সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে বোমা হামলার মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ২৬ জনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন (মৃত), স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিএনপিরসহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আ. কাইয়ুম ও বিএনপির সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু।
এছাড়া আসামি হিসেবে মোস্তফা, মামুন, মানিক, আব্দুর রহিম, মো. শফিকুল ইসলাম খান, মো. ওসমান গনি, মো. খোকন মিয়া, মো. রেজাউর রহমান ফাহিম, মো. মিজানুর রহমান সোহাগ, এসএম আমিনুর রহমান, সৈয়দ সাহাদাৎ আহম্মাদ, মাসুদ ইব্রাহিম, মো. মাহফুজুল হক, মো. সাইদুল ইসলাম ও রেজাউর করিম শাহিনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমানের আদালত পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহন করে এ আদেশ দেন।
গত ১৩ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. আব্দুস ছোবহান সকল আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে এই প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ডাকা মিছিলে অনেক লোক ছিল। তারা মিছিল করে বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলশান ২নং গোলচত্বরের নিকট পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা লোকজন কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে। এতে মিছিলে থাকা লোকজন আহত হয় এবং মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়। আহত লোকজন ঢাকা মেডিক্যালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়।
মিছিল চলাকালে কে বা কারা কোন দিক থেকে বোমা নিক্ষেপ করে তার কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী বা কে কে বোমা নিক্ষেপ করে তা তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা বা পরে একাধিক তদন্ত কর্মকর্তা শনাক্ত করতে পারেনি। এ ব্যাপারে কোনো ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি নেই।
আরও উল্লেখ করা হয়, তদন্তকালে কোনো সাক্ষী এজাহারনামীয় আসামিদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রদান করেননি। মামলাটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় তদন্তকালে বর্তমানে ঘটনাস্থলের আশেপাশের তৎকালীন সময়ে কোনো লোকজন না থাকায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো সাক্ষী পাওয়া যায়নি। এ মামলায় কোনো আসামি শনাক্ত করতে না পারায় এবং এজাহারে উল্লিখিত আসামিরা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় মামলাটি অহেতুক বিলম্ব না করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সদস্যরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের জন্য গুলশানে সমবেত হন। সেখানে সমাবেশ শেষে ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে রওনা হলে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে ১৬ জন গুরুতর আহত হয়।