উপকারিতা দ্বিগুণ পেতে যে খাবারগুলো খেতে হবে একসাথে!  



ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
সালাদ ও ডিম একসাথে খেলে উপকারিতা পাওয়া যাবে বেশি। ছবি: সংগৃহীত

সালাদ ও ডিম একসাথে খেলে উপকারিতা পাওয়া যাবে বেশি। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কিছু খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দৃঢ় করতে কাজ করে এবং কিছু খাদ্য শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।

তবে প্রাকৃতিক প্রায় সকল খাবারই কোন না কোন স্বাস্থ্য গুণ বহন করে। মজার বিষয় হলো- উপকারী কিছু খাবার একসাথে গ্রহণের ফলে, তার উপকারিতার মাত্রা বেড়ে যায় বেশ অনেকটা। এই সকল খাবার একসাথে খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই পুষ্টিগুণে ভরপুর।

ভিডিও গেইমে বহুল ব্যবহৃত ‘ডাবল ডোজ’ কথাটি এক্ষেত্রে খুব ভালোভাবে যায় বিধায়, খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই ডাবল ডোজ টার্মটি। আজকের ফিচার থেকে জেনে রাখুন এমন কয়েকটি খাবারের সমন্বয়, যা একসাথে খেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে দ্বিগুণ।

সালাদ ও সিদ্ধ ডিম

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/15/1547534251591.jpg

সালাদের সঙ্গে নিশ্চয় হার্ড বয়েলড ডিম খাওয়ার কথা কখনোই ভাবেননি। মজার ও অদ্ভুত হলেও এই দুইটি খাবার একসাথে খেলে উপকারিতা মিলবে অনেক বেশি। ডিমের কুসুমের ফ্যাটকে শোষণ করতে সাহায্য করে ক্যারোটেনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সবজি। ২০১৫ সালে দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, ডিমের কুসুম নিয়মিত খাওয়ার প্রতি জোর দেওয়া প্রয়োজন।

কাঠবাদাম ও দই

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/15/1547533853869.jpg

পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-ডি সহ হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখা, মন ভালো রাখা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদাম রাখার জন্য প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দইয়ের উপকারিতার শেষ নেই। তবে যখনই দই খাবেন, কয়েকটি কাঠবাদাম যোগ করে নিবেন সঙ্গে। কাঠবাদাম দইয়ের ভিটামিন-ডি এর মাত্রা ৩২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

কালো গোলমরিচের গুঁড়া ও হলুদ গুঁড়া

হলুদের হলদে আভাতে শুধু সৌন্দর্য নয়, রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক কারকিউমিন। তবে সমস্যাটি হলো, উপকারি এই উপাদানটি শরীরে শোষিত হতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাধাপ্রাপ্ত হয়। দেখা গেছে গোলমরিচের গুঁড়ার সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় গ্রহণে এটা শোষিত হবার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ২,০০০ শতাংশ পর্যন্ত।

লাল চাল ও ডাল

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/15/1547533868584.jpg

নিরামিষাশী হয়ে থাকলে যথাযথ প্রোটিন গ্রহণের প্রতি মনযোগী হতে হবে। সেক্ষেত্রে এক বাটি লাল চালের ভাত ও ডাল হবে সবচেয়ে উপকারি খাদ্যের সমন্বয়।

লাল চাল, রসুন ও পেঁয়াজ

রসুন ও পেঁয়াজ চালে থাকা আয়রন ও জিংকের উপস্থিতির মাত্রা বৃদ্ধিতে কাজ করে। এই দুইটি প্রাকৃতিক উপাদানে থাকা সালফার সমৃদ্ধ অ্যালিয়াম মিনারেলের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয় বলে দাবি করেছে পুষ্টিবিদেরা।

গ্রিন টি ও লেবুর রস

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/15/1547533886204.jpg

উপকারি পানীয়ের মাঝে গ্রিন টির উপকারিতা নিয়ে আলাদাভাবে বলাই বাহুল্য। এতে লেবুর রস যোগ করার ফলে, গ্রিন টির অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-সি এর মাত্রা বেড়ে যায় অনেকখানি। এছাড়া এই মিশ্রণের পানীয় পাকস্থলী সুস্থ রাখতেও কাজ করে।

পেস্তা বাদাম ও কিশমিশ

অনেকেই নিয়মিত বাদাম খেয়ে থাকেন। সেই অভ্যাসটাকে কিছুটা পরিবর্তিত করে গড়ে তুলতে হবে পেস্তাবাদাম ও কিশমিশ একসাথে খাওয়ার অভ্যাস। এতে শরীরের মেটাবোলিজমের হার বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে ডায়বেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভবনাও কমে যায় বলে জানাচ্ছে নিউট্রিশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা। এছাড়া খাদ্য উপাদান দুইটি একসাথে খাওয়ার ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ, ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন: কেন খাবেন কাঠবাদাম?

