কাবা শরিফের নতুন গিলাফ হস্তান্তর
খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন ও সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল কাবা শরিফের জন্য তৈরি করা নতুন গিলাফ কাবার সিনিয়র তত্বাবধায়ক শায়খ সালেহ বিন জায়নুল আবেদিনের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হারামাইন প্রেসিডেন্ট শায়খ ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস। খবর সৌদি প্রেস এজেন্সি।
রীতি অনুযায়ী ৯ জিলহজ ফজরের নামাজের পর হজযাত্রীরা যখন আরাফার ময়দানে অবস্থান করবেন, তখন নতুন এ গিলাফ চড়ানো হবে পবিত্র কাবায়।
কাবার নতুন গিলাফ তত্ত্বাবধায়কদের কাছে হস্তান্তরের সময় ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে ধন্যবাদ জানান।
মক্কার নিকটবর্তী উম্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ শ্রমিক সারা বছর কাবার গিলাফ তৈরির কাজে নিয়োজিত থাকেন।
গিলাফটি খুব টেকসই ও মানসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়। যেন রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট না হয় এবং এতে খাঁটি রেশম ব্যবহার করা হয়। পবিত্র কাবার কালো গিলাফকে কিসওয়া বলা হয়। গিলাফের বাইরের কালো কাপড়ে স্বর্ণমন্ডিত রেশমি সুতা দিয়ে দক্ষ কারিগর দিয়ে ক্যালিওগ্রাফি করা হয়। একটি গিলাফ তৈরি করতে ১২০ কেজি সোনার সুতা, ৭০০ কেজি রেশম সুতা ও ২৫ কেজি রুপার সুতা লাগে। গিলাফটির দৈর্ঘ্য ১৪ মিটার এবং প্রস্থ ৪৪ মিটার।
পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২০ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল।
প্রসঙ্গত, পবিত্র হজ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই কাবা শরিফের গিলাফ তিন মিটার ওপরে ভাঁজ করে রেখেছে হজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। ভাঁজ করা অংশটুকু সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
কিসওয়া তথা গিলাফের সংরক্ষণ এবং কাবার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থেই এমনটি করা হয়ে থাকে বলে জানা গেছে। কারণ, তাওয়াফের সময় হাজিদের অনেকেই কাবা শরিফ স্পর্শ করার চেষ্টা করেন এবং বরকত মনে করে কেউ কেউ গিলাফ কেটে নিতে চান। যদিও ইসলামে এমন কোনো কথা বলা নেই।
এ বছর হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বায়তুল্লাহর চারপাশে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। তাওয়াফকারীরা এই ব্যারিকেড অতিক্রম করতে পারবেন না।
সৌদি আরবের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের দিক-নির্দেশনায় এবার হজে কাবার গিলাফ, কিংবা কাবা স্পর্শ করা, সেই সঙ্গে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শায়খ আবদুর রহমান আস সুদাইস, নিজে এসব কাজ দেখাশোনা করছেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে শুধুমাত্র সৌদি আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও দেশটির নাগরিকদের সমন্বয়ে দশ হাজার মানুষ এবার হজপালন করবেন। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ হজপালন করেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার মাত্র দশ হাজার মানুষ হজপালন করবেন। তার পরও প্রস্তুতিতে কোনো ধরনের কমতি নেই সৌদি কর্তৃপক্ষের। ইতোমধ্যে মক্কার জমজম টাওয়ার, মিনা টাওয়ার, আরাফার ময়দান ও মুজদালিফা প্রস্তুত করা হয়েছে হাজিদের জন্য।
-আল আরাবিয়া অবলম্বনে মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