নওগাঁর ঐতিহাসিক দুবলহাটি রাজবাড়ি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ 
নওগাঁর ঐতিহাসিক দুবলহাটি রাজবাড়ি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

নওগাঁর ঐতিহাসিক দুবলহাটি রাজবাড়ি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

  • Font increase
  • Font Decrease

সৃষ্টি এবং ধ্বংসের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের পৃথিবী। কেউ নতুন কিছু গড়ছে, আবার কেউবা মেতে উঠছে ধ্বংসলীলায়। কিছু দায়িত্বহীন মানুষের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর নানা ঐতিহাসিক অতীত। যেকোনো জাতির সোনালী ইতিহাসগুলো সেই পুরো জাতিকে আরো ভালো ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রাণিত করে। তাই বর্তমানের ন্যায় অতীতের প্রয়োজন কোনোভাবেই কম নয়। আমাদের বাংলাদেশ জুড়েও রয়েছে এমন বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান। নানান জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্নগুলো। তার মধ্যে অন্যতম একটি ঐতিহাসিক স্থানের নাম হলো নওগাঁর দুবলহাটি রাজবাড়ি।

নওগাঁ জেলার দুবলহাটি ইউনিয়নে অবস্থিত এই জমিদার বাড়িটি। নওগাঁ শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে এর অবস্থান। জমিদার বাড়িটি প্রায় দুইশ’ বছরের পুরোনো। বাংলাদেশের অন্যান্য জমিদার বাড়ির তুলনায় এটি বেশ বড়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এক সময়ের এই বিলাস বহুল স্থাপনার এখন সংকটাপন্ন অবস্থা। প্রাসাদটির অবস্থা বর্তমানে এতটাই খারাপ যে যেকোনো সময় এটি বিধ্বস্ত হতে পারে।

১৭৯৩ সালে রাজা কৃষ্ণনাথ এই অঞ্চলটিতে শাসনকার্য শুরু করেন। তিনি তৎকালীন বৃটিশ লর্ড কর্নওয়ালিসের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৪৯৫ টাকায় জায়গাটি কিনেছিলেন। রাজা কৃষ্ণনাথের কোনো সন্তান বেঁচে না থাকায় তার নাতি রাজা হরনাথ রায় ১৮৫৩ সালে সেখানকার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। রাজা হরনাথের শাসনামলে দুবলহাটি সাম্রাজ্য সম্প্রসারিত হয়। দুবলহাটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে তিনি বিভিন্ন নাট্যশালা এবং স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেন, প্রাসাদের পাশ্ববর্তী অঞ্চলে সাধারণ মানুষদের পানির চাহিদা পূরণ করতে পুকুর খনন করেন। ১৮৬৪ সালে জমিদার পরিবারের উদ্যোগে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টির নামকরন রাজা হরনাথের নামে করা হয়। জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের পর রাজা হরনাথ ভারতে চলে যান। কিন্তু এক গৌরবান্বিত ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়ে গেছে প্রাসাদটি।

প্রাসাদের মূল ফটকে রোমান ঘরানার পিলার চারটি তখনকার রাজাদের রুচিশীলতা বহন করে। প্রাসাদটি মোট সাতটি আঙ্গিনা ও তিনশ কক্ষ নিয়ে গঠিত। এর ভিতরের দালানগুলো তিন থেকে চার তলা বিশিষ্ট। রাজা রাজেশ্বরী নামে সেখানে একটি মন্দির রয়েছে যেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালানো হতো। প্রাসাদের ভিতরে এখনো একটি কূপ রয়েছে। রাজবাড়ির সামনে গোবিন্দ পুকুর নামে একটি পুকুর ছিল। লোকজনকে আনন্দ দানের জন্য পুকুরের পাশেই গান বাড়ি নামক একটি ঐতিহ্যবাহী দালান ছিলো যেখানে বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীতসাধনা করা হতো। গান বাড়ির শেষ সীমান্তে একটি কালি মন্দির ছিল যেটি এখন আগাছায় ভরপুর। কালি মন্দির থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে রাজার বাগান বাড়ি ছিল। প্রাসাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত দালানকোঠাগুলো ইঙ্গিত করে যে দুবলহাটি সাম্রাজ্য পূর্ববর্তী যুগ কতটা সমৃদ্ধশালী ছিলো। রাজ্যটির সম্প্রসারনে এই পরিবারটির বিশাল প্রভাব ছিল। মোঘলরা হরনাথ রায় চৌধুরীকে ‘রাজা’ এবং তার পূর্ব পুরুষদের ‘জমিদার’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে, দুবলহাটির জমিদারি রাজবংশের জগতারণ একজন লবন ব্যবসায়ী ছিলেন। যিনি দুবলহাটির পাশের গ্রামে ব্যবসার জন্য এসেছিলেন এবং বিল অঞ্চল লিজ নিতে শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে তারা অনেক জমির মালিক হন। বলা হয় যে, যেহেতু ওই অঞ্চলে কোনো শস্য ছিল না, তাই কই মাছ দিয়ে কর পরিশোধ করা হতো। বর্তমানে রাজবাড়িটির অবস্থা ভীষণ দুর্দশাগ্রস্ত।

জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের পর বাংলাদেশ প্রত্নতাত্তিক বিভাগ রাজবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে তারা একে টিকিয়ে রাখতে কোনো উদ্যোগই নেয়নি। বর্তমানে ঐতিহাসিক এই স্থানটিকে স্থানীয় মাদকসেবীরা তাদের আড্ডাখানা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া এটি অসামাজিক কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত হয়েছে। যদিও তারা দর্শনার্থীদের কোনো ক্ষতি করে না তবুও এরা ভ্রমণকারীদের সহজ চলাফেরার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।  দালানকোঠাটির কোনো দরজা ও জানালা এখন আর নেই। এমনকি লোকজন এখন দালান থেকে ইটও খুলে নিতে শুরু করেছে। ভূমিকম্পের একটি মৃদু ধাক্কাই এর ভেঙে পড়ার জন্য যথেষ্ট। দালানটির দ্বিতীয় তলায় ওঠাটা খুবই ঝূঁকিপূর্ণ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঐতিহাসিক প্রাসাদটির পশ্চিম দিকের একটি অংশ দু’বার ভেঙে পড়েছে। প্রাসাদটির দেখাশুনা করার মত কেউ নেই এখন। যার ফলে ঐতিহাসিক প্রাসাদটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

   

ইমোতে বন্ধুত্বের নামে ফাঁদে ফেলে বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করতো তারা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইমো অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয়ের পর বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলে এক কলেজছাত্রের বিবস্ত্র অবস্থার ভিডিও ধারণ করা প্রতারক চক্রের ৭ নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় অপহৃত একজনকে উদ্ধার করা হয়।

প্রতারণার শিকার এক তরুণের দায়ের করা মামলায় শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ রুপনগর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন— চান্দগাঁও থানার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. আসিফ (২৩), মুন্সিমিয়ার ছেলে মো. মোরশেদ (২৯), রাউজানের গোলম শরীফের ছেলে মো. সাজে শরীফ (৪০), মনির আহম্মদের মেয়ে জেসমিন আক্তার (৪০), চন্দনাইশের আব্দুল করিমের ছেলে মো. আবুল হাসেম (৩৫), ভূজপুরের কবির আহাম্মদের ছেলে মো. নাসির উদ্দিন (৩৯) ও বাঁশখালীর নুর হোসেনের মেয়ে ফাতেমা খাতুন (২৬)।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বায়েজিদ থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র অভিযোগ করেন যে, মো. আসিফ (২৩) নামের এক তরুণের সঙ্গে কয়েকদিন আগে ইমো অ্যপের মাধ্যমে তার পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কয়েকদিন পর আসিফ তাকে দেখা করতে বলে। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্র্রিল) রাতে সে রূপনগর আবাসিক এলাকার গেইটের সামনে গেলে আসিফ তাকে কৌশলে আবাসিক এলাকার একটি ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে আরও ৪ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা উপস্থিত ছিল।

তিনি আরও বলেন, বাদী বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ ১ হাজার ৪৫০ টাকা নিয়ে নেয়। এরপর তাকে জোরপূর্বক উলঙ্গ করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে আসিফ। এসময় অভিযুক্তরা বাদীর কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে বাদীর উলঙ্গ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এসময় বাদী তার নিকট আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে টাকা না পেলে অভিযুক্তরা তাকে বাসা থেকে বের করে আবাসিক এলাকার গেইট থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেয়।

পরে বাদী বিষয়টি বায়েজিদ বোস্তামী থানায় জানালে পুলিশের একটি দল তাকে নিয়ে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রূপনগর আবাসিক এলাকার ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। সে সময় আরও একজন ভুক্তভোগীকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

;

চট্টগ্রাম নগরে চোলাই মদসহ তিনজন আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরে চোলাই মদসহ তিনজন আটক

চট্টগ্রাম নগরে চোলাই মদসহ তিনজন আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন পুরাতন ফিশারী ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব-৭।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আাটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, বিকাশ দাস (৩৭), আব্দুল মান্নান (৫০) ও মো. জসিম উদ্দিন (৫২)।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার জানান, কোতোয়ালী থানার ইকবাল রোড পুরাতন ফিশারী ঘাট এলাকার একটি টিনশেড ঘরের ভিতরে মাদকদ্রব্য মজুদ করে বিক্রয় করছে। এসময় দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা বিকাশ দাস, আব্দুল মান্নান ও মো. জসিম উদ্দিনকে আটক করে।

তিনি আরও জানান, এসময় ১৮টি বস্তার মধ্যে ২০০টি প্লাস্টিকের বোতলে রক্ষিত অবস্থায় সর্বমোট ৩৫০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধারসহ করা হয়। আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন কৌশলে মাদকদ্রব্য স্বল্প মূল্যে সংগ্রহ করে মজুদ করে পরবর্তীতে নগরের বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের নিকট অধিক মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ২ লাখ টাকা। আটককৃতদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নগরের কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

'ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করলেই আইনগত ব্যবস্থা'



