চলে যাওয়ার বছর শেষেও মনে থাকবেন তারা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ঘড়ি ধরে খুব সহজেই বলে দেওয়া যাবে আর কত ঘণ্টা পর শেষ হতে যাচ্ছে ২০১৯ সাল। এরপর শুরু হবে নতুন আরও এক বছর। নতুন বছরে শোবিজের কিছু মানুষের সৃষ্টি থেকে গেলেও চলতি বছরে পৃথিবীকে বিদায় বলছেন তারা। নতুন বছর শুরু করার আগে; সেসব তারকাদের স্মরণ করেছে বার্তা২৪.কম।

২০১৯ সালের শুরু থেকেই শোকের ছায়া ছিল শোবিজে। সিনেমা, নাটক আর গান মিলিয়ে শূন্যস্থানের তালিকাটাই শুধুই দীর্ঘ হয়েছে চলতি বছর।

বিজ্ঞাপন

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ছিলেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কার-সহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ হারিয়েছে এই সুরের পাখিকে। ২২ জানুয়ারি ৬৩ বছর বয়সে ঢাকার আফতাবনগরে তার নিজ বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শাহনাজ রহমতউল্লাহ

শাহনাজ রহমতউল্লাহ

বাংলাদেশের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী ছিলেন শাহনাজ রহমতউল্লাহ। দেশাত্মবোধক গান গেয়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। তাঁর গাওয়া এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে‌ এবার বল তাঁর গাওয়া এই ৩টি গান বিবিসির করা জরিপে সর্বকালের সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পেয়েছে। তিনি একুশে পদক এবং ১৯৯০ সালে ছুটির ফাঁদে চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এই গুনী সংগীত শিল্পী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালের ২৩শে মার্চ ঢাকার বারিধারায় নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।

টেলি সামাদ

টেলি সামাদ

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের শক্তিশালী ও জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা ছিলেন টেলি সামাদ। টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকেও অভিনয় করেছিলেন এই অভিনেতা। এছাড়াও তিনি গায়ক এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন। চলতি বছরের ৬ এপ্রিল দুপুরে অসুস্থতাজনিত কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

সুবীর নন্দী

সুবীর নন্দী

৫ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া সংগীত শিল্পী ছিলেন সুবীর নন্দী। এছাড়া সঙ্গীতে তার অবদানের জন্য ২০১৯ সালে তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। বাংলা গানের এই জনপ্রিয় শিল্পী চলতি বছরের ৭ মে ৬৫ বছর বয়সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

হুমায়ূন কবীর সাধু

হুমায়ূন কবীর সাধু

চলচ্চিত্র অভিনেতা, নাট্য পরিচালক ও লেখক ছিলেন হুমায়ূন কবীর সাধু। মোস্তফা সারোয়ার ফারুকির নির্মিত মেইড ইন বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। নাট্য অভিনেতা হিসেবে তিনি একাধিক নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

মাহফুজুর রহমান

মাহফুজুর রহমান

আনন্দ অশ্রু, হাজার বছর ধরে, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলাসহ অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমার চিত্রগ্রাহক ছিলেন মাহফুজুর রহমান। হফুজুর রহমান খান চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণের জন্য নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটবার বাচসাস পুরস্কার এবং একবার বিশেষ বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেছেন। চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

পৃথ্বী রাজ

পৃথ্বী রাজ

ক্লোজ আপ ওয়ান তারকা পৃথ্বী রাজ ২০১১ সালে নিজের প্রথম অ্যালবাম ‘ডট’ প্রকাশ করেছিলেন। পরিচালনা করতেন ‘সেন্টার ফর মিউজিকলজি’ নামের একটি গানের স্কুলও। সংগীতের পাশাপাশি তিনি এবিসি রেডিওতে কর্মরত ছিলেন। গেল ১৫ ডিসেম্বর নিজের স্টুডিও জিলাপিতে কাজ করার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।

আরও যাদের হারিয়েছি

বছরের শুরুতেই ৫ জানুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ষাটের দশকের সিনেমার প্রখ্যাত প্রযোজক ইফতেখারুল আলম। ৬২ বছর বয়সে ‘পাগল মন’ গানের গীতিকার আহমেদ কায়সার গত ১ এপ্রিল পটুয়াখালী জেলার চরখালী গ্রামে নিজ বাসভবনে মারা যান। গেল ১৮ এপ্রিল ৬২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন পরিচালক হাসিবুল ইসলাম মিজান।

৮৩ বছর বয়সে গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে মারা যান টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান অভিনেতা অভিনেতা সালেহ আহমেদ। গেল ২৯ এপ্রিল মারা যান কৌতুক অভিনেতা আনিসুর রহমান আনিস। গেল ১৯ মে পৃথিবীয় মায়া ত্যাগ করেন অভিনেত্রী মায়া ঘোষ।

২২ মে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বরেণ্য নজরুলসংগীত শিল্পী খালিদ হোসেন। চলতি বছরের ২ জুন না ফেরার দেশে চলে যান নাট্যকার, অভিনেতা ও ভাষাসৈনিক মমতাজ উদ্দীন আহমদ। একই দিনে মারা যান চলচ্চিত্র নির্মাতা নাজমুল হুদা মিন্টুও।

৬৭ বছর বছর বয়সে গেল ২৬ আগস্ট মারা যান অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক খলিলুর রহমান বাবর। ৫৬ বছর বয়সে গেল ১৮ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন নির্মাতা মোহাম্মদ জাকির খান। গত ২৩ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা আজিজ না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। গেল ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাট্যনির্মাতা ও সিসিমপুরের পরিচালক শাহাদত হোসেন সুজন।