পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ব্যয়বহুল খাবার

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

খাদ্য মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম মৌলিক চাহিদা। তবে ভোজনরসিকদের কাছে খাদ্য হল জীবনের ভালোবাসা। আপনি যদি একজন ভোজনরসিক হন, তাহলে আপনি কি এমন কোনো খাবার খেতে প্রস্তুত, যার জন্য এক হাজার ডলার বা এক লাখ টাকারও বেশি খরচ হবে? আসুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০টি খাবারের নাম। কোটিপতি হলেই কেবলমাত্র এসব খাবারের স্বাদ নেয়া যাবে।

ওয়াগু গরুর মাংস

বিজ্ঞাপন

আপনি যদি মাস্টারসেফ অস্ট্রেলিয়া দেখে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই ওয়াগু গরুর মাংসের কথা জানবেন। কেবল জাপানি গরুর মাংসকেই ‘ওয়াগু বিফ’ বলা হয়। জাপানের চারটি ভিন্ন প্রজাতির গরুর থেকে এ মাংস পাওয়া যায়। এ গরুর মাংস চর্বিবহুলতার জন্য বিখ্যাত।

জাপানে সবচেয়ে দামি ওয়াগু বিফ হচ্ছে 'কোবে বিফ'। যার প্রতি কেজির দাম ৬৪০ ডলার।

বিজ্ঞাপন

জাফরান

জাফরান এক ধরনের সিজনিং, যা প্রায় সব ধরনের ভারতীয় বিশেষ অনুষ্ঠানে খাবার রান্নায় ব্যবহার করা হয়।

তবে ভারতীয়রা খুব বুঝেশুনে এটি ব্যবহার করে। ইরানি জাফরান পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মশলার একটি। এই জাফরানের দাম প্রতি কিলোগ্রাম ৪০০ ডলার। এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল হল জাফরানের প্রধান উৎস।


কোপি লুয়াক

কোপি লুয়াক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল কফি। এটি গোল্ডেন কফি বিন থেকে তৈরি করা হয়, যা এশিয়ান পাম সিভেট নামের বিড়ালের মল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটি এক ধরনের ছোট বিড়াল, যা এশিয়ার কিছু অংশে বাস করে। যে কফি বিন থেকে এই কফি তৈরি হয়, সেই বিনগুলোকে এশিয়ান পাম সিভেট নামের বিড়ালকে খাওয়ানো হয়। পাম সিভেট এই কফি বিনগুলো খাওয়ার পর সেগুলো তার পাকস্থলীর এসিডে জারিত হয়।

এরপর বিড়ালের মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এই কফি বিন। সেই বিন থেকে তৈরি হয় কফি। এর প্রতি পাউন্ডের জন্য আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ৬০০ ডলার।


মুজ পনির

পনির সবসময়ই সবচেয়ে ব্যয়বহুল দুগ্ধজাত পণ্য। তবে মুজ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পনির, কারণ এটি মুজ দুধ দিয়ে উৎপাদিত হয়।

শুধুমাত্র সুইডেনে মুজ পনির প্রক্রিয়াজাত করা হয় ও পাওয়া যায়। প্রতি কিলোগ্রাম মুজ পনির প্রায় এক হাজার মার্কিন ডলার। এই পনির এত ব্যয়বহুল, কারণ মিল্কিং মুজ তৈরি মোটেই সহজ কাজ নয়।


সাদা ট্রাফলস

সাদা ট্রাফল এক ধরনের ভূগর্ভস্থ ছত্রাক, যা ইউরোপে পাওয়া যায়। ইউরোপের জলবায়ু সাদা ট্রাফলগুলোর জন্মানোর উপযুক্ত স্থান, কেননা এগুলো বৃদ্ধির জন্য খুব নির্দিষ্ট পরিবেশ ও জলবায়ুর প্রয়োজন হয়।

ট্রাফল হলো এ ধরনের বিরল প্রজাতির তীব্র সুগন্ধ যুক্ত মাশরুম। এর ফ্রুট বডির শরীর অমসৃণ ও অ-সমতল, যা দেখতে অনেকটা আলুর মত। চওড়া পাতা ও ক্যালক্যারিয়াস সমৃদ্ধ বন্য পরিবেশে বসন্তকাল ও বর্ষাকালে এই মাশরুম জন্মায়। এটা মাটির নিচে হয় বলে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়না।


মাতসুতাক মাশরুম

মাতসুতাক জাপানের তাম্বা অঞ্চলে জন্মানো এক ধরনের মাশরুম। এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মাশরুমগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত। বিশেষ মিষ্টি ও মশলাদার স্বাদের জন্য এই মাশরুমগুলো বিখ্যাত।

এই মাশরুমগুলো শরৎকালে বছরে মাত্র একবার কাটা হয় এবং জাপানিদের মধ্যে সুস্বাদু খাবার হিসেবে এটি বিখ্যাত।


আয়াম সিমানি কালো মুরগি

আয়াম সিমানি কালো মুরগি বা গথ চিকেন ইন্দোনেশিয়ায় প্রজনন করা হয়। এগুলোর পালক, মাংস ও জিহ্বা সবকিছুই একেবারে কালো। শুধুমাত্র এর রক্ত লাল।

এই ধরনের মুরগি অত্যন্ত বিরল। ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগিটি মোটামুটি সস্তা ও পরিচিত হলেও, অন্যান্য দেশে এগুলো হাজার হাজার ডলারে বিক্রি হয়।


কালো তরমুজ

ডেনসুক ব্ল্যাক তরমুজ বা কালো তরমুজ শুধু জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে পাওয়া যায়।

বিশ্বে প্রায় এক হাজার ২০০ প্রজাতির তরমুজ রয়েছে। তবে সবচেয়ে দামি তরমুজ বলা হয় এটিকে। ডেনসুক প্রজাতির এ তরমুজ বিক্রি হয় নিলামে।


সোয়ালোস নেস্ট স্যুপ

সোয়ালোস নেস্ট স্যুপ বা চাইনিজ বার্ডস নেস্ট স্যুপ বিশ্বজুড়ে ভোজন রসিকরা পছন্দ করে। এই স্যুপটি সুইফলেট পাখির লালা থেকে তৈরি। এটি লাল, হলুদ ও সাদা তিনটি ভিন্ন রঙে পরিবেশন করা হয়।

এর মধ্যে লাল পাখির বাসার স্যুপ সবচেয়ে দামি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে এই লাল পাখির বাসার এক বাটি স্যুপের দাম ১০ হাজার ডলার। কারণ এটি তিনটি জাতের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু।


আলবিনো ক্যাভিয়ার

আপনি যদি অভিনব ব্যয়বহুল খাবারের কথা ভাবেন, তবে আপনি ক্যাভিয়ারের কথা ভাবতে পারেন। ক্যাভিয়ার আসলে এক ধরনের সামুদ্রিক মাছের ডিম। বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবারের একটি বলে গণ্য করা হয় এটিকে।

এই ক্যাভিয়ার সংগ্রহ করে প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করার কাজটি খুবই দুরূহ। তবে তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে ক্যাভিয়ার খুবই বিরল। সবচেয়ে বিখ্যাত ক্যাভিয়ার আসে বেলুজা স্টার্জেন মাছ থেকে।

কেবলমাত্র কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণ সাগরে এই মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু এই মাছ এখন বিপন্ন প্রায়। খুব কম মাছের ডিমই এখন বৈধভাবে কেনা-বেচা হয়।

গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের হিসেবে এক কিলোগ্রাম অ্যালবিনো ক্যাভিয়ারের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ৩৪ হাজার ৫শ’ মার্কিন ডলার।