হজ পরবর্তী জীবনের শিক্ষা ও করণীয়



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম
মসজিদে হারামের বারান্দা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হাজীদের একাংশ, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে হারামের বারান্দা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হাজীদের একাংশ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ (২০ আগস্ট, সোমবার) পবিত্র হজপালন সম্পন্ন হয়েছে। সৌদি আরবের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে এবার ১৬৫টি দেশের ২৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৭৫ জন নাগরিক হজপালন করেছেন।

বিপুল পরিমাণ হাজীরা ইতোমধ্যে শুক্রবার (২৪ আগস্ট) থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ থেকে চলতি (২০১৮) বছর ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ২৯৮ জন যাত্রী হজপালনের জন্য সৌদি আরব গেছেন।

সোমবার (২৭ আগস্ট) থেকে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে। সর্বশেষ ফিরতি হজ ফ্লাইট হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর। বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে লক্ষাধিক মানুষ হজপালনের জন্য সৌদি আরব যান।

হজ একটি ফরজ ইবাদত। হজের অনেক ফজিলতের অন্যতম একটি হলো- হজের মাধ্যমে মানুষ অতীত জীবনের যাবতীয় গুনাহ থেকে মুক্তি লাভ করে। তবে বান্দার হক (মানুষের অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া) ব্যতীত। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং সকল অশ্লীল ও গুনাহর কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকে সে সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়।’ –সহিহ বোখারি:১/২০৬

অর্থাৎ হজ মানুষের জীবনের সব গুনাহ মুছে দেয়। তবে মানুষের কোনো হক অনাদায়ী থাকলে তা ব্যতীত। এজন্যই হজে যাওয়ার আগে হজের প্রধান প্রস্তুতি হচ্ছে মুরব্বিদের কাছ থেকে দোয়া নেওয়া ও কারো হক অনাদায়ী থাকলে তা পরিশোধ করে দেওয়া। আর পরিশোধ করা সম্ভব না হলে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।

আমরা জানি, হালাল উপার্জনের টাকায়, আল্লাহর প্রেমের ব্যাকুলতায়, আল্লাহর রাস্তায় নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার এক দৃপ্ত প্রশিক্ষণের নাম হজ। প্রবৃত্তির অনুসরণ, মনের খেয়ালখুশি ও অহংবোধের অস্তিত্বকে বিসর্জন দিয়ে মনের কাবায় শুধু আপন রবকে স্থান দেওয়া এবং মনে সর্বদা এ অনুভূতি জাগ্রত করা যে আল্লাহ আমাকে দেখছেন, এটাই শিক্ষা দেয় হজ।

ইমানি চেতনা দৃঢ়করণসহ মনের মাঝে আল্লাহর প্রেম সৃষ্টি এবং নিজে থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যদের ইসলামি মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্যই মূলত হজ ও কোরবানি। যাতে হজের পর হাজী পরিবারের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হন ইসলামি অনুশাসনের আদর্শ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে। আর কোরবানিকারী পরিবার পরস্পরে আত্মত্যাগের শিক্ষায় শিক্ষিত হন- ঔদার্য, সততা ও নৈতিক শক্তিবলে।

প্রতি বছর সারাবিশ্ব থেকে লাখ লাখ হাজী সাহেব হজে যান, কাবা তাওয়াফ করেন, হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন, সাফা-মারওয়া দৌঁড়ান, মিনায় শয়তানের প্রতি ঘৃণাভরে পাথর নিক্ষেপ করেন, পশু কোরবানী দেন, জমজমের পানি পান করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করেন, হজরত ইবরাহিম (আ.), হজরত হাজেরা (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)-এর জীবনের প্রেমময় ঘটনার অনুসরণে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান শেষে দেশে ফেরেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/26/1535279472503.jpg

পবিত্র কাবাকে সামনে রেখে নামাজ আদায় করছেন তাওয়াফকারীরা, ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু ভেবে দেখার বিষয় হচ্ছে- তাদের ত্যাগ, আদর্শ ও মূল্যবোধের শিক্ষা হজ-পরবর্তী সময়ে কতজনের জীবনে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়? অথচ পাপাচার, মিথ্যা, হিংসা, বিদ্বেষ, অসৎ ব্যবসা, সুদ, মুনাফেকিমুক্ত হয়ে সৎ ও সুশৃঙ্খল ইমানি জীবনযাপন করা হচ্ছে হজের শিক্ষা।

বর্তমানে পৃথিবীতে নামাজীর সংখ্যা বাড়ছে, হাজীর সংখ্যাও বাড়ছে। অন্যদিকে মুসলমানদের সমাজে অপশাসন-শোষণ, জুলুম-অত্যাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, মিথ্যা, পাপাচার ও বঞ্চনা কমছে না। নিষ্পাপ হওয়ার পরিবর্তে পাপের পঙ্কিলতায় ডুবছে পৃথিবী। এর কারণ কী?

