মধ্যেই একটা ছোট বাড়ি থেকে এক নারী মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসেন। আমার কাছে এসে একটা ডিম দিয়ে বলেন, তার দানটা যেন আমি গ্রহণ করি।’ ওই নারী খুবই গরিব। একটা ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরে একমাত্র ছেলের সঙ্গে বাস করেন।

ছয় রুপি দামের সাধারণ ডিমটি গরিব ওই নারী যে আবেগ নিয়ে খোদার নামে দান করেছিলেন, সেটাই ডিমটাকে ‘অমূল্য’ করে তুলে। কমিটির সবার সঙ্গে আলোচনা করে ডিমটাকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ না করেই নাসির আহমেদ ডিমটাকে নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেন। তিনি নিজেই ১০ রুপি নিয়ে নিলামে প্রথম দর হাঁকেন।

প্রথমেই ডিমটার দাম উঠেছিল ১০ হাজার ভারতীয় টাকা। তারপরে দর বাড়ানো হয়। একটা সময় দাম বাড়তে থাকে, তিন দিন পর্যন্ত নিলাম করা হয় ডিমটি। প্রথম দুই দিনে ১০, ২০, ৩০ আর ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা পর্যন্ত দর উঠে। প্রতিবারই ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হতো। এরপর শেষ দিনে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিলাম চলবে, এরকম একটা ঘোষণা করা হয়। শেষ দিনের নিলামে উপস্থিত ছিলেন সোপোরের ব্যবসায়ী দানিশ হামিদ।

নিলামে দুবার হাঁক দেওয়া হয় ৫৪ হাজার ভারতীয় রুপির। একেবারে শেষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা হামিদ দর হাঁকেন- ‘৭০ হাজার।’ পরে দাম বাড়তে থাকে এক পর্যায়ে দাম উঠে সোয়া দুই লাখে। সব মিলিয়ে বিক্রি হয় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩৫০ ভারতীয় রুপি। 

দানিশ হামিদ জানান, তিনি ডিমটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার জন্য ভালো একটা ফ্রেম বানাবেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে শঙ্কা হাবের



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাবের মতবিনিময় সভা, ছবি : সংগৃহীত

হাবের মতবিনিময় সভা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে আগামী মাসের ৯ মে থেকে হজফ্লাইট শুরুর কথা রয়েছে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজযাত্রী। অথচ এখনও সৌদি আরবে হাজিদের বাড়ি ভাড়া করা সম্ভব হয়নি।

এমনকি হজযাত্রীদের মীনায় অবস্থানের জায়গা (তাঁবু) এবং সার্ভিস প্রোভাইডার (সৌদি আরবের মোয়াল্লিম) এখনও নির্ধারণ হয়নি। প্রকাশ করা হয়নি চূড়ান্ত ফ্লাইট সিডিউল। এসব কারণে হজ এজেন্সি কর্তৃপক্ষ সৌদি আরবে হাজিদের বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতির জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনাকে দুষছেন হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব)।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে ‘হজ ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এসব কথা বলেন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউটে আয়োজিত আলোচনা সভায় সারাদেশের হজ এজেন্সির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সভায় হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, অব্যবস্থাপনার কারণে আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছি। কোনো হাজি যেন হজে গিয়ে কষ্ট না পান, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। হাব সভাপতি বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ে কোনো কর্মকর্তা স্থায়ী না, তারা দুই-তিন বছর পরপর বদলি হন, হজের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে তাদের স্বচ্ছ কোনো ধারণা নেই। তাদের কারণে হজ ব্যবস্থাপনা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হোক তা আমরা চাই না।’

