ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট/ লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কাজের ব্যস্ততায় কোন অবসরই মেলে না যেন।

কাজের ব্যস্ততায় কোন অবসরই মেলে না যেন।

নিজের লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে প্রতিনিয়ত ছুটে চলাই হলো জীবন। গতিশীল সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ও নিজেকে মানিয়ে নিয়ে একই বেগে ছুটতে না পারলে পিছিয়ে যেতে হয় অনেক ক্ষেত্রেই। নানাবিধ কাজের চাপ ও পরিকল্পনার ভিড়ে নিজের জন্য ও পরিবারের জন্য সময় বের করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। তখনই হয়তো মনের অজান্তে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলসের ‘ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর’ গানটির কথা চলে আসে মাথায়।

এতো ব্যস্ততাপূর্ণ সময়ের ষোলোকলা পূর্ণ হয় রমজান মাসে। সাধারণ কাজের ব্যস্ততার পাশাপাশি অফিসের কাজ গুছিয়ে বাড়ি ফেরার তাড়া থাকে। বিপত্তি সেখানেও। বাড়ি ফিরতে চাইলেই কি সঠিক সময়ের মাঝে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়? পুরো রাস্তা জুড়ে অসহ্য জ্যাম তখন অপেক্ষা করে আছে না!

বিজ্ঞাপন

নারীদের জন্য ব্যস্ততার মাত্রাটা থাকে অনেকটা বেশী। ইফতারির জন্য বাজার করা, ইফতারি তৈরি করার মতো ব্যাপারগুলো যে তাকেই সামলাতে হয় বেশীরভাগ সময়। এতো সকল কাজের মাঝে নিজের জন্য কিছুটা সময়ও তো প্রয়োজন হয়। সেটা বিশ্রামের জন্য হোক অথবা ইবাদতের জন্য।

সত্যি কথা হলো, এতো সকল কাজের মাঝে গৎবাঁধা নিয়ম মেনে সময় বের করা অনেকটাই অসম্ভব। মানুষ ভেদে, কাজের ধরণ ভেদে ব্যস্ততার মাত্রাও ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে নিজের পাহাড়সম কাজ ও ব্যস্ততাকে সাথে নিয়েও বেশ কিছুটা সময় বের করা যায় সহজেই। এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা।

বিজ্ঞাপন

সময়কে নিজের বশে আনতে চাইলে পুরো দিনের কাজের পরিকল্পনা করে ফেলা প্রয়োজন। দিনের শুরুতেই তাই গুছিয়ে ফেলতে হবে, সারাদিনে কী কী কাজ করা প্রয়োজন। এরপর কোন কাজটি আগে ও পরে করতে হবে সেটাও গুছিয়ে নিতে হবে মনে মনে। এতে সময় বাঁচবে অনেকটা।

অনেক সময় খুব ছোট কাজের জন্যেও আমরা অনেক বেশী সময় ব্যয় করে থাকি। এমন অভ্যাসকে বিদায় জানাতে হবে। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ এবং ছোট কোন কাজের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দেওয়া মানেই সময় নষ্ট করা।

আরেকটি ব্যাপারে কিছুটা ছাড় দিলেও সময়কে নিজের আয়ত্বে আনা সম্ভব। সেটা হলো, নিজের খুঁতখুঁতে স্বভাবকে পরিহার করা। যেকোন কাজ অবশ্যই নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত ও অকারণ খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য সময় নষ্ট হয় অনেকক্ষেত্রেই।

এই খুঁতখুঁতে স্বভাবের মতোই আরো একটি প্রবণতা দেখা যায় অনেকের ভেতর। অনেকগুলো কাজ একইসাথে ও একই সময়ে করার প্রবণতা। কম সময়ে কাজ শেষ করার ইচ্ছা থেকেই মূলত এই প্রবণতা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে বেশীরভাগ সময় ফলাফল হয় হিতে বিপরিত!

একই সময়ে একাধিক কাজ করতে চাইলে, মস্তিষ্ক কোন কাজের দিকেই মনোযোগ তৈরি করতে পারে না। ফলে একটি কাজও সঠিক ও পরিপূর্ণভাবে করা হয়ে ওঠে না। তাই একই সময়ে একাধিক কাজের প্রবণতা বাদ দিতে হবে একেবারেই। সময় বাঁচাতে চাইলে কাজের গুরুত্ব বুঝে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলেই দ্রুত সময়ের মাঝে প্রতিটি কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

ছোটখাটো এই সকল পরিকল্পনার সাথে ছুটির দিনটাকে কাজে লাগাতে পারলে প্রতিদিনের জন্য বেশ খানিকটা সময় বাঁচানো সম্ভব হবে।

সেক্ষেত্রে একটি সপ্তাহের জন্য পরিকল্পনা করে ফেলতে হবে। পুরো সপ্তাহ জুড়ে অফিসের পোষাক নির্বাচন করা, অফিসের কাজ ও মিটিং এর পরিকল্পনা করা, প্রতিদিনের ইফতারির আইটেম ঠিক করা, পুরো সপ্তাহের বাজার করা, শিশু যে খাবারটি খেতে পছন্দ করে তার প্রিপারেশনের মতো সহজ কাজগুলো সেরে নেওয়া যেতে পারে ছুটির দিনে। এতে করে প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে বেশ কিছুটা সময় বাঁচানো যাবে সহজেই।