আরও পড়ুন: কাঁচা খাওয়া যাবে না যে খাবারগুলো

   

ঈদুল আজহায় গোশত সংরক্ষণ করবেন যেভাবে



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কাঁচা মাংস / ছবি: সংগৃহীত

কাঁচা মাংস / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ মানেই আনন্দ এবং উচ্ছ্বাস। তার সাথে নতুন পোশাক-জুতা, আর নানা পদের খাওয়া-দাওয়া। কোরবানির ঈদে খাওয়া দাওয়ার পাট টা একটু বেশি ভারী থাকে। কারণ, ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা সুন্নত, যা প্রতিটি মুসলমানকেই করার জন্য নির্দেশ দেওয়া আছে। তাই গরু, ভেড়া. ছাগলসহ নানান পশু কোরবানি করার প্রচলন রয়েছে। যে প্রাণীই জবাহ করা হোক না কেন, দেখা যায় প্রত্যেকের ঘরেই রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়ার পরও অনেক পরিমাণে মাংস রয়ে যায়। এই মাংসগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

পশুর মাংসে সাধারণত আর্দ্রতার পরিমাণ শতকরা ৭৫ ভাগের মতো থাকে। পানি হল অণুজীবের প্রধান প্রজনন স্থান। মাংসে পানি জমে থাকলে দ্রুত পচতে শুরু করে অণুজীবের ক্রিয়ার ফলেই। তাই মাংস সংরক্ষণ করতে এদের থেকে পানি অপসারণ করা দরকার।

মাংস বিভিন্ন ভাবে সংরক্ষণ করা যায়। যেমন চুলায় সেকে পানি শুকিয়ে এবং সেটি ফ্রিজে হিমায়িত করে রাখতে পারেন। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে এই কৌশল অবলম্বন করে নিরাপত্তার মান পূরণ করা হলে মাংস দীর্ঘদিনের জন্য মাংস সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

তাছাড়া রোদে শুকিয়েও অনেকে মাংস সংরক্ষণ করে। তবে এইসময় মাংসে মাছি, পোকামাকড় বা ধুলাবালি পরতে পারে। এসব অস্বাস্থ্যকর দিক থেকে মাংস সুরক্ষিত করে মাংস শুকাতে হবে। পাতলা একটা কাপড় দিয়ে মাংস পোকা ও ধূলা থেকে রক্ষা করা যায়। তিন বা চার ঘণ্টা করে কড়া রোদে শুকাতে দিন। এতে পুরো মাংসের উপরে প্রোটিনের আবরণ তৈরি হয়, আর্দ্রতা শুকিয়ে যায় এবং মাংস দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

কাঁচা গোশত

অ্যাসিড বা অম্লজাতীয় পদার্থে জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। তাই মাংস রোদে শুকানোর আগে লবণ, লেবুর রস (সাইট্রাস এসিড) বা ভিনেগার ছিটিয়ে দিন। সাইট্রাস এসিড বা লেবুর রস দিয়ে শুকানো মাংস আয়রনের ঘাটতি আছে যে ব্যক্তিদের, তাদের জন্য বেশি উপযুক্ত।

এখন যেহেতু বর্ষাকাল, যেকোনো সময় বৃষ্টি হতে পারে বা আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে সূর্যের তাপ পর্যাপ্ত না পাওয়ায় বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। মাংসগুলো কেটে তার উপর লবণ ছড়িয়ে দিন এবং ওভেনে বা চুলায় কিছুক্ষণ গরম করুন।

