গাইবান্ধায় ৯ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধায় ৯ বছরের একটি শিশু ধর্ষণ মামলায় এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে এই রায় দেন গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান। ৩৭ বছর বয়সী সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম আব্দুল আলিম (আঙ্গুর)। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পারাইল গ্রামের মৃত আছাব আলীর ছেলে।

মামলার এজাহার, আদালতের নথিসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এক দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিল নয় বছর বয়সী ওই শিশু। পথে আসামি আলিম শিশুটিকে ফুসলিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং বিষয়টি গোপন রাখতে ভয়ভীতিও দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে শিশুটি গোপনাঙ্গের ব্যথায় কান্নাকাটি করলে একপর্যায় মেয়টির মা সম্পূর্ণ ঘটনা জানতে পারেন।

পরে এঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে আব্দুল আলিমকে আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরদিন পুলিশ ওই মামলায় আসামিকে গ্রেফতার করে। পরে সেসময়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছিলেন আসামি আঙ্গুর।

সন্ধ্যায় রায়ের বিষয়টি মোবাবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রোসিকিউটর (পিপি) শাহীন গুলশান নাহার মুনমুন। জানতে চাইলে এসময় তিনি বলেন, "দীর্ঘ সাক্ষী শুনানি ও প্রমাণাদি পর্যালোচনা শেষে আদালত অভিযুক্ত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করেছে।

মামলার আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. সিদ্দিকুল ইসলাম রিপু।

চাঁদপুরে হত্যা মামলায় দু’জনের মৃত্যুদণ্ড



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁদপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদপুর শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকার ভূঁইয়া বাড়িতে কোহিনুর হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (৩০ জুন) বিকেলে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলো- নাজমা আক্তার নয়ন ও মো. রফিক।

হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ আগস্ট রাত ৮টায় কোহিনুর বেগম আসামিদের কাছ থেকে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারা তাকে ধারালো বঁটি দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে হত্যা করে।

ঘটনার পর কোহিনুরের ভাই আবদুল মালেক বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলায় ১৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রঞ্জিত রায় চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের এ রায়ে কোহিনুরের পরিবার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

;

বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে মতিউরের স্ত্রী লায়লার আবেদন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি

মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি

  • Font increase
  • Font Decrease

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

রোববার (৩০ জুন) আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি এই আবেদন করেন। আগামী ২৮ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেছেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম।

ড. মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি ছিলেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। সেখান থেকে অধ্যাপনা ছেড়ে কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর হস্তক্ষেপে ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেবের সহযোগিতায় ২০২৩ সালে ১৯ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন।

২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস ছাদেক মারা যাওয়ার পর পদটি শূন্য হয়। পরে নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ঘোষণা দেন। দলীয় মনোনয়নও পান তিনি। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে ৬ প্রার্থীকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন লায়লা কানিজ লাকি।

গত ২৪ জুন দুর্নীতি সমন কমিশনের (দুদক) আবদনের প্রেক্ষিতে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ এবং পুত্র আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।

এদিকে, ড. মতিউর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্যের একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া আলোচিত মতিউর রহমানকে রোববার বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এবার কোরবানির ঈদে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত। তার পরই আলোচনায় আসে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ, আয় ও ব্যয়ের তথ্য। এনিয়ে খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খোদ এনবিআরও তার আয়কর রিটার্নে দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।

মূলত মতিউর রহমান কাস্টমস কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুদকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে।

সাধারণ একজন চাকরিজীবী হয়েও এ পর্যন্ত শতকোটি টাকা সাদা করেছেন। বসুন্ধরায় দুই কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট এবং ধানমন্ডিতে ৫ কাঠায় আলিশান ৭ তলা বাড়ির মালিক। যার মূল্য ৪০ কোটি টাকা। ভালুকার সিডস্টোর এলাকার পাশেই প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর গ্লোবাল জুতার ফ্যাক্টরি। এ ছাড়া রয়েছে ৬০ শতাংশ জমি।

