সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৮০ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলা শহরের কলেজপাড়া এলাকার সাগর মিয়া বাদি হয়ে তার ছেলেকে হত্যার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বিকেল ৩টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী মোড়ে সংঘর্ষের সময় আশিক মিয়া-(১৭) হত্যার ঘটনায় এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আরো ২০০/৩০০ লোককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মৃত আশিক মিয়া পৌর এলাকার কলেজপাড়ার সাগর মিয়ার ছেলে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, তানজিল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হালিম শাহ লিল মিয়া, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাকিল মিয়া, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুরে মাওলা ফারানি, বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান, বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসাইন প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয় ও মিছিলে অংশ গ্রহণ করে আশিক মিয়া। ২৬ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে শহরের কাউতলী মোড়ে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোড়া গুলি আশিকের বুকে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় হাসপাতাল থেকে কোন কিছু দেয়া হয়নি ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই আশিকের লাশ দাফন করা হয়। ওই সময় স্বৈরাচারী সরকারের দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।