আমৃত্যু কারাদণ্ড: রিভিউ নিয়ে রায় ১ ডিসেম্বর
সাভারের এক হত্যা মামলায় ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাবাস’ বলে আপিল বিভাগের মতামতের রায়টির পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদনের ওপর পুনরায় শুনানি হয়েছে। এ বিষয়ে রায়ের জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। যুক্ত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
অ্যামিকাস কিউরিরা হলেন- ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, এএফ হাসান আরিফ, আব্দুর রেজাক খান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন।
গত ১১ এপ্রিল ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড’ এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানিতে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কি না সে বিষয়ে আইনি মতামত তুলে ধরতে চার সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেন আদালত।
২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল আবেদন জানান।
এদিকে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত বলেন, দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী দোষী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন, এটাই বিধান। এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডটা হচ্ছে ব্যতিক্রম। যখন এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তখন এর কারণ অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। দণ্ডবিধির ৫৩ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৪৫ ধারার সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড।
আদালত আরও বলেন, যদি হাইকোর্ট বিভাগ বা এ আদালত (আপিল বিভাগ) মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন তখন এবং নির্দেশ দেন যে তার স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত এ কারাদণ্ড ভোগ করবেন, তখন এ ধরনের মামলায় সাজা কমানোর আবেদন গ্রাহ্য হবে না।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।