শুকিয়ে গেছে বড়াল



শিরিন সুলতানা কেয়া, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শুকিয়ে গেছে পদ্মার শাখা নদ বড়াল। এই নদের বুক চিরে চলে গেছে ছোট্ট একটি খাল। সেই খালের পানি দিয়ে বেশিরভাগ অংশজুড়ে চাষ হয়েছে বোরো ধানের। স্লুইস গেট দিয়ে পানির প্রবাহ কমিয়ে ফেলা এবং নাব্যতা কমে আসায় নদটির এখন করুণ দশা। দীর্ঘ দিন ধরেই ড্রেজিং করে এই নদে আবারও প্রাণ ফেরানোর দাবি জানাচ্ছেন পরিবেশবাদীরা। কিন্তু লাভ হয়নি।

পদ্মা থেকে বড়াল নদের উৎপত্তি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়। এরপর নদটি রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের বাগাতিপাড়া ও বড়াইগ্রাম; পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ি হয়ে হুরাসাগরের বুকে মিশেছে। হুরাসাগর মিশেছে যমুনার সাথে। বড়ালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮৯ কিলোমিটার। এক সময় সারাবছর যোগাযোগের জন্য নৌপথটি ব্যবহার হতো। এখন সবই স্মৃতি। ভরা মৌসুমের দুই মাস নদে নৌযান চলতে পারে। তারপর আবার শুকিয়ে যায়। শুরু হয় ফসলের আবাদ। নদের বুকে এখন রয়েছে বোরো ধান।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, চারঘাট এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৮৫ সালে বড়ালের উৎপত্তিস্থলে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর ফলে বড়ালে পানি কমতে থাকে। সে সময় বড়ালের উৎসস্থল চারঘাটে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। পরে নদের ৪৬ কিলোমিটার ভাটিতে আটঘড়ি নামক স্থানে আরও একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ১২৫ কিলোমিটার ভাটিতে পাবনার চাটমোহরে আড়াআড়িভাবে তিনটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। দহপাড়া এলাকাতেও আরও একটি স্লুইস গেট তৈরি করা হয়। স্লুইস গেটগুলো নষ্ট হয়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে বড়ালে পানিপ্রবাহ থেমে যায়। ধীরে ধীরে বড়াল মরতে থাকে। এখন ভরা মৌসুমে চারঘাট স্লুইস গেট হয়ে বড়াল নদে পানি ঢুকলেও অন্য এলাকায় গিয়ে আবার স্লুইস গেটে আটকে যায়। ফলে ঠিকমতো পানির প্রবাহ নিশ্চিত হয় না। কিছু দিনের মধ্যেই বড়ালের পানি শুকিয়ে যায়।

সম্প্রতি চারঘাট উপজেলা সদরে বড়ালের উৎপত্তিস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্লুইস গেটের কপাট খোলা। কিন্তু পদ্মার যে অংশ দিয়ে বড়ালে পানি ঢুকবে সেখানেই পানি নেই। ফলে বড়ালে পদ্মা থেকে এখন কোন পানি আসছে না। চারঘাট এলাকায় বড়ালের বুকজুড়ে ধান চাষের চিত্র দেখা যায়। ধানে সার দিচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সাবিয়ার রহমান। তিনি বললেন, যার বাড়ি বা জমির সামনে নদের যে অংশ পড়েছে তিনি সেখানে ধান চাষ করেন। বছরের পর বছর এটাই হয়ে আসছে।

বাঘার রুস্তমপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বড়ালের বুক চিরে ছোট্ট একটা খাল চলে গেছে। খালটির দুইপাশে নদীর বেশিরভাগ অংশে চাষ হয়েছে বোরো ধান। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, বছরের বেশিরভাগ সময়ই নদে চাষবাস হয়। শুধু বর্ষার সময় মাস দুয়েক পানি থাকে। তিনি বলেন, সারাবছর নদে চাষাবাদ হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু পানি থাকলেই ভালো হতো। নদের পানি ব্যবহার করে পাড়ের দুইপাশের জমিগুলোতে আরও বেশি ভালো আবাদ করা যেত।

বড়াল

রুস্তমপুর এলাকার বৃদ্ধ জুলমত আলী এখন আমবাগানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। আগে বড়ালেই মাছ ধরে চলত তাঁর জীবিকা। জুলমত বলেন, বড়ালে মাছ ধরে সংসার চালিয়েছি। জমি কিনেছি। ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এখন কিছুই হবে না। এখন মানুষের বাগানে বাগানে কাজ করি। জুলমত বলেন, এই নদে স্রোত দেখেছি। চোখের সামনে একে মরতেও দেখছি।

বড়ালকে বাঁচাতে রাজশাহীর চারঘাট, পাবনার চাটমোহরসহ বিভিন্ন এলাকায় নদ রক্ষা কমিটি হয়েছে। কমিটির নেতারা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলনও করেন। শেষে বড়ালে পদ্মার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে এবং নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে নাটোরের নারদ ও মুসা খাঁ নদের আংশিক এবং চারঘাটের বড়ালের প্রবেশমুখ খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৩ কোটি ৩ লাখ টাকার প্রকল্পে নারদ, মুসা খাঁ ও বড়ালের প্রায় ১৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার খনন করা হয়। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চারঘাটে বড়ালের ইনটেক চ্যানেল খনন কাজ শেষ হয়। কিন্তু বর্ষায় বড়ালে পানি যায়নি। নদ থেকে খনন করা বালু আবার নদেই চলে গেছে।

