শিশু-কিশোরদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে শিশু-কিশোরদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। মাদক, মারামারি ও ইভটিজিংয়ের সঙ্গে প্রতিনিয়তই জড়িয়ে পড়ছে উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজ ছাত্ররা। প্রায়ই ঘটছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এসব ঘটনা শিশু-কিশোরদেরকে কেন্দ্র করেই ঘটে থাকে।
এসব অপরাধ থেকে তাদেরকে বিরত রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। পাশাপাশি সন্তানদের সঠিক পথে পরিচালনা করতে অভিভাবকদের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই অপরাধ প্রবণতা থেকে শিশু-কিশোররা দূরে সরে আসবে বলে পুলিশ প্রশাসন ও সচেতন মহলের ধারণা।
সম্প্রতি শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার মদের পাট্টায় অভিযান চালায় র্যাব-১১ এর লক্ষ্মীপুর ক্যাম্প। এ সময় লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির দুই ছাত্রকে আটক করা হয়। শিক্ষার্থী হওয়ায় সতর্ক করে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এছাড়াও স্কুল-কলেজে আসা যাওয়ার পথে ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে ছাত্রীরা। কিন্তু সম্মানহানির কারণে তারা কোনো প্রতিবাদ করে না। নীরবে সহ্য করে। বেশিরভাগ সময় বহিরাগতদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শিশু-কিশোদের প্রভাব লক্ষণীয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আন্তস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টে পরাজিত হয়ে এক বিদ্যালয়ের ছাত্ররা মদিন উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় ও মান্দারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। জেলা স্টেডিয়ামে এ হামলার ঘটনায় ১২ ছাত্র আহত হয়। এরমধ্যে মান্দারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ ছাত্র জখম হয়। তাদেরকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা এ হামলা চালিয়েছে বলে আহতরা জানিয়েছেন। এ নিয়ে টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু তালেব।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, সবার আগে অভিভাবকদেরকে শিশু-কিশোরদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। স্কুল-কলেজের পর অবসর সময় তারা কীভাবে ও কাদের সঙ্গে কাটায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখতে অভিভাবকদেরকে সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান জানান, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে হবে। তাহলে তারা এসব অপরাধ থেকে বিরত থাকবে।