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা হজ ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এজেন্সি মালিকদের সঙ্গে পরামর্শ করেন না বলেও অভিযোগ হাবের। এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘হজ ব্যবস্থাপনা আবার চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। আমরা আগেই ধর্ম মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলাম, হজ ব্যবস্থাপনা এ বছর চ্যালেঞ্জিং হবে। এজেন্সি কোটা সর্বনিম্ন ১০০ জন রাখতে আমরা অনুরোধ করেছিলাম। ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রীর সংখ্যা কমাতে অনাগ্রহী হয়। সর্বোচ্চ এজেন্সি কোটা ৩০০ থাকা স্বত্বেও কি কারণে ৫০০ জন করা হলো তা বোধগম্য নয়। ধর্মমন্ত্রী এজেন্সি প্রতি ৪০০ জন কোটা রাখার নির্দেশনা দেওয়া স্বত্বেও ধর্ম সচিব ৫০০ জন কোটা নির্ধারণ করলেন। কেন করলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

হাব সভাপতি বলেন, ‘সৌদি সরকার ৫৬ এজেন্সির মাধ্যমে হজ কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তাব দিলেও আমরা তার বিরোধিতা করেছিলাম। কারণ এজেন্সিতে যাত্রীসংখ্যা বেশি হলে সব যাত্রীকে সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বৃদ্ধ হাজিদের জন্য সঠিকভাবে সেবা প্রাপ্তিতে বিঘ্ন ঘটে। কিন্তু এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবের ভূমিকা যথার্থ ছিল না।’

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কারণে এখনও সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়ার জন্য এজেন্সির প্রতিনিধিদের সৌদিতে যেতে হয়। প্রতি বছর প্রতিনিধিদের সৌদি যেতে মাল্টিপল ভিজিট ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে। পরিচালক হজ অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী এজেন্সিগুলো পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিজিট ভিসার জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় এখনও হজ এজেন্সির প্রতিনিধিদের ভিজিট ভিসার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ। তারা সৌদি আরবে না গেলে বাড়ি ভাড়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এজেন্সির প্রতিনিধি ছাড়া বাড়ি ভাড়া করা যাবে না এবং বাড়ি ভাড়া করা না গেলে হজ ভিসা করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ মিশন আছে। জেদ্দা কনসাল জেনারেল (হজ) আছেন, তারা চাইলেই সৌদি আরবে সরকারি নিবন্ধিত হাজিদের বাড়ি ভাড়া করতে পারেন। তারপরও ধর্ম সচিবের নেতৃত্বে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে লোকবল নিয়ে দীর্ঘদিন সৌদি আরবে অবস্থান সরকারিভাবে বাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি এজেন্সির বাড়ি ভাড়া জন্য সৌদি যেতে ভিসার ব্যবস্থা করতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হয়েছে। বাড়ি ভাড়ার জন্য এজেন্সি প্রতিনিধিরা সৌদি যেতে না পারলে বিশাল সংখ্যক হজযাত্রীর বাড়ি ভাড়া কীভাবে সম্ভব?’

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর দেশ থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের সৌদি নেওয়া হয় হজে সহায়তাকারী হিসেবে। এতে দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। এ প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত হয়েছিল এ বছর বাংলাদেশ থেকে কোনো সহায়তাকারী নেওয়া হবে না। সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু অজানা কারণে বাংলাদেশ থেকে হজ সহায়তাকারী নেওয়া হচ্ছে।’

হাব সভাপতি বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা কখনও বেসরকারি হজযাত্রীদের খোঁজ-খবরও নেন না। সরকারি চার-পাঁচ হাজার হাজির জন্য এই বিশাল সংখ্যক জনবল দেশ থেকে নেওয়া দেশের অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। সব চেয়ে বেশি হাজি যায় হজ এজেন্সির মাধ্যমে, তাদের জন্য সহায়তাকারী বেশি প্রয়োজন। তাই সহায়তাকারী হিসেবে হজ এজেন্সিকে ভিসা সুবিধা নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে হজ ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জের মুখে। ধর্ম মন্ত্রণালয়কে হাব এ বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিল। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। হজযাত্রীদের কল্যাণে সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করতে হবে।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন- হাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী, সহ-সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার, মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার, জনসংযোগ সচিব মুফতি মুহাম্মদ জুনায়েদ গুলজার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে গাইড ও মোনাজ্জেমসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।

