যত্নে থাকুক শিশুর দুধ দাঁত
শিশুদের প্রথম দুধ দাঁতের দেখা পাওয়ার মুহূর্তটির যেন তুলনা হয় না।
খালি মাড়িতে মুক্তার মতো ঝকঝকে ছোট দাঁতের উঁকি যেন অন্যতম আকাঙ্ক্ষিত একটি মুহূর্ত। সাধারণত ৬-৮ মাস বয়সী শিশুদের প্রথম দুধ দাঁতের দেখা পাওয়া যায় এবং ১০-১২ বছর বয়সে এই দুধ দাঁত পড়ে গিয়ে নতুন ও স্থায়ী দাঁতের জন্ম হয়।
কেন দুধ দাঁতের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন?
শিশুদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসার সাথে দুধ দাঁতের অনেক বড় ভূমিকা থাকে। তেমনিভাবে দাঁতের সুস্থতার উপরেও শিশুদের সুস্থতার অনেকটা নির্ভর করে। দুধ দাঁত স্থায়ী নয় বলে অনেক বাবা-মা এই দাঁতের যত্নের বিষয়ে খেয়াল রাখেন না। অথচ দুধ দাঁতের যত্নও স্থায়ী দাঁতের মতোই হওয়া উচিত। নতুবা দাঁতের ক্যাভিটি, দাঁত ভেঙে যাওয়াসহ ওরাল হাইজিনমূলক সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। চলুন এক নজরে জেনে নেওয়া যাক শিশুদের দুধ দাঁতের কার্যকারিতাগুলো।
খাবার খাওয়া
শিশুদের তরল খাবারের পাশাপাশি শক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরিতে দুধ দাঁত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দাঁতের সাহায্য খাবার ভালোভাবে চাবানো হয় এবং এতে করে খাদ্য পরিপাক হয় ঠিকভাবে। দেখা যায়, যে সকল শিশুদের দুধ দাঁত দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত হয়, তাদের শরীরে পুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা দেয় খাবার ঠিকভাবে গ্রহণ না করতে পারার দরুন।
সঠিক উচ্চারণে কথা বলা
শিশুদের পরিস্ফুটভাবে কথা বলার পেছনে দুধ দাঁতের ভূমিকা অনেকখানি। এক্ষেত্রে দাঁতের গঠন ও অবস্থানও অনেক জরুরি। দাঁতের পারফেক্ট সেটিংয়ের উপর নির্ভর করে শিশুদের কথা বলা ও সঠিক উচ্চারণ। দুই দাঁতের মাঝে গ্যাপ বেশি থাকলে কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়।
দাঁতের স্থান সংরক্ষণ করে
দুধ দাঁত পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত দেখা দেয়। এক্ষেত্রে দুধ দাঁত স্থায়ী দাঁতের স্থানকে পাকাপোক্ত করতে ও সংরক্ষণ করতে কাজ করে। ফলে স্থায়ী দাঁত ওঠার সময় দুধ দাঁত পড়ে যায় এবং স্থায়ী দাঁত ঠিকভাবে স্থান পেয়ে উঠতে পারে।
কীভাবে দুধ দাঁতের যত্ন নিতে হবে?
উপরোক্ত কারণগুলো থেকে খুব পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে শিশুদের দুধ দাঁত কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন তার যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এবারে জেনে নিন কীভাবে যত্ন নিলে শিশুর দুধ দাঁত সুস্থ ও সুন্দর থাকবে।
১. দুধ দাঁত দেখা দেওয়ার একদম শুরুর দিকে, যখন সঠিকভাবে দাঁতের যত্ন (দাঁত মাজা) নেওয়া শুরু করা যাবে না, তখন থেকেই হাতের আঙুলে পরিষ্কার কাপড় পেঁচিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত।
২. শিশুর এক বছর হয়ে গেলে প্রতি বেলায় দাঁত মাজার অভ্যাস অবশ্যই গড়ে তুলতে হবে। দাঁত মাজতে না চাইলেও বুঝিয়ে দাঁত মাজাতে হবে।
৩. মোটামুটি সবগুলো দুধ দাঁত উঠে গেলে দাঁতের ডাক্তারের কাছে নিয়ে দাঁত পরিষ্কার ও চেকআপ করাতে হবে।
৪. শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। এতে করে দাঁত ভালো থাকার পাশাপাশি দাঁতে কোন ধরনের সমস্যাও হবে না।
আরও পড়ুন: শিশুর সুস্বাস্থ্যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
আরও পড়ুন: শিশুদের জন্য খেলাধুলা কেন প্রয়োজন?