যদিও দীর্ঘ সময়ের জন্য মাংস সংরক্ষণের জন্য ডিপফ্রিজে রাখা সবচেয়ে  নিরাপদ উপায়। কারণ বরফ অবস্থায় জীবাণুর বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায়। ডায়েটিশিয়ানদের মতে ফ্রিজের মাংস তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ এবং ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি ফ্রিজার ঘনঘন খোলা না হয় বা দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং-এর সমস্যা না হয়, তাহলে প্রায় ৬ মাস পরও সংরক্ষিত করা মাংস ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোরবানির মাংস খেয়ে শেষ করা উচিত।

মাংস ফ্রিজে রাখার ক্ষেত্রে ছোট প্লাস্টিকের পাত্র এবং নিউজপেপার ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। কারণ খবরের কাগজে ব্যবহৃত প্রিন্টের কালিতে সীসা থাকে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তার বিকল্প হিসেবে বাটার পেপারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: ফুড সাইন্স ইউনিভার্স

 

;

সহজেই রেঁধে নিন অসাধারণ স্বাদের বিফ কারি!



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিফ কারি / ছবি: বার্তা২৪

বিফ কারি / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। ঘরে ঘরে রান্না হবে, কুরবানির মাংস। সাধারণ কিছু মশলা দিয়ে অসাধারণ পদ্ধতিতে গরুর মাংস রান্না শিখে নিন!  

রোস্টেড মশলা-

১. টমেটো কুচি: ৪ টি

২. কাজু: ১৫-২০ টি

৩. লবঙ্গ: ৬-৭ টি

৪. শুকনো মরিচ: ৯-১০ টি

৫. দারচিনি: ৪ টুকরা

৬. এলাচ: ৮-১০

প্রথমে টমেটো বাদে বাকি সব মশলা একটি শুকনো কড়াই বা ফ্রাইয়িং প্যানে নিতে হবে।  চুলায় কম আঁচে ২-৩ মিনিট রোস্ট করে নিতে হবে। এগুলো ঠান্ডা করে নিয়ে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। মশলাগুলো ভালো করে গুড়ো হলে তার মধ্যে কুচি করা টমেটো দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এই মশলার মধে্য আধা কাপ টক দই মিশিয়ে পেস্ট একপাশে রেস্টে রেখে দিতে হবে।

 

মূল উপকরণ:

১. গরুর মাংস: ২ কেজি (খাসির মাংসের ক্ষেত্রেও পরিমাণ ও পদ্ধতি একই)  

২. আলু বড় আকারে কেটে নেওয়া: ১/২ কেজি

৩. তেল: ১/৪ কাপ

৪. ঘি: ২ টেবিল চামচ

৫. ছোট এলাচ: ৬ টি

৬. দারচিনি: ২ টি

৭. স্টার মশলা: আস্ত ১ টি

৮. বড় এলাচ: ২ টি

৯. কালো গোরমরিচ: ৭-৮ টি

১০. তেজপাতা: ২ টি

১১. হলুদ গুড়া: ১ চা চামচ

১২. কাশ্মেরী মরিচ গুড়া: ১ টেবিল চামচ

১৩. গুড়া মরিচ: ১/২ টেবিল চামচ

১৪. ধনিয়া গুড়া: ১/২ টেবিল চামচ

১৫. জিরা গুড়া: ১ টেবিল চামচ

১৬. আদা-রসুন বাটা: ৩ টেবিল চামচ

১৭. পেঁয়াজ বাটা: ২ টেবিল চামচ

১৮. লবণ: স্বাদমতো

১৯. পেয়াজ বেরেস্তা: ১/৪ কাপ

২০. গরম পানি: পরিমাণমতো

করণীয়-

১. প্রথমে একটি বড় কড়াই চুলায় দিয়ে তাতে  তেল আর ঘি নিতে হবে। এরপর আলুগুলো দিয়ে হালকা বাদামি রঙ করে ভেজে তুলে নিতে হবে। এরপর ভাজা হলে আলুগুলো তুলে একপাশে রেখে দিতে হবে।

২.এরপর সেই তেলে একে একে ছোট এলাচ, দারচিনি, স্টার মশলা, বড় এলাচ, কালো গোরমরিচ, তেজপাতা এসব দিয়ে হালকা ভাজা করে নিতে হবে। ভাজা হলে তাতে পানি ঝরানো মাংসগুলো দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভালো করে ভেজে নিতে হবে।

৩. মাংস থেকে বের হওয়া পানি টেনে বাদামি রঙ হয়ে এলে আদা, রসুন এবং পেঁয়াজ বাটা দিতে হবে। বাটা মশলাগুলো ভালো করে কষিয়ে মাংসে মিশিয়ে নিতে হবে। অনবরত নেড়ে কষিয়ে নিতে হবে।

৪. এরপর বাটা মশলা ভাজা ভাজা হলে চুলার আঁচ কমিয়ে নিতে হবে। এই পর্যায়ে একে একে গুড়া মশলাগুলো দিতে হবে। ভালো করে মিশিয়ে মশলা ভাজা ভাজা করে নিতে হবে।

৫. মিডিয়াম আঁচে তেল ভেসে ওঠা অবধি কষাতে হবে। এই পর্যায়ে টক দই মেশানো পেস্ট করা মশলা কড়াইয়ের মাংসে মিশিয়ে দিন। ভাল করে কষাতে থাকুন।

৬. মাংস কষানো হলে তাতে ভাজা আলুগুলো দিয়ে দিন। আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। এই পর্যায়ে পেঁয়াজের বেরেস্তা মিশিয়ে নিন।

৭. মাংস কষানো যত ভালো হয়,  রান্না তত ভালো হয়। এখন গরম পানি ঢেলে, ঢেকে হাইহিটে জ্বাল করতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আঁচ মিডিয়াম করে ১৫ মিনিট জ্বাল করতে হবে। এরপর হালকা আঁচে জ্বাল করতে থাকুন। ঝোল টেনে এলে নামিয়ে নিন।

গরম গরম বিফ কারি পরিবেশন করুন ভাত, পোলাও, রুটি বা পরোটা দিয়ে।

;

ঈদ-উল-আজহা: কুরবানির পশুর প্রতি করণীয়



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কুরবানির পশু / ছবি: সংগৃহীত

কুরবানির পশু / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আর মাত্র দু’দিনের অপেক্ষা। তারপরই মুমিনদের আনন্দের ধারায় বয়ে আসবে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এবছরের দ্বিতীয় তথা শেষ ঈদের আমেজে মশগুল চারদিক। কসাই বুকিংয়ে যেমন লম্বা লাইন, তেমন গরুর হাটে উপচে পড়া ভীড়। সাধ্যের মধ্যে ছোট বা বড় গরু, মহিষ, ছাগল, ভ্যাঁড়া কিনে বাড়ি ফিরছে সকলে। তবে বাড়ি নিয়ে ঈদের বাকি যে ক’দিন আছে, এই কিছুদিন কুরবানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে কেনা পশু কিভাবে রাখবেন!

শুনলে আশ্চর্যজনক মনে হলেও আসলে অনেকে কুরবানি দেওয়া গরুর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারটি সঠিকভাবে জানেন না। অথবা অনেকে জেনেও পশুদের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। আমরা সেই কুরবানির ঈদের সূত্রপাতের গল্পই ভুলে যাই। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আঃ) আল্লাহর জন্য ত্যাগ করতে ইচ্ছুক ছিলেন। নিজ সন্তানের পরিবর্তে পশু কুরবানি করার নিয়ম হয়েছে। তাই পশুদের প্রতি সন্তানস্নেহ থাকা প্রয়োজন। জেনে নিই, কুরবানির আগে পশুদের যত্নে ব্যাপারে যেসব জিনিস মনে রাখবেন-

১. কুরবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলে প্রাণীদের দুর্ভোগ বেড়ে যেতে দেখা যায়। এর প্রধান কারণ হলো বিশ্বব্যাপী মাংসের অতিরিক্ত চাহিদা। যতটা প্রয়োজন ততটুকু পশু কুরবানি করাই শ্রেয়। সামর্থ্য আছে বলে অতিরিক্ত খরচ করা নিরর্থক। এই ব্যাপারে ধর্মীয় নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। ইসলামের মৌলিক নীতি অনুসরণ করে চললে পশুদের দুর্ভোগ হ্রাস পাবে, আবার মানুষের শারীরিক সমস্যার ঝুঁকিও কমবে।

২. অনেক মুসলমান জবাই করার একটি সাধারণ নিয়ম জানেন না। কখনোই একটি পশুর সামনে অন্য একটি পশুর প্রাণ নেওয়া উচিত নয়। ইসলামে একটি পশুকে অন্য পশুর সামনে জবাই করার অনুমতি নেই, যা ঈদুল আজহার সময়েও প্রযোজ্য। তবে দুঃখজনকভাবে সামান্য সংখ্যক মুসলমানই এই নীতির ক্ষেত্রে সচেতনতা প্রকাশ করেন।

