বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূলে মাল্টি সেক্টর পলিসি ডায়ালগ

  • লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: মাল্টি সেক্টর পলিসি ডায়ালগে অংশ নেওয়া অতিথিবৃন্দ।

ছবি: মাল্টি সেক্টর পলিসি ডায়ালগে অংশ নেওয়া অতিথিবৃন্দ।

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি কর্তৃক, ইউএসএআইডি এবং চ্যালেঞ্জ টিবি বাংলাদেশ (সিটিবি) প্রজেক্টের সহযোগিতায়, জাতীয় পর্যায়ের একটি মাল্টি সেক্টর পলিসি ডায়ালগ এর আয়োজন করা হয় গতকাল রোববার (২৪ মার্চ)।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ঘোষিত প্রতিশ্রুতিসমূহের পর্যালোচনার জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব, নীতিনির্ধারকবৃন্দ, বিভিন্ন সহযোগী সংস্থা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সহ শতাধিক অংশগ্রহণকারী উক্ত সংলাপে অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার বৈশ্বিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে একটি শক্তিশালী বক্তব্য নিয়ে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উদ্যাপন করে থাকে। এ বছরের বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য “It's Time” এর সাথে মিল রেখে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) কর্তৃক বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস ২০১৯ এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “It's time to end TB in Bangladesh” যার বাংলা অনুবাদ “এখনই সময় অঙ্গীকার করার, যক্ষ্মা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার”।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/25/1553506113775.jpg

বিজ্ঞাপন

২৪ মার্চ ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত পলিসি ডায়ালগটি ছিল জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি সহ বিভিন্নক্ষেত্রে নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মত জাতীয় পর্যায়ের একটি নীতিনির্ধারণী সংলাপ। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রফেসর (ডাঃ) মোঃ শামিউল ইসলাম, পরিচালক এমবিডিসি ও লাইন ডিরেক্টর টিবি-এল ও এএসপি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সকল অংশগ্রহনকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং UN HLM এর লক্ষ্য অর্জণে সারাদেশে যক্ষ্মার সেবা কার্যক্রমের প্রতি দৃষ্টি প্রদান করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি চলমান কর্মসূচির নীতিমালা ও অগ্রাধিকার, যক্ষ্মা মোকাবেলায় বিগত দশকগুলোতে অর্জিত সাফল্য ও এখন পর্যন্ত বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ তুলে ধরেন।

বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য হিসেবে ডঃ শামসুল অলম, সদস্য (সিনিয়র সচিব), জিইডি, পরিকল্পনা কমিশন, মিঃ আর্ল আর মিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত, অধ্যাপক ডাঃ খান আবুল কালাম আজাদ, প্রিন্সিপাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ডিন, মেডিকেল অনুষদ, প্রফেসর ডা: ইকবাল অর্সলান, প্রাক্তন ডীন ও মহাসচিব, বিএমএ এবং ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রমুখ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গঠনমূলক ও মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/25/1553506129641.jpg

আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিলো বিদ্যমান সম্পদসমূহের সংহত ব্যবহার ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি; শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন; ব্যক্তিখাত ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধীবৃন্দকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্তকরন; যক্ষ্মা মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ; যক্ষ্মা খুঁজে বের করা, চিকিৎসা প্রদান ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে সুশীল সমাজের আরো স্বপ্রণোদিত অংশগ্রহণ ইত্যাদি।

বর্তমান যক্ষ্মা রোগ পরিস্থিতিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রতিশ্রুত লক্ষ্যমাত্রা অর্জণে রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা এবং জোরালো ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনিয়োগ প্রয়োজন। উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ যক্ষ্মা মোকাবেলায় সম্ভাব্য সুযোগ অনুসন্ধান ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের বিষয়ে একমত হন। সংলাপে অংশগ্রহণকারীবৃন্দ যক্ষ্মারোগ মোকাবেলায় নাগরিক সমাজ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের, বিশেষ করে মার্কিন সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/25/1553506148646.jpg

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী, ডাঃ মুরাদ হাসান, এম পি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়, উক্ত নীতিনির্ধারণী সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের যক্ষ্মা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ে সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশের চলমান যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচিকে সমর্থন প্রদান ও শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখার জন্য ইউএসএআইডি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি সারাদেশে যক্ষ্মা রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা সম্প্রসারনের জন্য জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, স্থানীয় সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ সরকার যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধের জন্য আরো জোরদার উদ্যোগ গ্রহণে ও যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরীতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ'।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/25/1553506231862.jpg

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মি. আর্ল আর মিলার ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, 'আমেরিকান সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশে বিগত দশ বছরেও যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এখানে এবং সারা বিশ্বে সম্মিলিত লক্ষ অর্জনে আমেরিকান সরকার সকল দেশ এবং অংশীদারদের সাথে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ'।

সংলাপ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে জনাব আসাদুল ইসলাম, সম্মানিত সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, প্রফেসর (ডাঃ) মোঃ শামিউল ইসলাম, পরিচালক এমবিডিসি ও লাইন ডিরেক্টর টিবি-এল ও এএসপি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জনাব জি এম সালেহ উদ্দিন, সম্মানিত সচিব, মেডিকেল এডুকেশন ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডাঃ মুস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সভাপতি, বাংলাদেশ মেডিকেল এসাসিয়েশন (বিএমএ), ডাঃ এডউইন সি সালভাদর, ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বাংলাদেশ, মি. ডেরিক ব্রাউন, মিশন ডিরেক্টর, ইউএসএআইডি বাংলাদেশ, ডাঃ পুষ্পিতা সামিনা, ক্লিনিক্যাল সার্ভিস লিড, অফিস অব পপুলেশন, হেল্থ, নিউট্রিশন এন্ড এডুকেশন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশ, ডাঃ অস্কার কর্ডন, কান্ট্রি প্রজেক্ট ডিরেক্টর, চ্যালেঞ্জ টিবি প্রজেক্ট, বাংলাদেশ, এমএসএইচ, আইআরডি এবং অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।