হজ করতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে, কাজকর্ম ছেড়ে, অনেক অর্থ ব্যয় করে মক্কা-মদিনা যাচ্ছেন। তবুও সেই নিষ্পাপ হাজির সংখ্যা বাড়ছে না কেন? যাদের চরিত্র, কর্ম ও আচরণের ছোঁয়ায় সমাজ, দেশ ও জাতি সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও আদর্শবান হবে?

যারা হজ-পরবর্তী সময়েও আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্যের আশায় হজের প্রশিক্ষণ কাজে লাগবেন। ইমানি চেতনা বৃদ্ধি করে নৈতিক চরিত্রের উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করবেন। ইবরাহিমী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পরিবার গঠন করবেন এবং মানুষকে ঐক্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করবেন।

হজ থেকে ফিরে আশা মানে কাবার দূত হয়ে আদর্শবান মানুষ হিসেবে ইসলামের শিক্ষা, আদর্শ ও বাণী নিয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়া। মানুষকে সঠিক ইসলামি শিক্ষার দাওয়াত দিয়ে শান্তিময় পৃথিবী গড়ে তোলা। হজ থেকে ফিরে এসে শুধু চল্লিশ দিন ভালোভাবে শরিয়তের বিধিবিধান মেনে চলে পরবর্তী সময়ে শরিয়তের বিধিবিধান হুকুম-আহকামের রশি খুলে একেবারে মুক্ত হয়ে যাওয়া নয়!

আমাদের মনে রাখতে হবে, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতসহ সব ইবাদত হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। হজ ও কোরবানিও তদ্রূপ।

সবাইকে মনে রাখতে হবে, শুধু ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা আর একনিষ্ঠতা যথেষ্ট নয়। বরং জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি কাজে নিয়তের বিশুদ্ধতা দরকার। সেই সঙ্গে বর্জন করা দরকার, লোক দেখানো মনোভাব ও হারাম উপার্জন। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘হারাম উপার্জন দ্বারা গঠিত শরীর দোজখের জ্বালানি হবে।’

তাই মুসলমানদের শুধু আচরণীয় হজ পালনের মাধ্যমে দায়িত্ব শেষ- এটা মনে করলে চলবে না। বরং বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণের জন্য সবাইকে উৎসর্গিত ও নিবেদিতপ্রাণ হতে হবে। মানুষের অন্তর থেকে পাশবিক শক্তি ও চিন্তা-চেতনাকে দূর করতে হবে।

ইসলাম শিক্ষা দেয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে নিজে পাপমুক্ত থাকার ও অন্যকে পাপমুক্ত রাখার। কিন্তু বর্তমান পরিবেশে যেহেতু গুনাহ থেকে বাঁচা কঠিন কাজ, তাই এ পরিবেশে পাপমুক্ত থাকার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো আল্লাহওয়ালাদের সাহচর্যে থাকা। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া, তাদের কথা মান্য করা।

এছাড়া নিম্নোক্ত আমলগুলো নিয়মিতভাবে করে যাওয়া-

১. প্রতিদিন নিয়মিত কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করা।
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায়ের চেষ্টা করা।
৩. প্রতিদিনের ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজের অভ্যাস গড়ে তোলা।
৪. নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাদ পড়তে চেষ্টা করা।
৫. প্রতিদিন ইস্তেগফার, দরূদ শরিফ ও অন্যান্য দোয়া-জিকির ইত্যাদি পাঠ করা।

প্রিয় হাজী সাহেবান! আসুন, আমরা ইসলামের দেখানো পথে জীবন পরিচালনা করি। হজের গুরুত্ব অনুধাবন করে, হজ-পরবর্তী জীবন সেভাবে পরিচালনা করি।

   

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;