হৃদরোগের সঙ্গে করোনাভাইরাসের ঝুঁকিও কি কমাতে পারে ভিটামিন-ডি?
আমাদের শরীরের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় ও জরুরি পুষ্টি উপাদানের মাঝে ভিটামিন-ডি একটি, যাকে চিকিৎসকেরা ‘সানশাইন ভিটামিন’ বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। কারণ এই ভিটামিনটি বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের পাশাপাশি আরও পাওয়া যায় রোদের আলো থেকে।
তবে গত কয়েক বছর ধরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে ভিটামিন-ডি এর অভাব বা ভিটামিন-ডি ডেফিসিয়েন্সি। অপ্রতুল রোদের আলোর সংস্পর্শ এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান গ্রহণের ঘাটতি থেকে এই সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি পূরণে গ্রহণ করতে হচ্ছে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট।
অনেকেই হয়ত ভিটামিন-ডি এর অভাব কে বড় ও গুরুতর কোন সমস্যা হিসেবে দেখবেন না। কিন্তু এই একটি ভিটামিনের ঘাটতি থেকেই দেখা দিতে পারে হাড়জনিত সমস্যা, ডায়বেটিসের সম্ভাবনা এবং হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব।
আন্তর্জাতিক এক গবেষণার তথ্য থেকে গবেষকেরা জানাচ্ছেন, খাদ্যাভ্যাসে ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবারের উপস্থিতি হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। ‘জার্নাল অব হিউম্যান নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিক্স’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণাটি থেকে আরও জানান হয়, ভিটামিন-ডি তে রয়েছে হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার মত ইতিবাচক প্রভাব।
ভিটামিন-ডি হল এক ধরনের প্রোহরমন, যা হাড়ে ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য প্রয়োজনীয়। ভিটামিন-ডি এর বিভিন্ন প্রয়োজনিয়তা ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করে অন্য খাতেও তার ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করা হয়। বিশেষত বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভিটামিন-ডি এর কোন ভূমিকা আছে কিনা সেটা জানা চেষ্টা করা হয়।
ক্রস-সেকশনাল এই গবেষণা থেকে দেখা ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি হৃদরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধির সাথে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সাধারণের চাইতে অনেকখানি দুর্বল করে দেয়। যা এক্ষেত্রে অবদান রাখে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হৃদরোগের সাথে ভিটামিন-ডি এর সম্পর্ক নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয় ২০০১-২০১২ সাল পর্যন্ত। এতে অংশ নেন ১৫,১৪ জন পুরুষ ও ১৫২৮ জন নারী। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, দৈনিক পরিমিত পরিমাণ ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ লক্ষণীয়ভাবে হৃদরোগের ঝুঁকিকে কমিয়ে আনতে পারে, বিশেষত পুরুষদের মাঝে।