শব-এ-বরাত পালন করা হয় যেভাবে
হিজরি ১৪৪৫ সনের ১৪ শা‘বানের দিন আজ বিশ্বব্যাপী শব-ই-বরাত পালন করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্মানুসারীদের জন্য আজ পবিত্র একদিন। শবে বরাতের রাত ‘ক্ষমার রাত’ হিসেবেও পরিচিত। এই পবিত্র অনুষ্ঠানটির ইতিহাস, আচার-অনুষ্ঠান এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য সম্পন্ন একবিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
ইসলামী দিনপঞ্জিকার অষ্টম মাস শা'বানের ১৫ তম দিন পালন করা হয় শব-ই-বরাত। এই রাতে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে মুসল্লীরা ক্ষমা প্রার্থনা করে। এই রাত হলো ক্ষমা, রহমত এবং ঐশ্বরিক আশীর্বাদ প্রার্থনা একটি রাত। এইদিন মুসলিমরা তাদের প্রিয়জনের জন্য প্রার্থনা করে এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্কের প্রতি চিন্তা করে। প্রার্থনা, দান-দক্ষিণা এবং সৎকর্মের মাধ্যমে, আল্লাহের অনুসারীরা এই পবিত্র রাতের সর্বাধিক সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। পরবর্তী বছরের জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ প্রার্থনায় মত্ত হন তারা।
নবী মুহাম্মদের সময় থেকে শব-এ-বরাত পালন শুরু হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই রাতে, আল্লাহ আসন্ন বছরের মুসল্লীদের ভাগ্য লেখেন। তাই পূর্ববর্তী বছরের জন্য ক্ষমা চেয়ে রহমত ও বরকত প্রার্থনা করা হয়। সারাবছরের পাপের জন্য সারারাত জেগে নামাজ পরে অনুতাপ করা হয়। যেভাবে মুসলিমরা শব-এ-বরাত পালন করে:
ক্ষমা চাওয়া: মুসলমানরা তাদের পাপের জন্য ক্ষমা চেয়ে নামাজ পড়েন। আগামী বছরের জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করে সারা রাত কাটায়। তারা বিশ্বাস করেন, আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হলে তাদের উপর আল্লাহ করুণা ও ক্ষমা বর্ষণ করেন।
নবীর সুপারিশ: তাদের আরেকটি বিশ্বাস হলো, নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার অনুসারীদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমতের জন্য সুপারিশ করেন।
ভাগ্য: শব-ই-বরাতের দিনে, আল্লাহ পরের বছরের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। তাই নিজের প্রতিফলন, আত্মদর্শন এবং ঐশ্বরিক নির্দেশনা উপলব্ধি করা হয় এই রাতে।
প্রয়াতদের স্মরণ: অনেক মুসলমানও তাদের মৃত আত্মীয় এবং প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে। মৃত্যু পর তাদের আত্মার শান্তি প্রার্থনা করেন।
ইবাদত: নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত এবং প্রার্থনায় ব্যস্ত রাত কাটায় ইসলাম-ধর্মীরা। অনেকে মসজিদে বিশেষ প্রার্থনা করতে সমবেত হন।
দান ও সৎকর্ম: শব-ই-বরাতের দিন দান করার প্রথা রয়েছে। দরিদ্রদের দান করে, অভুক্তদের খাবার দিয়ে এবং উদারতার প্রকাশের মাধ্যমে আল্লাহকে খুশি করা হয়।
কবর জিয়ারত: অনেক মুসলমানরা শব-ই-বরাতের দিন প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করতে যান। পরকালে যেন তারা ভালো থাকেন, সেই প্রার্থনা করেন। একই সাথে এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়োর মোহে জর্জরিত না হওয়ার কথা স্মরণ করেন।
খাবার: এই শুভ রাতে আনন্দ এবং আশীর্বাদ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মিষ্টিজাতীয় খাবারের আয়োজন করা হয়। বন্ধু,আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের জন্য বিশেষ খাবার এবং মিষ্টি তৈরি করে।