;

যেভাবে ধরে রাখবেন রমজানের ভালো অভ্যাসগুলো



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করা, ছবি : সংগৃহীত

রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ ৩ সপ্তাহের প্রচেষ্টায় নিজেদের ভালো অভ্যাস গঠনে তৈরি করতে পারে। কোনো মানুষ যদি নিয়মিত ভালো কাজ করে তবে সে নিয়মিত কাজের একটি অভ্যাস তার মধ্যে তৈরি হয়। যেমন- নিয়মিত নামাজ পড়লে নামাজের অভ্যাস তৈরি হয়, রোজা রাখলে রোজাপালনের অভ্যাস তৈরি হয়; আবার মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে ধৈর্যধারণ করলে তাও তৈরি হয়। আর মুমিন-মুসলমানের এসব অভ্যাস তৈরিতে রমজান কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

রমজানে যে ব্যক্তি নিয়মিত রোজা রাখে, নামাজ আদায় করে, ধৈর্যধারণ করে- আল্লাহর ইচ্ছায় ওই ব্যক্তির মাঝে ভালো অভ্যাসগুলো তৈরি হয়। আবার রমজানের পরে অনেকেই সেসব ভালো গুণ থেকে দূরে সরে যায়। কিন্তু উচিৎ ছিলো, গুণগুলো ধরে রাখা। রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো ধরে রাখার রয়েছে বেশ কিছু উপায়। সেগুলো হলো-

সপ্তাহে ২ দিন রোজাপালন
রমজানের পর প্রত্যেক সপ্তাহে ২ দিন রোজাপালনের চেষ্টা করা। তাতে খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা সহজ হয়। রোজা মানুষকে শুধু আধ্যাত্মিক উপকারই দেয় না বরং তাতে শারীরিক স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারও রয়েছে।

স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা যায়, রোজাপালন মানুষের শরীর ও মনের জন্য অনেক উপকারি। রোজায় মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। ঘুম, মনোযোগ ও শারীরিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। নার্ভের কার্যকারিতা বৃদ্ধি ও উন্নতি হয়।

আর সপ্তাহে ২ দিন রোজাপালন সুন্নতের অনুসরণও বটে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি সপ্তাহে ২ দিন (সোম ও বৃহস্পতিবার) রোজা রাখতেন। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সোমবার এবং বৃহস্পতিবার মানুষের কাজের হিসাব আল্লাহর কাছে পৌছানো হয়। আর আমি এটি ভালোবাসি যে, রোজা পালনরত অবস্থায় আমার কাজে হিসাব পৌছানো হোক।’ -জামে তিরমিজি

দান-সদকা অব্যাহত রাখা
দানের অভ্যাস অব্যাহত রাখা। কেননা দান-সহযোগিতা মানুষকে মানসিক প্রশান্তি দেয়। রমজানে যেভাবে বেশি সওয়াব লাভের আশায় মানুষ দান-সদকা করে, রমজান পরবর্তী সময়েও গরিবদের দান-সদকার অভ্যাস চালু রাখা।

দানের কার্যকারিতা শুধু আখেরাতে নয়, বরং দুনিয়াতেও লাভ হয়। কেননা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দান-সাদকা মানুষের বিপদ-আপদ দূর করে দেয়।’ দান-সদকার ফলে সমাজের গরিব ও অসহায় মানুষ সুন্দর জীবন-যাপন করতে পারে। তাতে পাস্পরিক সুসম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে সুন্দর সমাজ তৈরি হয়।

নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত
রমজানের পরে নির্ধারিত একটি সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ কোরআন মাজিদ তেলাওয়াতের অভ্যাস তৈরি রাখা। যেভাবে রমজান মাসে মানুষ নির্ধারিত সময়ে কোরআন তেলাওয়াত করে থাকে।

