শিক্ষার হার বাড়ছে, মানুষ হচ্ছি কি?
আমাদের শিক্ষার হার বাড়ছে কিন্তু মানুষ হচ্ছি কি? শব্দচয়ন আর কর্মে শিক্ষার লেশমাত্র নেই। তারা যা লিখেছে মুখে আনতেও লজ্জাবোধ করছে, ধিক্কার জানাই তাদেরকে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একুশে বই মেলায় স্থাপিত মন্তব্য মঞ্চের লেখা নিয়ে এমন আক্ষেপ প্রকাশ করেন ব্যাংকার মেহেদী হাসান। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের গোল ঘরের মতো (ছাউনি ছাড়া) করে এই মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। তাতে বড় করে লেখা রয়েছে ‘হে স্বাধীনতা’ আর নিচে লেখা, ‘লিখুন আপনার কথা’। আর সেখানে লিখতে গিয়ে অনেকে যা লিখেছেন তাতে মুখে আনার জো নেই।
আবার কূরুচিপুর্ণ লেখার জবাবে অনেকেই লেখার মাধ্যমে জবাব দিয়ে গেছেন। একজন লিখেছেন ‘নিচু লোকেদের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে অশ্লীল কথা ও অশালীন বাক্য’।
পাবলিক টয়লেটের ভেতরে যেমন নানান কূরুচিপূর্ণ লেখা দেখতে পাওয়া যায়। অনেকটা তারও প্রতিচ্ছবি এখানে ফুটে উঠেছে। ওমুক প্লাস তমুক, আবার ভালগার লেখা থেকেও পিছু পা হননি অনেকে। কতোজন তার প্রেমিকের নামও কলমের আঁচড়ে লিখে গেছেন। কেউ কেউ নিজের ফোন নম্বর দিয়ে কল মি লিখেছেন। অনেকে আই লাভ ইউ…… দিয়ে প্রেমিকার নাম লিখে গেছেন (নাইম+শারমিন, সুবর্ণা+ রিপন)। দু’ একজন ঢাবি ও বুয়েটকে গালাগাল করতেও ছাড়েনি।
শিশু সুলভ মন্তব্যের সংখ্যা বেশি হলেও গঠনমুলক মন্তব্য যে নেই তা বলার সুযোগ নেই। বাকস্বাধীনতা নিয়ে আক্ষেপ ঝরেছে কারো কারো, কেউ কেউ মৌলবাদ মুক্ত বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা লিখে গেছেন। একজন লিখেছেন, অনেকে জ্ঞানগর্ভভাবে বাঙালি সংস্কৃতির কথা বলে, কিন্তু তার সকল আচার অনুষ্ঠানে পাশ্চাত্যের চালচলনে ভরা। বাঙালি মানুষ। নিচে লিখেছেন ‘আমি গর্বিত আমি বাঙালি’।
স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু বলেছেন, পাসের হার কমে গেছে। তারা কেনো ফেল করলো, শিক্ষকদের দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
লেখক জাকারিয়া মন্ডল বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একাত্ত্বতা প্রকাশ করার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রকাশ ভঙ্গি মার্জিত হওয়া বাঞ্ছনীয় । তবে লেখা দেখে মনে হচ্ছে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও শিশুই রয়ে গেলাম। পরিণত হয়ে উঠতে আর কতো সময় প্রয়োজন!
তিনি বলেন, সবার আগে মানুষ নৈতিক শিক্ষা পায় পরিবার থেকে। স্বাধীনতা মঞ্চে হঠকারি লেখার আগেও তারা স্কুল কলেজে করে এসেছে। স্বাধীনতার সঙ্গে এক ধরনের রসিকতা। ব্যক্তিবান হয়ে ওঠার শিক্ষার পরতে পরতে ভুল করে যাচ্ছি। প্রপার গাইডলাইন থেকে দূরে সরে রয়েছি।
অবিভাবক ও শিক্ষকদের হঠকারি কাজ দেখে তারাও শেখে। শিক্ষক ও অবিভাবকের ভূমিকা আরও গঠনমূলক হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।