কাজের মাঝে ঘুমের যন্ত্রণা!
অফিসে একেকদিন এক এক রকম হয়।
কোনদিন নিজেকে খুব প্রাণবন্ত মনে হয়। হাতের সব কাজ শেষ করে ফেলা যায় সহজেই। আবার কোনদিন প্রচণ্ড ক্লান্তি ও ঘুমভাবের দরুন চোখ খুলে রাখাই কষ্টকর হয়ে যায়। বিশেষত জরুরি কোন মিটিং কিংবা প্রেজেন্টেশনের সময় যদি এমনটা হয়, তাহলে গড়মিল হয়ে যায় পুরো কাজেই।
কর্মক্ষেত্রে ড্রাউজিনেস (Drowsiness) তথা ঝিমুনিভাব, তন্দ্রাভাব বা ঘুমভাব দেখা দেওয়া সাধারণ একটি সমস্যা। মাসে বা দুই-তিন মাসে এক-দুই দিনের জন্য এমনটা হতেই পারে। কিন্তু নিয়মিত যদি এই সমস্যাটি দেখা দেওয়া শুরু হয়, তবে কাজের গতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সাথে শারীরিক সমস্যার বিষয়টিও উঠে আসে। কারণ ক্রনিক ফ্যাটিগ বা ড্রাউজিনেসের পেছনে কোন না কোন সমস্যা লুকায়িত থাকেই। সেটা হতে পারে ডায়বেটিসের সমস্যা কিংবা বিষণ্ণতা। ঘুমভাবের সমস্যাটি বেশি দেখা দিলে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত ঘুম
অফিসে ঘুমভাব দেখা দেওয়ার পেছনের প্রধান ও প্রথম কারণ থাকে ঘুমের অভাব। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ও শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমের সময় কম হলেই কাজের সময় ঘুমভাব চলে আসে। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে শরীরের পরিপূর্ণ বিশ্রাম আবশ্যিক। তাই অফিসে ঘুমভাব দেখা দিলে প্রথমেই ঘুমের সময়ের উপরে জোর দিতে হবে। ৭-৮ ঘণ্টার বিরামহীন ঘুম এই সমস্যাটিকে দূর করতে পারবে।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
অফিসে ঘুমের সমস্যা দেখা দেওয়ার পেছনে যথেষ্ট ঘুমের অভাবের সাথে পুষ্টির অভাবও সমানভাবে দায়ী থাকে। শরীর যদি কাজ করার জন্য যথেষ্ট পুষ্টিগুণ ও মিনারেল না পায় তবে কাজের বাড়তি চাপে সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়বে, শরীর কাজ করতে চাইবে না। তাই মুখরোচক খাবার নয়, প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখার আয়োজন করত হবে।
মেডিটেশন
প্রতিদিন সকালে অফিসে যাওয়ার আগে অন্তত পনের মিনিটের মেডিটেশন ঘুমভাবকে তাড়াতে কাজ করবে। এতে করে একইসাথে শরীর ও মনে প্রশান্তিভাব আসবে এবং দিনভর কাজ করা সহজ হবে।
পুদিনা পাতার ঘ্রাণ
পিপারমিন্ট লিফ বা পুদিনা পাতার চনমনে ঘ্রাণ ঘুমভাবকে তাৎক্ষণিকভাবে তাড়াতে কাজ করবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ পুদিনা পাতার চা কিংবা অফিসে কাজের ফাঁকে এই চা পানে ঘুমভাব দূর হয়ে যাবে সহজেই।
হাঁটাহাঁটি করা
একই স্থানে দীর্ঘসময় বসে থাকার ফলে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা তন্দ্রাভাব চলে আসে। অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়ে থাকে। তাই অফিসে কাজ করার মাঝে যদি ঘুমভাব কাজ করে তবে চেয়ার ছেড়ে উঠে কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করতে হবে। এতে করে ঝিমুনি বা তন্দ্রাভাব কেটে যাবে। বিশেষত যদি রোদের আলোযুক্ত স্থানে চলাফেরা করা যায় তবে বেশি ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া
যদি সকল নিয়ম মেনেও ঘুমভাব দেখা দেওয়ার সমস্যাটি তাড়ানো না যায়, তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ প্রথমেই বলা হয়েছে, সামান্য এই সমস্যাটির পেছনেও লুকায়িত থাকতে পারে অন্য কোন বড় শারীরিক সমস্যা।
আরও পড়ুন: রাগের সময় নিজেকে সামলাবেন যেভাবে
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কের বয়স কমবে শব্দ ধাঁধা সমাধানে