জেসিক্স নামে একটি যৌথ ডেভেলপার কোম্পানি রয়েছে। বসুন্ধরার ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন আছে। গাজীপুর সদরে ৮টি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তার স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৪.০৩ শতাংশ, গাজীপুর থানার খিলগাঁও মৌজায় ৬২.১৬ শতাংশ জমি রয়েছে।

ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে ১৪.৫০ শতাংশ জমি আছে গাজীপুরে। যার মূল্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা। তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে আছে একাধিক দামি গাড়ি। তার নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫০ কোটি টাকার বেশি এফডিআর করা আছে। তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। বিভিন্ন নারীর সঙ্গেও তার সম্পর্ক আছে।

ড. মতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স বিষয়ে সম্মান ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রিস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ভ্যাট এবং কাস্টমস বিষয়ে দেশ-বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

;

সাংবাদিকদের আয়কর নিয়ে নোয়াবের বক্তব্য শুনবেন আপিল বিভাগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আদালত/ছবি: সংগৃহীত

আদালত/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিক পক্ষ দেবেন এই সংক্রান্ত হাইকোর্ট রায়ের বিষয়ে আনা লিভ টু আপিলে নিউজ পেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) বক্তব্য শুনবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনা পৃথক লিভ টু আপিল শুনানিতে নোয়াবের বক্তব্য শুনবেন বলে রোববার (৩০ জুন) আদালতে বলেন। আগামীকাল এই বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. সালাহউদ্দিন দোলন। তিনি শুনানিতে বলেন, সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিক পক্ষ এযাবৎ কাল দিয়ে এসেছেন।

সর্বশেষ নবম ওয়াজবোর্ডও এটি প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিকপক্ষ দেবেন এই সুপারিশ করেছেন। নবম ওয়েজ বোর্ডের প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় মন্ত্রিসভার একটি সাব কমিটি এটি সংবাদপত্র সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের দেয়ার সুপারিশ করেন। এই সুপারিশের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সুপারিশ বাতিল করে রায় দেন। বিষয়টি নিয়ে এর আগে আপিল বিভাগের রায় রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সংক্ষুব্ধ হওয়ার কোন কারণ নেই বলে দাবি করেন তিনি। ব্যারিস্টার ড. সালাহউদ্দিন দোলন বলেন, সাংবাদিকদের আয়কর সাংবাদিকরাই প্রদান করে থাকেন। প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার অনুকূলে সাংবাদিক ও প্রেস শ্রমিকদের যে আয়কর হয় তা প্রান্তিক সুবিধা বা প্রিঞ্জ বেনেফিট হিসেবে প্রদান করেন মালিকপক্ষ বা কর্তৃপক্ষ।এটি অষ্টম ওয়েজবোর্ড পর্যন্ত বহাল ছিল। নবম ওয়েজবোর্ডও তা বহাল রেখে সুপারিশ করে।

রিট আবেদনের পক্ষে সিনিয়র এডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ শুনানিতে বলেন, সকল অংশীজনের সাথে আলোচনা করেই নবম ওয়েজ বোর্ড সুপারিশ করেছেন। সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে মালিকপক্ষ দিবেন এর পক্ষে তিনি আইনি রেফারেন্স উল্লেখ করেন।

রিটের পক্ষে আরও ছিলেন এডভোকেট এস.এম মাহিদুল ইসলাম সজিব, এডভোকেট তোফায়েল আহমদ।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। তারা শুনানিতে আয়করের বিষয়টি নিয়ে মালিক পক্ষ নোয়াবের বক্তব্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

গত বছরের ২৪ জুলাই সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের নবম ওয়েজবোর্ডে গ্র্যাচুইটি ও আয়কর সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার সুপারিশ অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন। সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান। রিট পিটিশনার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট ড. কাজী আকতার হামিদ।

সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাহউদ্দিন দোলন বলেন, সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের আয়কর ও আনুতোষিক সংক্রান্ত দুটি সুপারিশের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। ফলে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের আয়কর আগের মতোই মালিক বা কর্তৃপক্ষকেই পরিশোধ করতে হবে। পরে হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষে পৃথক আবেদন দাখিল করা হয়।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের বেতনের অনুকূলে যে আয়কর হয় তা মালিকপক্ষ বা কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে সবসময় পেয়ে এসেছেন। আর বছরে মূল বেতনের সমান দুটি আনুতোষিক বা গ্র্যাচুইটি পাবেন বাসস’র সাংবাদিক-কর্মচারীরা, এটি বাসস আইনেও নিশ্চিত রয়েছে। তাছাড়া প্রাপ্ত সুবিধা নিয়ে শ্রম আইনের ১৪৯(২) ধারায় নিশ্চায়তা রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে নবম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। এই বোর্ড অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা-পরামর্শের পর ‘নবম সংবাদপত্র ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ’ চূড়ান্ত করে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর তা তথ্য মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করে। ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করে সরকার।

সে প্রজ্ঞাপনের সপ্তম অধ্যায়ের ৩ নম্বর শর্তে বলা আছে, সব শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের বেতনের ওপর আরোপিত আয়কর সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদেয় হবে। একই অধ্যায়ের ৭ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, সব শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীরা প্রত্যেক বছরে অথবা তার অংশ বিশেষ ছয় মাস বা এর অধিক সময় চাকরির জন্য সর্বশেষ প্রাপ্ত বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত দুই মাসের মূল বেতনের সম পরিমাণ অর্থ গ্র্যাচুইটি হিসেবে প্রাপ্য হবেন।

অথচ প্রজ্ঞাপনে ‘সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, কার্যকরণ ও প্রয়োগ’ শিরোনামের দ্বাদশ অধ্যায়ের ৪ নম্বর শর্তে মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সাংবাদিক, কর্মচারীদের নিজেদের আয় থেকে আয়কর পরিশোধ করবেন এবং বছরে মূল বেতনের সমান একটি গ্র্যাচুইটি পাবেন। নবম ওয়েজবোর্ডের মন্ত্রিসভা কমিটির এই সুপারিশ চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুজ্জামান। তখন রিটটির প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২৫ নভেম্বর আদালত রুল জারি করেন। রুলে আয়কর ও গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তথ্যসচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সে রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর সুপারিশ দু’টিকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।

;

৪ ফ্ল্যাটের চাবি বেনজীরের কাছে, প্রবেশ করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪, বেনজীরের ফ্ল্যাটগুলোতে প্রবেশ করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত

ছবি: বার্তা২৪, বেনজীরের ফ্ল্যাটগুলোতে প্রবেশ করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্রোকের আদেশ দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে কেনা রাজধানীর গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটে প্রবেশ করতে পারছে না দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।

ফ্ল্যাটগুলোর চাবি বেনজীরের কাছে রয়েছে। ফ্ল্যাটগুলোতে প্রবেশ করতে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৩০ জুন) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই আদেশ দেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট) সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটগুলোতে অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিনা বাধায় ফ্ল্যাটে রিসিভারের প্রবেশ, মালামালের ইনভেন্টরি, স্পেসের পরিমাপপূর্বক ভাড়া নির্ধারণ করার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।

পরে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে শুনানি করেন।

শুনানি শেষে আদালত ফ্ল্যাটে প্রবেশে একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেন। তার উপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করবেন চারটি ফ্ল্যাটের দেখভালে নিয়োজিত থাকা দুদক কর্মকর্তা।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে কেনা গুলশান-১ এ অবস্থিত রাংকন আইকোন টাওয়ারের চারটি ফ্ল্যাটের সঠিক নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দুদকের পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিট)-কে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

এ আদেশ পাওয়ার পর পরিচালক (সম্পদ ব্যবস্থাপনা) একটি টিমসহ ১৩ জুন সংশ্লিষ্ট ভবনের ফ্ল্যাটগুলো পরিদর্শনে যান।

এ ভবনের নিচতলায় রিসেপশনিস্ট মেহরাব হোসেন অপির সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ফ্ল্যাটগুলোতে কেউ বসবাস করেন না। ভবনের ম্যানেজার জসিমকে ভবনে পাওয়া যায়নি। পরে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ভবনের ১৩ ও ১৪ তলায় ডুপ্লেক্স আকারে ৯ হাজার বর্গফুটের বেশি স্পেস নিয়ে ৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে।

ফ্ল্যাটগুলোর চাবি তাদের কাছে নেই বলে জানান রিসেপশনিস্ট জামান।

;