বিশ্ব ক্যান্সার দিবস: যে খাবারগুলো ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে

  • নাছরিন আক্তার উর্মি, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ছবি: বার্তা২৪.কম

৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ছবি: বার্তা২৪.কম

৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস হিসাবে পালন করা হয়। এই দিনটি ক্যান্সারের কারণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা এবং কীভাবে এই অবস্থার সাথে বাঁচতে হয় সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পালিত হয়। সুস্বাস্থ্য আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। সুষম খাদ্যভাস স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে নিদিষ্ট কিছু খাবার নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।

বিশেষজ্ঞেদের মতে, ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ। প্যাকেটজাত ও ভেজালযুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণ পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। যা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন প্রকৃতির ক্যান্সারের জন্য খাদ্যাভাস, পরিবেশ এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা দায়ী। পুষ্টির পরির্বতন ও জিনগতভাবে পরিবর্তিত ফল ও শাকসব্জি, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, ফাস্টফুড খাবার গ্রহণ ক্যান্সারের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ। ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রবীণ গার্গ বলেছেন, বর্তমানে প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে। কারণ এটি সময় সাশ্রয় করে এবং এর ফলে বেশিরভাগ শ্রমজীবী এবং তরুণ প্রজন্ম প্যাকেটজাত খাবার বেশি পছন্দ করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৮ সালে ক্যান্সারের কারণে প্রায় ৯.৬ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে।

কিছু নির্দিষ্ট খাবার ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। খাবারগুলো হলো-

বিজ্ঞাপন

পুনরায় ব্যবহৃত তেলে ভাজা খাবার:

ভাজা খাবার গ্রহণ একেবারে বন্ধ করা কিংবা সীমিত পরিমানে গ্রহণের পরামর্শ সবসময় দেয়া হয়। নিয়মিত তেলে ভাজা খাবার খেলে স্থুলত্ব, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। একই তেল একাধিকবার ভাজার জন্য ব্যবহার হলে সেই খাবার খাওয়া আরও বেশি ক্ষতিকারক। কারণ তেলটি কার্সিনোজেনিক হয়ে যায়।

প্রক্রিয়াজাত মাংস:

বেকন, সালামি, পেপারোনি, সসেজ, সংরক্ষণ করা মাংস এবং ফ্লেভারযুক্ত যে কোনও মাংস কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও নোনতা, গাঁজানো, টক এবং স্মোকি ফ্লোভারের খাবার গ্রহণ কমিয়ে দেয়া হলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পাবে।

অ্যালকোহল:

নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পান ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। অ্যালকোহল পান করলে মুখ, গলা, গলনালী, খাদ্যনালী, কোলন, মলদ্বার, লিভার এবং মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই যত কম অ্যালকোহল পান করবেন ততই ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকবেন।

লাল মাংস:

গরু এবং মেষসহ সমস্ত লাল মাংস যা প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস বলে পরিচিত। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমণে লাল মাংস খেলে কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই লাল মাংস পরিমিত বা সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস) অনুসারে, যারা প্রতিদিন ৯০ গ্রাম থেকে বেশি রান্না করা লাল মাংস খান তাদের খাওয়ার পরিমাণ ৭০ গ্রাম কমাতে হবে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ফলমূল, শাকসব্জী, বাদাম, বীজ, আস্ত শস্য, মসুর এবং ডাল জাতীয় খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান করা ছেড়ে দিন এবং নিয়মিত শররিচর্চা করুন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ক্যান্সারমুক্ত থাকার অন্যতম কার্যকর উপায়।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি