রীতি ভেঙে এবার কাবার গিলাফ বদলানো হবে হজের আগের রাতে

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কাবার গিলাফ বদলানোর দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

কাবার গিলাফ বদলানোর দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক মহামারির কারণে মাত্র দশ হাজার মুসল্লি এবার হজপালনের সুযোগ পেয়েছেন। পুরোপুরি সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হজের আচার-আচরণ পালন করতে হবে। এবার হজকে অনেকেই ‘বিরল হজ’ বলে অভিহিত করেছেন।

নতুন নিয়ম, নানা ঘটনা ও পরিস্থিতির সাক্ষী হবেন এবারের হাজিরা। এরই মাঝে দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী হজের দিন পবিত্র কাবার গিলাফ ‘কিসওয়া’ বদলানোর রীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে হারামাইন প্রেসিডেন্সি।

বিজ্ঞাপন

নতুন ঘোষণা অনুযায়ী এবার আর ৯ জিলহজ হজের দিন কাবা শরিফের গিলাফ বদলানো হবে না। এবার গিলাফ বদলানো হবে, ৮ জিলহজ (২৯ জুলাই) রাতে এশার নামাজের পর। তবে গিলাফ বদলাতে বদলাতে সকাল হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে কাবা শরিফের নতুন গিলাফ হস্তান্তর করা হয়েছে। খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন ও সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল কাবা শরিফের জন্য তৈরি করা নতুন গিলাফ কাবার সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক শায়খ সালেহ বিন জায়নুল আবেদিনের কাছে হস্তান্তর করেছেন।

বিজ্ঞাপন

মক্কার নিকটবর্তী উম্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির একটি কারখানা রয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ শ্রমিক সারা বছর কাবার গিলাফ তৈরির কাজে নিয়োজিত থাকেন।

গিলাফটি খুব টেকসই ও মানসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়। যেন রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট না হয় এবং এতে খাঁটি রেশম ব্যবহার করা হয়। পবিত্র কাবার কালো গিলাফকে কিসওয়া বলা হয়। গিলাফের বাইরের কালো কাপড়ে স্বর্ণমণ্ডিত রেশমি সুতা দিয়ে দক্ষ কারিগর দিয়ে ক্যালিওগ্রাফি করা হয়। গিলাফে পবিত্র কোরআনের আয়াত শোভা পায়, অক্ষরগুলো সোনালি আভায় উদ্ভাসিত। একটি গিলাফ তৈরি করতে ১২০ কেজি সোনার সুতা, ৭০০ কেজি রেশম সুতা ও ২৫ কেজি রুপার সুতা লাগে। গিলাফটির দৈর্ঘ্য ১৪ মিটার এবং প্রস্থ ৪৪ মিটার।

পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২০ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল।

পুরোনো গিলাফকে টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।

কাবাঘরকে গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদন কখন বা কার উদ্যোগে শুরু হয় সেই সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক সূত্রে বলা হয়েছে, হজরত ইসমাঈল (আ.) প্রথম পবিত্র কাবাঘরকে গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদন করেন।

ভিন্ন আরেকটি বর্ণনায় আছে, নবী করিম (সা.)-এর পূর্বপুরুষ আদনান ইবনে আইদ পবিত্র কাবাঘরকে প্রথম গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদিত করেন।

তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী, হিমিয়ারের রাজা তুব্বা আবু বকর আসাদ পবিত্র কাবাঘর গিলাফের মাধ্যমে আচ্ছাদনকারী প্রথম ব্যক্তি।