কোরআন তেলাওয়াত মানুষের মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তির জন্য সহায়ক। এটা উত্তম ইবাদতও বটে। কোরআন পরকালে শুধু তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশই করবে না বরং দুনিয়াতে অনেক অন্যায় ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে।

অর্থসহ কোরআন মাজিদ পড়া
রমজানের পর সামান্য সময়ের জন্য হলেও কোরআন অধ্যয়ন তথা অর্থসহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পড়া। রমজানের পরে কোরআন বুঝার নিয়মিত চেষ্টা অব্যাহত রাখলে, একটা সময় কোরআন বুঝা সহজ হয়ে যাবে। আর সে আলোকে গড়ে ওঠবে মানুষ জীবন।

কোরআনে কারিমের জ্ঞান বাস্তবায়ন
রমজান মাসে কোরআনের যেসব জ্ঞান অর্জন করেছে মানুষ। রমজানের পরেও তা যথাযথ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা। কোরআনে কারিমের সব ঘটনাগুলোই অর্থবহ এবং পরিপূর্ণ। কোরআনের সে ঘটনাগুলোর আলোকেই নিজেদের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সহজ হয়।

যখনই কোরআনের কোনো ঘটনা বা জ্ঞান অর্জন হয়, তখনই সে ঘটনা বা গুণ দিয়ে নিজেকে মূল্যয়ন করুন। যদি তা থেকে থাকে আলহামদুলিল্লাহ। আর সে গুণ না থাকলে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা।

দোয়া করা
কোরআনের অনেক ঘটনায় দোয়ার কথা এসেছে। কল্যাণ লাভে দোয়ার রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব। রমজান মাসে দোয়া যেভাবে মানুষের কার্যতালিকা থেকে বাদ যায়নি। রমজান পরবর্তী সময়েও তা অব্যাহত রাখা জরুরি। কেননা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’

আল্লাহতায়ালা প্রতিদিনই মানুষকে ডেকে ডেকে বলেন, তার কাছে দোয়া করার জন্য। নিজের গোনাহ মাফের আহ্বান করেন, রিজিক চাওয়ার আহ্বান করেন। সুতরাং যারা রমজানের পরেই আল্লাহর কাছে নিয়মিত দিনে-রাতে দোয়ার অভ্যাস গঠন করবে, তারাই সফলকাম হবে।

ভালো কাজে আগ্রহী হওয়া
প্রতিবেশি কিংবা বন্ধুর সঙ্গে ভালো অভ্যাস গঠনে পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করা। একে অপরের সঙ্গে ভালো আচরণ করা। কারো মাঝে অন্যায় বা খারাপ আচরণ থাকলে তা থেকে বেঁচে থাকতে ভালো কাজ বা গুণের পরামর্শ দেওয়া। একে অপরকে নিয়মিত ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করা।

ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ দিতে একটি গ্রুপ তৈরি করা যেতে পারে। যেখানে প্রতিদিনই নির্ধারিত একটা সময় ভালো কাজের আলোচনা হতে পারে। হতে পারে তা কোরআন শিক্ষা বা গবেষণার আসর।

প্রতিদিন নিজেকে মূল্যয়ন করা
প্রতিটি মানুষেরই উচিত নিয়মিত নিজের কাজের মূল্যয়ন করা। আর তাতে ভেসে উঠবে ভালো ও মন্দ কাজ প্রতিচ্ছবি। নিজেকে মূল্যয়নে কোরআনে সে আয়াতটি বেশি বেশি স্মরণ করা উচিত। তাহলো, ‘তোমার কিতাব (কাজের হিসাব) পাঠ কর। আজ তোমার হিসাব (কাজের মূল্যয়ন) গ্রহণে তুমিই যথেষ্ট।’ -সুরা বনি ইসরাইল : ১৪

প্রতিদিন নিজের কাজের মূল্যয়ন অব্যাহত রাখলে গোনাহমুক্ত জীবন লাভ সম্ভব হবে। পরকালে নিজেদের কাজের হিসাব প্রদানও হবে সহজ। আর তাতেই আলোকিত জীবন লাভ করবে মুমিন।

;