শ্রীমঙ্গলের সেরা চা দেশব্যাপী পৌঁছাতে ‘চা কন্যা’
শ্রীমঙ্গল: বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় পানীয় চা। দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির বিস্ময়কর চমক যেদিন থেকে আবিস্কৃত হয়েছে- তারপর থেকে আজ পর্যন্ত সারা পৃথিবীর চাপ্রেমীদের মাতিয়ে রেখেছে সে।
বাঙালির সাথেও চায়ের সখ্যতা আজকের নয়, বহু পুরোনো। কাজের ব্যস্ততায়, গল্প-আড্ডায়, বাড়ি কিংবা অফিসে অতিথির স্মার্ট আপ্যায়ন হিসেবে চা চাই-ই চাই। এর কোনো বিকল্প নেই। চুমুকে চুমুকে যেন প্রশান্তি।
তাই গত বছর (২০১৯) সালের দেশের চা শিল্পের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ।উৎপাদন করেছে ৯৬ দশমিক ০৭ মিলিয়ন কেজি (৯ কোটি ৬০ লক্ষর কিছু বেশি) চা।
বাংলাদেশে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা প্রচুর। এক চায়ের ভেতরেই রয়েছে নানা জাত, নানা দাম। সাধারণ ক্রেতারা কোনটি ভালো মানের চা, সেটা হুট করে বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে না বুঝেই যেকোন ধরনের চা কিনে ফেলেন এবং চা পান করে বুঝতে পারেন আসলে চা-টা ভালো হয়নি।
এমন প্রেক্ষাপটের অবসান ঘটাতে ‘শ্রীমঙ্গলের সেরা চা’ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সম্প্রতি ১০ মার্চ চালু হয়েছে ‘চা কন্যা’। শ্রীমঙ্গলের চায়ের বাজার থেকে উন্নতমানের চা কিনে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশব্যাপী শ্রীমঙ্গলের উন্নতমানের চাগুলো পৌঁছে দেয়া হয়।
চা কন্যার স্বত্বাধিকারী তনুশ্রী বার্তা২৪.কমকে এ ব্যাপারে বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলের চায়ের সুনাম সর্বত্র। কিন্তু দুঃখের কথা হচ্ছে অনেকেই নিম্নমানের চা অনেক দাম দিয়ে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। চাপ্রেমীরা তাদের কষ্টে উপার্জিত টাকায় যেন সর্বোচ্চ উন্নতমানের চা কিনতে পারেন তার শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমরা। অত্যন্ত সাশ্রয় মূল্যে গ্যারান্টেড চা বিক্রি করছি। ব্ল্যাক টি এবং গ্রিন টি দুটো রয়েছে আমাদের তালিকায়।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের ‘চা কন্যা’ নামক ফেসবুক আইডি কিংবা শ্রীমঙ্গলের সেরা- "চা কন্যা" নামক পেইজে চা কন্যার ৭টি ক্যাটাগরির চায়ের নাম ও মূল্যসহ বর্ণনা দেয়া রয়েছে। আগ্রহীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী চা বাছাই করে আমাদের মোবাইল ফোনে (০১৭১৯ ৪৩২ ৯৯৯) অর্ডার করে থাকেন।
এক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী চা এবং পরিমাণ নির্বাচন করে টাকা উত্তোলন চার্জসহ বিকাশ বা নগদে অগ্রিম প্রেরণ করতে হয়। টাকা পাবার পরই আমরা দ্রুত চাগুলো বুকিং করে থাকি। পরের দিনই চা ক্রেতারা হাতে পেয়ে যান। চা পান করেই দু-একজন ক্রেতা ফোন করে তাদের ভালোলাগার কথা জানান। খুব ভালো লাগে তখন। এভাবেই চলছে ‘চা কন্যা’ আমাদের কার্যক্রম।
দেশের সেরা চা ‘টি গোল্ড’ সম্পর্কে তনুশ্রী বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই চা বাংলাদেশের সেরা চা। এটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই)। এটি ‘গোল্ডেন ব্রোকেন অরেঞ্জ পিকো’ বা ‘জিবিওপি’ গ্রেডের চা। যারা ফ্লেভার (ঘ্রাণ) পছন্দ করেন আবার স্ট্রং লিকারের (কড়া রং) চা চান তাদের কাছে এ চা খুবই পছন্দের। এটি স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং কড়া লিকারযুক্ত। এই চায়ের ফ্লেভার (ঘ্রাণ) এবং টেস্ট (স্বাদ) দু’টিই চমৎকার। টিজি’র কেজি প্রতি মূল্য ৬৫০ টাকা।
বিটিআরআই গ্রিন-টি অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রিন-টি পানের উপকারিতা অনেক বেশি। ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা দূর করে, শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সহায়তা করে, ত্বকে সতেজতা আনে, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়, বার্ধক্যজনিত হাড়ক্ষয়ের পরিমাণ কমে যাওয়াসহ নানান উপকার পাওয়া যাবে এই পানীয় থেকে।
‘বিটিআরআই গ্রিন-টি’ বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ গ্রিন টি। এটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই)। গরম পানিতে এর পাতাগুলো চা গাছের পাতার মতোই মেলে যায়। উন্নতমানের ক্লোন চা গাছের শুধুমাত্র একটি কোমল কুঁড়ি উত্তোলন করা হয়। তারপর বিটিআরআই গ্রিন-টি ফ্যাক্টরির ছোট-বড় ১৬টি মেশিনের মাধ্যমে গ্রিন টি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এই চায়ের প্রতি কেজির মূল্য দু’হাজার টাকা। চা কন্যাতে ২৫০ গ্রাম প্যাকেট প্রতি ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয় বলেও জানান তিনি।
সারাদেশের চাপ্রেমীদের উন্নতমানের চা পান করানোর লক্ষ্যে কাজ করছে ‘চা কন্যা’। শুধু একবার পেইজে গিয়ে পছন্দমত অর্ডার করে চা পান করলেই বুঝতে পারবেন আমাদের চায়ের কোয়ালিটি কেমন, এমনটাই বলেন তনুশ্রী।