চারঘাট বড়াল নদ রক্ষা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাদশা জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে বড়ালের প্রবেশমুখ খনন করা হয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আবার আগের মতো। নদের বালু নদেই নেমে গেছে। ওই কাজে দুর্নীতি হয়েছে। চরম গাফিলতি হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এই চিহ্ন মুছে যেতে চলেছে। এই বড়ালেই চলত হাজারও মানুষের জীবিকা। আমরা চাই বড়ালে আবারও প্রাণ ফিরুক। এ জন্য যা যা করা দরকার করতে হবে। বাদশা বলেন, প্রায় ৮৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বড়ালে যদি সারাবছর পানি থাকে তাহলে কয়েকটি উপজেলার চিত্র বদলে যাবে। নৌপথে কমখরচে যোগাযোগ সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। নদের দুইপাশ আবারও সবুজে ভরে যাবে। ফসলের আবাদ বাড়বে। তাই এই নদ রক্ষায় আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, বড়াল নদ রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে নাটোর পাউবো। তাঁরা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রস্তুত করেছে। সেটি ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমাও দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি যদি অনুমোদন পায় তাহলে বড়াল আবারও খনন করা যাবে। স্লুইস গেটগুলো সংস্কার করা হবে। তখন স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত হবে। এতে বড়ালে প্রাণ ফিরবে।

   

'খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তায় প্রকৌশলীদের আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবেশ উন্নয়ন, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়ন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, জলবায়ুর পরিবর্তন ও তার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় উপযোগী অবকাঠামো নির্মাণে এবং খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জনে প্রকৌশলীদের আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রকৌশলীগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি।’

আগামীকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ উপলক্ষে সোমবার (৬ মে) দেওয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।” 

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর মাত্র ৩ বছর ৭ মাস ৩ দিন দেশ পরিচালনার সময় পেয়েছিলেন। পাক হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৭৮টি রেলব্রিজ এবং ২৭০টি সড়কব্রিজ ধ্বংস করে। যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত সড়ক, সড়ক-সেতু, রেল, রেল-সেতু মেরামত এবং নির্মাণ করে তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সেতু মেরামতের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রায় ৪৯০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দ্রুততম সময়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন করেছিলেন। আর এ কাজে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম প্রধান সহযোগী ছিলেন প্রকৌশলীগণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু টানেল, এলএনজি টার্মিনাল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ সড়ক, রেল, নৌ ও যোগাযোগ অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে প্রকৌশলীগণই মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার সবসময়ই প্রকৌশলীদের পাশে রয়েছে। ১৯৯৬-২০০১ এর মেয়াদে আমরা আইইবি ভবন নির্মাণের জন্য রমনায় ১০ বিঘা জমি রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছি। এছাড়া আমরা ভবনের কাজ শুরু করার জন্য ৫ কোটি টাকা, দাউদকান্দিতে ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ নির্মাণের জন্য ৭২ বিঘা জমি, স্টাফ কলেজের ২য় পর্যায়ে নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য ৪৬ কোটি টাকা, খুলনা কেন্দ্রের জন্য কেডিএ-এর জায়গা বরাদ্দ, পূর্বাচলে আইইবি’র জন্য ২ বিঘা জমি, রাঙ্গাদিয়া, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, দিনাজপুর কেন্দ্র এবং ফেনী ও কক্সবাজার উপকেন্দ্রের জন্য জমি প্রদান করেছি। আইইবি ভবনের জন্য সর্বমোট ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। 

প্রধানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেছেন।

;

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক ল সাক্ষাৎ করেছেন।

সোমবার (৬ মে) সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার সাক্ষাৎ করেন এবং তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

নসরুল হামিদে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে আরো বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে। সার্বিকভাবে বাংলাদেশ অটোমেশনের দিকে যাচ্ছে। যা বিনিয়োগের সুযোগ বাড়াচ্ছে। আগামী ৫ বছরে প্রযুক্তি খাতে ৫০ থেকে ৬০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।

হাইকমিশনার সিঙ্গাপুরের আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনাকালে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুৎ, ক্লিন এনার্জি, সৌর বিদ্যুতের মূল্য, স্মার্ট গ্রিড, ডাটা সেন্টার, এলপিজি ও এলএনজি টার্মিনাল, স্টোরেজ সিস্টেম, রিফাইনারি, অটোমেশন, বিদ্যুৎ আমদানি ও রপ্তানি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আলোচনাকালে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকাস্থ সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য এফেয়ার্স শীলা পিল্লাই উপস্থিত ছিলেন।

;

প্রতি সেক্টরে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রতি সেক্টরে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী

প্রতি সেক্টরে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেছেন, প্রতিটি সেক্টরে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তারা যেন যানবাহন, রাস্তা ঘাট, হাট-বাজার, সকল প্রতিষ্ঠানে অবাধে প্রবেশ করতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

সোমবার (৬ মে) রাজধানীর আগারগাঁওস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে সোসাইটি ফর দি ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন (সোয়াক) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সোয়াকের চেয়ারপারসন সুবর্ণা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার ও এফবিসিসিআই এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ আমিন হেলালি।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক সায়েমা ওয়াজেদ বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে অগ্রদূতের ভূমিকা রেখেছেন। তিনি অটিজম ও স্নায়ু বিকাশ জনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন হিসেবে এ বিষয়ে সচেতনতা ও নীতি তৈরিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশে এনডিডি ও অটিজম বিষয়ে আজ মানুষের মাঝে যে ইতিবাচক পরিবর্তনে এসেছে, এটি সিংহভাগ কৃতিত্ব তার। আজ বাংলাদেশের সাধারণ পরিবারগুলোর মাঝে অটিজম সচেতনতা তৈরি হচ্ছে এবং তারা তাদের সন্তানের প্রতিবন্ধিতা সনাক্ত করতে সক্ষম হচ্ছেন। প্রশিক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে সরকার তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তবে আমাদের যেতে হবে আরও বহুদূর। আমি অভিভাবকদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও অভিবাদন জানাই। শুধু তারাই জানেন, কত প্রতিবন্ধকতার পাহাড় তাদের অতিক্রম করতে হয় প্রতিনিয়ত। সেই সাথে আমি অভিবাদন জানাই বিশেষ শিক্ষক-শিক্ষিকা, এবং কেয়ার গিভারদের যারা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে এই বিশেষ শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

মন্ত্রী বলেন, অটিজম বিষয়ক সচেতনতা তৈরি ও তাদের জীবন প্রণালীর সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ চিকিৎসা সহায়তা পুনর্বাসন লক্ষ্যে সরকার, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট বিধিমালা ২০১৫, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা ২০১৫, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলিং আইন ২০১৮, এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত বিশেষ শিক্ষানীতিমালা ২০১৯ প্রণয়ন করেছেন।

এই আইন এবং বিধিমালা প্রণয়ন এবং সেই সম্পর্কিত কার্যক্রম থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার রক্ষায় কতটা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে।

এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্টের আওতায়, চলতি অর্থ বছরে ২০২৩-২৪ দেশের ১৪ টি স্থানে প্রকল্প হিসেবে ১৪ টি অটিজম ও এনডিডি সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দেশের আটটি বিভাগে আটটি চিকিৎসা, শিক্ষা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।

;

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের দু’হাত ভেঙ্গে দিল কিশোর গ্যাং



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের ভেঙ্গে দিল কিশোর গ্যাং

ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের ভেঙ্গে দিল কিশোর গ্যাং

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে শ্রেণি কক্ষে ঢুকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙ্গে দিয়েছে কিশোর গ্যাং।

ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মো. হাসান (৩৪)। তিনি উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক।

রোববার (৫ মে) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে, একই দিন বেলা পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে এই ইভটিজিংয়ের এই ঘটনা ঘটে।

হামলাকারী মো. রাজু (২৪) ও আবু নোমান (২৫) মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা এলাকার বাসিন্দা।

জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক মো. শহীদ উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, বেলা পৌনে ১১টার দিকে বহিরাগত রাজু জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ক্যাম্পাসে আসে। এরপর সে মাদরাসার ছাত্র নোমানের সহযোগিতায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে। ওই সময় ছাত্রী তার ভয়ে শ্রেণি কক্ষে থাকা বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে যায়।

এরপর ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রীর অন্য সহপাঠীরা বাধা দিলেও রাজু তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। খবর পেয়ে মাদরাসার নুরানি বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল এগিয়ে আসলে ইভটিজার রাজু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মাদরাসার ভিতরে ওই শিক্ষককে মারধর করে। তাৎক্ষণিক একই মাদরাসার শিক্ষক হাসান এগিয়ে এসে সহকর্মী শিক্ষকের ওপর হামলা ও ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করলে তার সাথেও ইভটিজারদের বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জের ধরে বিকেল ৫টার দিকে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রাজু ও নোমানের নেতৃত্বে ৭/৮ জন কিশোর গ্যাং সদস্য তার গতিরোধ করে। পরে তারা শিক্ষক হাসানের ওপর হামলা চালায়। তখন হামলাকারীরা তাকে রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে বেধড়ক পেটায়। এতে তার দুই হাত ভেঙ্গে যায়।

হামলার শিকার শিক্ষকের শাশুড়ি বিবি খাদিজা ও শ্বশুর মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা এ হামলা চালায়। বর্তমানে হাসানকে জেলা শহর মাইজদীর জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের অর্থোপেডিক ডাক্তার আবদুর রহমান বলেন, তার একটি হাতে অপারেশন করে পাত বসানো হয়েছে। অন্য একটি হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে। তার দুটি হাত ভেঙ্গে গেছে।

নোয়াখালীর পুলিম সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয় শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবারকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;