শতবর্ষী বৃদ্ধাকে ঘর উপহার দিলেন এসপি বিপ্লব

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শতবর্ষী বৃদ্ধাকে ঘর উপহার দিলেন এসপি বিপ্লব

শতবর্ষী বৃদ্ধাকে ঘর উপহার দিলেন এসপি বিপ্লব

সালমা বেগম, বয়স প্রায় ১১০ বছর। রংপুর নগরীর বসুনিয়াপাড়ায় থাকেন। তার স্বামী মারা গেছেন বহুআগে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বৃদ্ধার ঠাঁই হয়নি কোথাও। আট সন্তানের জননী সালমার দিন কাটছে ধুকে ধুকে। কেউ দেখাশুনা না করায় তার সত্তর বছর বয়সের অসুস্থ এক ছেলে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কিন্তু অসহায় সংসারে মায়ের অবদারের কাছে নিরুপায়।

ছোট্ট একটা ঝাঁপড়ি ঘরে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছিলেন বৃদ্ধা। তার এই অসহায় জীবনে আরও করুণ পরিণতি নেমে এসেছে করোনা মহামারি শুরু হওয়ায়।

বিজ্ঞাপন

চলাফেরা করতে না পারা অসহায় সালমার দুঃখভরা আর্তনাত তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন 'উই আর বাংলাদেশ' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ফেসবুকের সেই পোস্ট পড়ে বৃদ্ধা সালমার পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার।

বুধবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে রংপুর নগরীর রঘুবাজার সংলগ্ন বসুনিয়াপাড়ায় বৃদ্ধা সালমা বেগমকে 'উই আর বাংলাদেশ' এর আর্থিক সহযোগিতা ও জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে একটি নতুন ঘর উপহার দেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

জরাজীর্ণ ঝাঁপড়ি ঘর ছেড়ে নতুন ঘরে দেখে অশ্রুসিক্ত চোখে মুখে বৃদ্ধা সালমা নির্বাক হয়ে যান। পরে তার হাতে নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন এসপি বিপ্লব কুমার সরকার।

এ সময় এসপি বলেন, ‘অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সওয়াবের কাজ। সমাজের বিত্তবানদের উচিত অসহায় দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। আমি মানুষ এবং পুলিশ হিসেবে সবসময় মানবিক কাজগুলো করতে চাই। এমন অসহায়দের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’

অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৃদ্ধার কাছে ঘর হস্তান্তর করা হয়

তিনি আরও বলেন, ‘সন্তানরা থাকার পরও যদি মা-বাবাকে ধুকে ধুকে মরতে হয়। এর জন্যই নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা সন্তানদের বিচার করবেন। প্রত্যেক সন্তানকে মনে রাখতে হবে, তারাও একদিন মা-বাবা হবেন। মা-বাবার সেবার মধ্যেই সুখ শান্তি রয়েছে।’

রংপুর জেলা পুলিশের সভাপতিত্বে বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার জনাব বিপ্লব কুমার সরকার।

ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তো জানতাম বৃদ্ধা সালমা বেঁচে নেই। কিন্তু এখন এসে দেখলাম তিনি বেঁচে আছেন এবং খুবই কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর আগে সালমার ছেলে বয়স্ক ভাতার জন্য বলেছিলেন কিন্তু আমি কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি। এবার আর তা হবে না। আমি একটা ব্যবস্থা করে দিব।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মারুফ আহমেদ, সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) আশরাফুল ইসলাম পলাশ, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (মাহিগঞ্জ জোন) ফারুক হোসেন প্রমুখ।