কুরবানির পশু / ছবি: সংগৃহীত

৩. মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, এক নারী তার কাছে রাখা একটি বিড়ালের প্রতি আচরণের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিলেন। বিড়ালটিকে যখন তিনি আটকে রেখেছিলেন, তখন ঠিকমতো খাবার খাওয়াননি। বিড়ালটিকে মুক্ত করে দিলেও সে নিজে শিকার করে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারতো। তবে তা হয়নি, কারণ নারীটি বিড়ালটিকে আটকে রেখেছিল। এই গল্পটির পাঠ হলো আপনার কাছে থাকা পোষা প্রাণীর পর্যাপ্ত যত্ন নিন। তা একান্ত সম্ভব না হলে, তাদের মুক্ত করে দিন।

৪. ধর্মীয় মতে নির্দেশনা আছে, পশুর জবাই করার সময় তার কষ্ট যেন কম হয় তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মজা বা দুষ্টুমি করেও কোনো প্রাণীর প্রতি কঠোর ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।

তথ্যসূত্র: হিডেন পার্লস

;

কেন রক্ত দিবেন?



কাজী ইফতেখারুল আলম তারেক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানব দেহের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রক্ত। মানুষকে ভালোবেসে যত কাজ করা যায়, তার অন্যতম হলো রক্তদান। নেলসন ম্যান্ডেলা বলেন, রক্তদান আমাদের সমাজের একটি মহান জীবন্ত সংস্থা গঠন করে, এটি একটি আদর্শ মানবিক অবদান। স্বেচ্ছা রক্তদাতারা রক্তবীর। জাতীয় বীর তারাই যারা নিজেদের রক্ত অন্যদের জন্য দান করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয় মানুষকেই। রক্তদান নিঃসন্দেহে মহৎ ও মানবিক। তবে এর সাথে নানান জটিল দুরারোগ্য ব্যাধী থেকে বাঁচার উপায়ও হলো নিয়মিত রক্তদান।

আগামী ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। ডব্লিউএইচও এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে, 20 years of celebrating giving: thank you blood donors! সহজ বাংলা করলে দাঁড়ায়- ‘দিবস উদযাপনের ২০ বছর: ধন্যবাদ হে রক্তদাতা!’।

যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এই দিবসের উদ্দেশ্য।

১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই দিবস পালনের জন্য তাগিদ দিয়ে আসছে।

প্রতিবছর ৮ কোটি ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান হয়, অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া এখনো বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের রক্তের চাহিদা হলে নির্ভর করতে হয় নিজের পরিবারের সদস্য বা নিজের বন্ধুদের রক্তদানের ওপর, আর অনেক দেশে পেশাদারি রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে রক্ত দান করে আসছে রোগীদের। বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম।

স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে, এসব অজানা বীরের উদ্দেশে, উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের বিশ্ব রক্তদান দিবস। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। এদিন জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল লান্ডষ্টাইনারের। এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ ‘এ, বি, ও,এবি’। রক্তদান মহৎ দান। রক্তদান করলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। এমনিতেই রক্ত কণিকা নির্দিষ্ট সময় পর নষ্ট হয়ে যায়। তাই রক্ত দান করুন, রোগীর প্রাণ বাঁচান। এটাই মূলত প্রকৃত সেবা।

দাতা বা রক্তগ্রহীতাকে কোনো রকম ক্ষতির আশঙ্কায় না ফেলে রক্ত সংগ্রহ ও বিতরণসহ ৫টি রক্তবাহিত ঘাতক রোগের জীবাণু বাধ্যতামূলকভাবে স্ক্রিনিং করাই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনার প্রথম ধাপ। ডব্লিউএইচওর নিয়মানুযায়ী শতভাগ স্বেচ্ছারক্তদাতাদের রক্ত আহরণ, সংগৃহীত সব রক্তের বাধ্যতামূলক টিটিআই স্ক্রিনিং ও রক্তের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণই নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের মূল উদ্দেশ্য। কম ঝুঁকিপূর্ণ রক্তদাতা থেকে রক্ত সংগ্রহ করে স্ক্রিনিং পরীক্ষা বা কম্পোনেন্টে বিযুক্তকরণের মাধ্যমে রক্ত বা উপাদান

