রোজা থাকার চমৎকার স্বাস্থ্য উপকারিতা

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অনেককেই বলতে শোনা যায়, পুরো রমজান মাস জুড়ে রোজা থাকার পর তুলনামূলক অনেকখানি ফুরফুরে ও সুস্থ বোধ করছেন। এর পেছনে কি কোন কার্যকরণ রয়েছে? রোজা থাকার ফলে দিনের সিংহভাগ সময় যেকোন ধরনের খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়। এই নিয়মটিই শরীরের জন্য বয়ে আনে বড় ধরনের বেশ কিছু উপকারিতা। যার দরুন নিজেকে আগের চাইতে সুস্থ ও প্রাণবন্ত মনে হয়।

কমায় ডায়বেটিসের ঝুঁকি

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান মতে পুরো বিশ্বে ডায়বেটিসে আক্রান্ত হয় ৪৬৩ মিলিয়ন পূর্ণবয়স্ক মানুষ, যার মাঝে ১.১ মিলিয়ন শিশু ও নবজাতক। আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়া এই রোগটির প্রধান ও প্রথম কারণ হল খাদ্যাভ্যাসে অসচেতনতা। ঠিক একইভাবে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমেই কমানো যায় ডায়বেটিসের ঝুঁকি। জার্নাল অব অ্যাপ্লাইড ফিজিওলজি জানাচ্ছে, ফাস্টিং (রোজা) রক্তে চিনির মাত্রা কমায় ও ইনস্যুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। যা ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমাতে খুবই প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী

রোগের মৃত্যুর মাঝে হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুর হার অন্যতম বেশি। এবং অধিকাংশ হৃদরোগের শুরু হয় অনিয়ন্ত্রত ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থেকে। রোজা থাকার ফলে লম্বা সময় না খেয়ে থাকা হয়। এরপর অল্প সময়ের মাঝে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে জোর দেওয়া হয় বিধায় অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা হয় না। যা রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এতে করে কমে যায় হৃদরোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও।

কমায় অক্সিডেটিভ স্ট্রেস

শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি অক্সিজেন রেডিক্যাল গড়ে ওঠার সমস্যাটিকেই বলা হচ্ছে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইম শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে অবদান রাখে। গবেষকেরা তাদের পরীক্ষা থেকে দেখেছেন, রোজা রাখা দরুন শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যানজাইম নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা ওবেসিটির সমস্যা কমাতে খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে।

বিজ্ঞাপন

ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়

শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যালোরি গ্রহণ ঠিক রেখে রোজা পালনে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে বলে দেখা গেছে বেশ কিছু পরীক্ষায়। বিশেষত নারীদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় রোজা রাখার দরুন। এছাড়া দেখা গেছে, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত না খেয়ে থাকার ফলে অটোফেজি (Autophagy) প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়, এতে করে শরীরের মৃত কোষ পরিষ্কার হয়। যা টিউমার কোষের বৃদ্ধিকে বাধা দেয় এবং রেডিও ও কেমোথেরাপিতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমাতে অবদান রাখে

ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহকে খাটো করে দেখা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ এই প্রদাহ থেকেই ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মত বড় বড় সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। রোজা থাকার ফলে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত না খেয়ে থাকা হয়, এতে করে অ্যাডিপনেকটিন (Adiponectin) নামক হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। এই হরমোনটি প্রদাহ কমাতে ভূমিকা রাখে। গবেষকের দেখেছেন, রোজা থাকার ফলে শরীরে প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি মলিকিউলস কমে আসে, যা ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে।