বিমার ক্ষতিপূরণ নিয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিমাকে জনপ্রিয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রাহকরা বিমার প্রিমিয়ামের টাকা যেমন সঠিকভাবে দেন, আবার বিমার টাকাও যেন গ্রাহকরা সঠিকভাবে পান সে বিষয়টাও যত্নবান হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন।

পাশাপাশি বিমা প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ব্যবসা করেন অনেকেই বিমা করেন ঠিক আছে, অনেক সময় দেখা যায় কোনো ক্ষতি না হলেও নিজেরা আর্টিফিশিয়ালি কিছু ক্ষতি করে যেমন কোথাও একটু আগুন লাগালো বা কোথাও একটা ঘটনা ঘটালো এটা করে একটা মোটা অংকের টাকা চায়। কিন্তু আসলে খোঁজ করে দেখা যায় যে পরিমাণ অর্থ সে দাবি করে, সেই পরিমাণ খরচ হয়নি। কিন্তু যারা পরীক্ষা করতে যাবে, তাদেরকে আপনাদের ভালোভাবে শিক্ষা দিতে হবে, যে তারা যেন আবার অন্য কোনভাবে অল্প ক্ষতিকে বড় ক্ষতি হিসেবে না দেখায়। এ ব্যাপারে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (০১ মার্চ) জাতীয় বিমা দিবস উপলক্ষে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে জাতীয় বিমা দিবস-২০২১ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে সময়োপযোগী বিমা আইন প্রণয়ন করি এবং বিমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন ২০১০ প্রণয়ন করি। তৎকালীন বিমা অধিদফতরকে বিলুপ্ত করে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় বিমা নীতি ২০১৪ প্রণয়ন করি, এবং এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিমা খাতের বিকাশে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই। বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মী প্রবাসে যারা কাজ করতে চায় তাদের জন্য প্রবাসী কর্মী বিমা, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি পূর্ণ বা হাওর এলাকায় বা বন্যা কবলিত এলাকায় শস্য বিমা চালু করেছি। তবে আমাদের স্বাস্থ্য বিমাটা আরও ব্যাপকভাবে চালু করা একান্তভাবে প্রয়োজন। যেটা আমাদের দেশের মানুষ এখন সচেতন না, তবে এই করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের ভেতরে এই সচেতনতা তৈরি হবে বলে মনে করি।

তিনি বলেন, বিমা সম্পর্কে মানুষ আরও আস্থাশীল হোক এবং যার জন্য আমাদের বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা আরও কার্যকর করা দরকার; যাতে বিমার পরিধি বৃদ্ধি পায় এবং মানুষের একটা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জীবন বিমা করপোরেশন, সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাকাডেমি সাক্ষরতা বৃদ্ধির অটোমেশনের জন্য ৬৩২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং তার কাজ চলমান রয়েছে।

দেশে অ্যাকচুয়ারির অভাব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সব থেকে যেটা অভাব আমাদের কোন অ্যাকচুয়ারি নেই। বিমাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য অ্যাকচুযারি লন্ডন থেকে নিয়ে এসে এখানে কাজে দিয়েছিলাম। আসলে এ ব্যাপারে যারা পড়াশোনা করে তারা শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিদেশে চাকরি পেয়ে যায়, আর দেশের কথা ভুলে যায় এটাই হচ্ছে বাস্তব কথা। আসলে বিমাকে দক্ষ করতে হলে অ্যাকচুয়ারি একান্তভাবে প্রয়োজন। সেজন্য আমরা ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি অ্যাকচুয়ারি সম্পর্কে যারা শিক্ষা গ্রহণ করবে বা ট্রেনিং নিবে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা ব্যবস্থা নেব, তাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য যুক্তরাজ্যে প্রেরণ করা হবে। আমি জানি ওখানে যদি তারা শিক্ষা নেয় ওখানে অনেক বড় মাপের চাকরি পেয়ে যাবে, কিন্তু এখানে তাদের অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে যে তারা দেশে ফিরে এসে দেশের জন্য কাজ করবে। তাদের শিক্ষার টাকাটা আমরাই দেব। এই সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। যদিও আমরা ৫ জন শিক্ষার্থীকে সুনির্দিষ্ট করেছি যাদেরকে আমরা পাঠাবো। সেখানে তারা শিক্ষাটা অর্জন করে দেশে এসে মানুষ তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, বিমা মূলত একটা সেবামূলক পেশা। বিমা পেশাকে জনপ্রিয় করাসহ এটিকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সরকারি বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। গ্রাহকের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিমা কোম্পানিকে সেবা প্রদান করতে হবে