পরিসঞ্চালন করাকে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বলা হয়। নিরাপদ রক্তদানে রক্তদাতার কোনো ক্ষতি হয় না। রক্ত গ্রহণ করে রক্তগ্রহীতার দেহে তাৎক্ষণিক বা দেরিতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না বা গ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না সেটাই নিরাপদ রক্ত বা রক্ত উপাদান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিসিটি ইউনিটের মতে, নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচির ৪টি লক্ষ্য রয়েছে। ১. নিরাপদ রক্ত সংস্থান ২. নিরাপদ রক্ত সহজলভ্য, ৩. নিরাপদ রক্ত সংস্থায় পাওয়া এবং ৪. সমন্বিত ও যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।

নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচির ৩টি কৌশলের মধ্যে রয়েছে ১. শতভাগ স্বেচ্ছা রক্তদানে রক্ত সংগ্রহ করা, ২. সংগৃহীত রক্তের সব স্ক্রিনিং নিশ্চিতভাবে করা এবং ৩. উপাদানভিত্তিক যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।

রক্তদানের নানামুখী উপকারিতা: রক্তদানের প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো একজনের দানকৃত রক্ত আরেকজন মানুষের জীবন বাঁচাবে। রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী দিক। রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়

এবং রক্তদানের ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকার জন্ম হয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। বছরে ৩ বার রক্তদান আপনার শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলার সাথে সাথে নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য রক্তদান করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেহে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়।

আরেক গবেষণায় দেখা যায়, যারা বছরে দুই বার রক্ত দেয়, অন্যদের তুলনায় তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পরিলক্ষিত হয়েছে। চার বছর ধরে ১২০০ লোকের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়েছিলো।

নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে নিজের শরীরে বড় কোনো রোগ আছে কিনা তা বিনা খরচে জানা যায়। যেমন : হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, এইচআইভি (এইডস) ইত্যাদি। প্রতি পাইন্ট (এক গ্যালনের আট ভাগের এক ভাগ) রক্ত দিলে ৬৫০ ক্যালরি করে শক্তি খরচ হয়। অর্থাৎ ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।রক্তদান উচ্চরক্তচাপ কমায়,মানুষ এবং সমাজের

উপকারের স্বার্থে রক্তদান অন্যতম কর্তব্য। রক্তদানের মাধ্যমে নিজের শরীর ঠিক থাকে এবং অন্যের জীবন বাঁচে। রক্তদানে নানারকম শারীরিক লাভ হয়। মেরুমজ্জার রিজুভিনেশন বা স্টিমুলেশন, হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমা, বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া থমকে যাওয়া।

রক্তদানের সাথে হৃদরোগ ঝুঁকি কমানো নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন একদল গবেষক। তারা ২০ বছর ধরে নির্দিষ্ট রক্তদাতাদের অবজার্ভ করেন। এই পরীক্ষায় হৃদরোগের চেয়েও ক্যান্সারের ফলাফল দেখে তারা বেশি বিস্মিত হন। গবেষণায় দেখা যায়, রক্তদাতাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩৭% পর্যন্ত নেমে গেছে। আর যাদের ক্যান্সার হয়েছে, তাদের মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে কম। এই ফলাফলে বিস্ময় প্রকাশ করে ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট জার্নাল (Journal of the National Cancer Institute)। এক রিপোর্টে তারা বলেন, “results almost seem to be too good to be true.”. এ থেকে তারা উপসংহার

টানেন যে, ৬ মাসের মধ্যে শুধু একবার রক্ত দান করলেই ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে আসে। স্বেচ্ছায় রক্তদানের পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের নির্ভরশীলতা ও রক্ত নিয়ে ব্যবসা কমানো, ঘাতক রোগের বিস্তার কমানোসহ, সামাজিক বন্ধন বাড়েস্বর্গীয় আনন্দের অনুভূতি উপভোগ করা যায় রক্তদানের মাধ্যমে। রক্তদানের অর্থনৈতিক লাভও রয়েছে রক্তদানে। নিচখরচায় চেকআপ, পরামর্শ বা চিকিৎসা প্রাপ্তির সুযোগ, নিয়মিত রক্তদান ওষুধ ছাড়া চিকিৎসা পদ্ধতি। আর এই পুরো প্রক্রিয়া আসলে শরীরের সার্বিক সুস্থতা, প্রাণবন্ততা আর কর্মক্ষমতাকেই বাড়িয়ে দেয়। তবে রক্তদানের এ উপকারগুলো আসলে তারাই পাবেন যারা নিয়মিত রক্তদান করেন।

রক্ত দেয়া কেন প্রয়োজন?