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধে জনসচেতনতামূলক বিট পুলিশিং সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ। এসময় ট্রেন ভ্রমণে অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি থেকে সতর্ক থাকা, রেলক্রসিং ও রেললাইন পারাপারে সতর্কতার বিষয়েও সচেতন করা হয়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া রেলস্টেশনে এই বিট পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে রেলওয়ে এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমনে সহযোগিতা কামনা করেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলার পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।

রেল এলাকায় কোন দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে সবাইকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন হাছান চৌধুরী।

তিনি বলেন, 'রেলওয়ে পুলিশ স্টেশনগুলোতে সিসিটিভি বসিয়েছে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য। ইদানিং এই এলাকাগুলোতে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করলেই পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।'

রেলওয়ে আইন অনুযায়ী চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ একটি দণ্ডনীয় অপরাধ উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, 'এ দেশ আমার আপনার। আপনাদের সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।'

সমাবেশ শুরুর আগে প্লাটফর্মের ফুটওভারব্রীজে ঝুকিপূর্ণভাবে চালানোর অভিযোগে সাতকানিয়া রেলস্টেশনের প্লাটফর্ম থেকে আটটি সাইকেল আটক করা হয়।

সমাবেশে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সাতকানিয়া রেলস্টেশন মাস্টার রতন দাশ, স্টেশন সংলগ্ন এলাকার মানুষ, রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্থানীয় দোকানি ও স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশ থেকে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ না করার পাশাপাশি রেললাইন ও রেলক্রসিং দেখে শুনে পারাপার, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার এবং মাদকদ্রব্য চোরাচালান, চেইন পুলিং ও ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ না করতে উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করা হয়।

;

‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু রেলওয়ের এক নম্বর অগ্রাধিকার’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
রেলওয়ের ডিজি সরদার সাহাদাত আলী

রেলওয়ের ডিজি সরদার সাহাদাত আলী

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর বিষয়টি রেলওয়ের এক নম্বর অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেছেন, আমরা নীতিগতভাবে একমত; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন দিতে হবে। এটা এক নম্বর প্রায়োরিটি। এই রুটে ট্রেন চালুর প্রশ্নে আমাদের কোনো না নেই।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিংয়ের (সিআরবি) সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন রেলের মহাপরিচালক।

মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার চট্টগ্রাম সফরে এসেছেন সরদার সাহাদাত আলী। এ সময় তিনি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

রেলওয়ের মহাপরিচালক আরও বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর দাবি বিবেচনায় নিয়েই টাইম-টেবিলে দুটি ট্রেন রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কিছু হিসাব-নিকাশ আছে। দৈনিক কত যাত্রী যায়, আমরা কয়টা ট্রেন চালাতে পারি-এসব। আমরা জানি এই রুটে ট্রেন চালু হলে মানুষের কষ্ট কম হবে। রেলওয়ের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জনবল ও ইঞ্জিন সংকট।

রেলওয়ের সংকট তুলে ধরে সরদার সাহাদাত আলী বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে আমরা ট্রেন চালাতে পারব। সেক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের কনটেইনারবাহী একটি ট্রেন কম চালাতে হবে। কারণ হচ্ছে- আমার ইঞ্জিন আছে, বগি আছে, কিন্তু চালক নেই। আমরা নিয়োগ দিচ্ছি-কিন্তু অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে প্যানেল সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। চুক্তিতেও পুরোনো লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবুও সহজে সমাধান মিলছে না।

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু নিয়ে গত কয়েক বছরে কম কথা হয়নি। তবে সেতুটি শিগগির হবে বলে আশার কথা জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি আমরা দাতা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেতুর জন্য ১২ হাজার কোটি টাকার মতো লাগবে। সরকারি অর্থায়ন (জিওবি) থেকে আসবে ৪ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা দেবে দাতা সংস্থা। কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক কথা দিয়েছে। তারা আগামী জুনে সরকারের সঙ্গে ঋণচুক্তি করতে চায়। এটি হয়ে গেলে আমরা কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করব।

পরিকল্পনা আর কাজের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করে রেলওয়ের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, নানা কারণে সমন্বয়টা অনেক ক্ষেত্রে হয়নি। এর কারণ হচ্ছে-আমরা অবকাঠামো এবং রোলিং স্টক নিয়ে কাজ করি। দুটো কাজ যখন সমান্তরালভাবে হয় না, দুটোর মধ্যে যখন গ্যাপ থেকে যায়, তখন সমস্যা হয়। দেখা যায়-আমার লাইনগুলো চালাতে পারছি না।

তবে এই সমস্যার জন্য রেলওয়ের কোনো দোষ নেই বলে দাবি করেন সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্পগুলো কিন্তু প্রায় বিদেশি দাতা সংস্থার ফান্ডিংয়ে হয়। দেখা গেল- অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ফান্ডিং পেলাম-কিন্তু রোলিং স্টকে পেলাম না। তখন সমস্যাটা হয়। তবে আমরা কাজ করছি। রানিং প্রজেক্টগুলো শেষ হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।

;