রংপুর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও পুষ্টি সূচকে পিছিয়ে
‘খাদ্যে রংপুর জেলা স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও পুষ্টির সূচকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। মেধাবী জাতি গঠনে সকলের পুষ্টি নিশ্চিতের বিকল্প নেই। তাই ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে কাজ করলে দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভায় এ কথা বলা হয়। শিশু, কিশোর-কিশোরী ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভায় জানানো হয়, জানো প্রকল্পের মাধ্যমে রংপুর জেলায় শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের পুষ্টি নিরাপত্তায় ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২১টি মাদরাসায় কিশোর-কিশোরী কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে তারা ওজন-উচ্চতা পরিমাপসহ স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় জানতে পারবে। সেই সাথে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে কৈশোর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। পুষ্টি নিয়ে কাজ করা এই প্রকল্পটি কেয়ার বাংলাদেশ, প্লান ইন্টারন্যাশনাল ও ইএসডিও’র যৌথ উদ্যোগে গঠিত।
এসময় রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান চলতি অর্থ বছরের (২০২০-২০২১) বার্ষিক জেলা পুষ্টি কর্ম-পরিকল্পনায় সকল বিভাগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এর ধারাবাহিকতায় উপজেলা পর্যায় ভিত্তিক পুষ্টি কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা জেলা পুষ্টি কমিটি বরাবর প্রেরণের জন্য তাগিদ দেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার রায়, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সরওয়ারুল হক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোঃ মহিউদ্দিন চৌধুরী, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণক আব্দুল কাদের, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার উপ-পরিচালক আখতারুজ্জামান, ইএসডিও প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর (ডেভলপমেন্ট) যামিনী কুমার রায়, জানো প্রকল্প ব্যবস্থাপক মারুফ আহম্মেদসহ কেয়ার, প্লান ও ইএসডিও’র কর্মকতার্রা। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
আলোচনা সভা শেষে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে, কেয়ার বাংলাদেশ ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় এবং ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত জানো প্রকল্পের, স্কুল পর্যায়ে কিশোর-কিশোরী কর্নারের উপকরণ ও করোনা প্রতিরোধে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও ইউনিয়ন সাব সেন্টারের উপকরণ বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে রংপুর জেলার তারাগঞ্জ, কাউনিয়া ও গংগাচড়া উপজেলার ৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২১টি মাদরাসায় ১টি করে ৩২ ইঞ্চি টিভি, ১টি ওজন পরিমাপক মেশিন, ১টি উচ্চতা পরিমাপক মেশিন, ১টি বুক সেলফ, ১টি পুষ্টি প্লেট ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিসিসি উপকরণ দেওয়া হয়।
এছাড়া ৬৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ১৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ৫টি ইউনিয়ন সাব সেন্টারে ১টি করে কাভার বিন, ৪ কেজি ব্লিচিং পাউডার ও ৪টি করে জীবাণুনাশক স্প্রে বোতল বিতরণ করা হয়।