দুর্ঘটনায় আহত, ক্যান্সার বা অন্য কোন জটিল রোগে আক্রান্তদের জন্য, অস্ত্রোপচার কিংবা সন্তান প্রসব অথবা থ্যালাসেমিয়ার মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়।

দেশে বছরে আট থেকে নয় লাখ ব্যাগ রক্তের চাহিদা থাকলেও রক্ত সংগ্রহ হয় ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যাগ। তবে বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা এখনো নগণ্য। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বছরে আট থেকে নয় লাখ ব্যাগ রক্তের চাহিদা থাকলেও রক্ত সংগ্রহ হয় ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যাগ। ঘাটতি থাকে তিন লাখ ব্যাগের বেশি।

এছাড়া সংগ্রহকৃত রক্তের মাত্র ৩০ শতাংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে। নিজের পরিবারের সদস্য বা পরিচিতজন না হলে এখনো বেশিরভাগ মানুষ রক্তের জন্য নির্ভর করেন পেশাদার রক্তদাতার ওপর। রক্তের অভাবের কারণে প্রতিবছর বহু রোগীর প্রাণ সংকটের মুখ পড়ে। এক ব্যাগ রক্ত দিতে সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট। এই অল্প সময়ে চাইলেই একজনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ভোগান্তি বেশি

থ্যালাসেমিয়া একটি জন্মগত রক্তের রোগ। মা-বাবার মধ্যে কেউ বা দুজনেই থ্যালাসেমিয়া রোগী বা এ রোগের বাহক হলে সন্তান এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এর মানে প্রতিদিন ২০টিরও বেশি শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই শিশুদের কেবলমাত্র বেঁচে থাকার জন্যই তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রন অপসারণ করতে মাসিক রক্ত সঞ্চালন এবং চিলেশন থেরাপির প্রয়োজন হয়।

নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ানোয় বর্তমানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগী পর্যাপ্ত চিকিৎসা পান না।

থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা কী?

মেজর থ্যালাসেমিয়ার রোগীকে নিয়মিত বিরতিতে রক্ত দিতে হয়। তা না হলে তাকে বাঁচানো মুশকিল। এর সঙ্গে বারবার লোহিত কণিকা ভেঙে যাওয়ার কারণে এবং বারবার রক্ত দেওয়ার জন্য এদের শরীরে অতিরিক্ত আয়রন বা লৌহ জমে যায়। অতিরিক্ত আয়রন বিভিন্ন অঙ্গে বিশেষ করে গ্রন্থিগুলোতে জমে গেলে সেই গ্রন্থির কার্যকারিতা নষ্ট হয়। এজন্য আয়রনযুক্ত খাবার বা আয়রন বড়ি এড়িয়ে চলা দরকার। প্রয়োজনে নিয়মিত রক্ত থেকে আয়রন নিষ্কাশন করার দরকার পড়ে। অনেক সময় প্লীহা কেটে ফেলে দিতে হয়। তবে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট হলো এর নিরাময়ে একমাত্র চিকিৎসা। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ সম্ভব। মাইনর থ্যালাসেমিয়া বাহকদের অনেকেই এই সমস্যার উপস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। ফলে দুজন আক্রান্ত জিনের অধিকারী বা দুজন বাহকের মধ্যে বিয়ে হলে তাঁদের সন্তান মারাত্মক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।

মৃদু মাত্রার রক্তস্বল্পতা হলেও অকারণে আয়রন বড়ি না খেয়ে রক্তস্বল্পতার কারণ খুঁজে দেখা দরকার। দম্পতির কেউ বাহক হলে গর্ভধারণের আগেই কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায়। দুজনেই বাহক হলে যথাযথ কাউন্সেলিংয়ের দরকার।

;