হজের অপেক্ষায় হোটেল রুমে সময় কাটছে হাজিদের

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মক্কা শরিফ, ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা শরিফ, ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার (২৪ জুলাই) বিকেল থেকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে সৌদি আরবের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হজযাত্রীরা মক্কা আসা শুরু করেছেন।

১৯ জুলাই থেকে হোম কোয়োরেন্টাইন শেষে তারা মক্কা এসে আরও চারদিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করবেন। এর পর ৮ জিলহজ বাদ ফজর রওয়ানা হবেন মিনায়। মিনাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।

বিজ্ঞাপন

মিনা রওয়ানা হওয়ার আগে হজযাত্রীরা ইহরাম পরিধানের জন্য কারনুল মানাযেল যাবেন। সেখান থেকে ইহরামের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিনা পৌঁছবেন। কারনুল মানাযেল এর বর্তমান নাম ‘আস্সাইলুল কাবির’। মক্কা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭৫ কিলোমিটার।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে হজযাত্রীদের, ছবি: সংগৃহীত

এটা তায়েফ ও নাজদবাসীদের মিকাত। তায়েফের পথে হাদার দিকে আরেকটি জায়গা রয়েছে, যার নাম ওয়াদি মুহাররাম। উভয়টি নাজদ এবং যারা তায়েফের পথে আসেন তাদের মিকাত।

বিজ্ঞাপন

ইহরাম বাঁধার স্থানকে মিকাত বলে। হজ ও উমরার জন্য নির্ধারিত স্থান অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম বাঁধা ফরজ। সুতরাং নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম না বাঁধলে হজ ও উমরা আদায় হবে না। তাই হজ ও উমরা পালনকারীদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান (মিকাত) থেকেই ফরজ কাজ ইহরাম বাঁধতে হয়। অঞ্চলভেদে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহরামের জন্য পাঁচটি স্থানকে (মিকাত) নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এর অন্যতম হলো কারনুল মানাযেল।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে মাত্র ১০ হাজার হজযাত্রী নিয়ে এ বছর হজের আয়োজন করেছে সৌদি সরকার। কেবল সৌদি নাগরিক এবং দেশটিতে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা।

মিনা রওয়ানা হওয়ার আগে হজযাত্রীরা মক্কার নির্দিষ্ট হোটেলগুলোতে অবস্থান করবেন। প্রত্যেকের জন্য আলাদা রুম বরাদ্দ করা হয়েছে। যেখানে প্রয়োজনীয় সবকিছুই রাখা আছে। প্রতিটি রুমে বোতলজাত করা জমজমের পানিসহ মৌসুমি ফলফলাদি এবং নানারকমের মিষ্টিজাতীয় খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া হাজিদের মধ্যাহ্নভোজ এবং রাতের খাবারের জন্য প্রতিটি রুমে একটি করে খাবার মেন্যু রাখা আছে। নিজেদের রুচিসম্মত খাবার খেতে পারবেন হজযাত্রীরা।

মিকাত কারনুল মানাযেল, ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাজিদের প্রতিটি রুমে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ সুরক্ষিত ইহরামের কাপড়, হজ গাইড, পাথর, ছাতা এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহন করার জন্য একটি করে লাগেজ সরবরাহ করা হয়েছে।

হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রী মন্ত্রী মুহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন জানিয়েছেন, হাজিদের মৌলিক প্রয়োজনীয় সবকিছুরই ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাজিরা যেন সুস্থতা ও নিরাপত্তার সঙ্গে নির্বিঘ্নে হজের কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।

করোনার কারণে বেশ কিছু বিধি-নিষেধের মধ্য দিয়ে এ বছর হজের আচার-আচরণ পালন করতে হবে।

সৌদি আরবের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের দিক-নির্দেশনায় এবার হজে কাবার গিলাফ, কিংবা কাবা স্পর্শ করা, সেই সঙ্গে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের সেবার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা সব কর্মীর করোনা পরীক্ষা করা হবে এবং সেই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান হজ চলাকালীন বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে থাকে তাদের কর্মচারীদেরও করোনা পরীক্ষা করা হবে।

প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ হাজিদেরকে সরবরাহ করা লাগেজ, ছবি: সংগৃহীত

হজ বিষয়ক সচিব ড. হোসাইন আশ-শরীফ বলেন, হজ অফিসের প্রশাসনিক কর্মচারী এবং সরাসরি যারা হজযাত্রীদের সেবা করেন, তাদের সবার করোনা পরীক্ষা হবে। যাদের করোনা নেগেটিভ আসবে, কেবল তারাই এসব কাজে নিয়োগ পাবেন।

তিনি আরও বলেন, হজযাত্রীদের দলে দলে ভাগ করে পর্যায়ক্রমে হজের স্থানে পাঠানো হবে। প্রত্যেক দলের সঙ্গে দক্ষ একটি মেডিকেল টিম যাবে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ ও বিস্তাররোধের জন্যই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি সরকার।

-আল আরাবিয়া অবলম্বনে মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