আবেগ ও অনুভূতিকে রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নেতিবাচক আবেগ ও অনুভূতি উভয়কেই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে

নেতিবাচক আবেগ ও অনুভূতি উভয়কেই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে

আবেগ ও অনুভূতি খাপছাড়াই হয়।

কখন কোথায় কীভাবে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে তার কোন সুনির্দিষ্ট সময়সূচী নেই। বহিঃপ্রকাশ তো বটেই, আবেগ ও অনুভূতির জন্যে জীবনের সিদ্ধান্তেই গোলযোগ বেঁধে যায়। প্রতিদিন আমরা যতগুলো ছোট থেকে বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, তার সিংহভাগই হয়ে থাকে নিজেদের আবেগের উপর ভরসা করে। এই আবেগ, অনুভূতি বা ইমোশন আমাদের সময়, কাজ, চিন্তা ও কোন ঘটনা বোঝার ধরণকে প্রতিফলিত করে। এই কারণেই মানুষ ভেদে প্রত্যেকের চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন হয়, প্রত্যেককের মাঝে থাকে স্বকীয়তা।

তবে এই অনুভূতি সময়ে সময়ে বেশ ভয়ানক রূপ ধারণ করে। যার ফল স্বরূপ দুঃখ, ক্ষোভ, রাগের মতো নেতিবাচক আবেগের প্রকাশ ঘটে। এই আবেগ ও অনুভূতিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে সমস্যায় পড়তে হয় নিজেকেই। নিজের অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহজ কিছু অভ্যাস কাজে দেয়।

বিজ্ঞাপন

নিজের জন্য কিছুটা সময় নেওয়া

যেকোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে অনুভূতির প্রকাশ না করে নিজেকে কিছুটা সময় দিতে হবে। ক্ষোভের বশে সে সময়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার বদলে নিজেকে কিছুটা সময় দিতে হবে। এ সময়ে হৃদস্পন্দন বেশি থাকে, তাই দাঁড়িয়ে থাকলে কোন স্থানে বসে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে শরীর ও পেশীকে শিথিল রাখার জন্য। শরীর রিল্যাক্স হলে অনুভূতিতেও কিছুটা লাগাম আসবে। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে না।

সাহায্যের খোঁজ করা

অতিরিক্ত মন খারাপ হলে কিংবা রাগের বশে আমরা এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি না কাজ করে ফেলি, যা করা মোটেও উচিত নয়। কারণ এ সময়ে অনুভূতি আমাদের বিবেচনা বোধকে কাবু করে ফেলে। এমন সময় যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে বিশ্বস্ত ও কাছের মানুষের সাথে কথা বলতে হবে, আলোচনা করতে হবে। সেটা হতে পারে পরিবারের মানুষ, সহকর্মী বা বন্ধু। তারা এ সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

বিজ্ঞাপন

সুনির্দিষ্ট উপায় খুঁজে বের করা

অনেকেরই রাগ, অভিমান, মন খারাপের মতো বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে থেকে যায়। সেক্ষেত্রে নিজের জন্য সঠিক ও যুতসই কোন কাজ খুঁজে বের করতে হবে, যা মনকে শান্ত রাখতে ও একমুখী রাখতে কাজ করবে। সেটা হতে পারে বই পড়া, গান শোনা, রান্না করা, ছবি আঁকা কিংবা শরীরচর্চা করা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/27/1564205127810.jpg

চিন্তা করতে হবে অন্যভাবে

ধরুন বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কোন একজন বন্ধু আপনাকে নিয়ে কৌতুক করলো। যার দরুন দারুণ অপমানিত বোধ করে তাৎক্ষণিকভাবে আপনি প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেললেন। এতে করে খুব বাজে সিন ক্রিয়েট হলো ও বন্ধুত্বও ভেঙে গেলো। এবারে একটু সময় নিয়ে পু্রো ঘটনাটি ভাবার চেষ্টা করুন। নিজেকে সে মুহূর্তে সংযত রেখে অন্য সময় বন্ধুকে বুঝিয়ে বললে সে ঠিকই বুঝতো। যদি নাও বুঝতো আপনি নিজের মতো করে সরে আসতে পারতেন। কোন ঝামেলাই হতো না। তাই এমন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ে চেষ্টা করতে হবে ঘটনার প্রভাবচিত্র নিয়ে ভাবার। এতে করে হটাত দেখা দেওয়া অনুভূতির প্রাবল্যকে রোধ করা সম্ভব হবে।

ক্ষমা করা ও ভুলে যাওয়া

আমাদের বেশিরভাগ আবেগ ও অনুভূতির কারণ আমাদের খুব কাছের ও প্রিয় মানুষজন। দেখা যায় তাদের কাছ থেকেই বেশি কষ্ট পাওয়া হয়। সে কারণে মনে মধ্যে ক্ষোভ বা কষ্ট জমিয়ে না রেখে ভুলে যাওয়াই হবে সবচেয়ে ভালো। যার কথায় বা কাজে কষ্ট পেয়েছেন, তাকে মন থেকে ক্ষমা করে দিলে নেতিবাচক অনুভূতিগুলো নিস্তেজ হয়ে যাবে। নিজেকে ইতিবাচক অনুভূতির দিকে নিয়ে যেতে পারলে উপকার হবে নিজেরই।

আরও পড়ুন: নিজের সাথে নিজের কথা বলার অভ্যাসটি কি ভালো?

আরও পড়ুন: পুষ্টির অভাবে বিষণ্ণতা দেখা দেয় কি?