গাইবান্ধার এক ভূমিহীন পরিবারের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে রানা প্লাজা
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভূমিহীন পঞ্চনন বাবুর মেয়ে স্মৃতিরাণী (২০)। নিজে জায়গা কিনে বাড়ি করবেন, এমন স্বপ্নে পাড়ি দিয়েছিলেন ঢাকার সাভার এলাকায়। কাজ নিয়েছিলেন রানা প্লাজায়। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে প্রাণ হারিয়েছেন স্মৃতিরাণী।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) চোখেমুখে চরম হতাশার ছাপ নিয়ে এ তথ্য জানালেন নিহত স্মৃতিরাণীর মা সন্ধ্যারাণী। তার বাড়ি উপজেলার কিশামত দশলিয়া গ্রামে।
জানা যায়, ওই গ্রামের শ্রী পঞ্চনন বাবু একজন ভূমিহীন মানুষ। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে কোনমতে বসবাস। স্মৃতিরাণীসহ তিন মেয়ে তার। নেই কোন ছেলে সন্তান। মেয়েদের মধ্যে সবার বড় স্মৃতিরাণী। পিতার জন্য জায়গাজমি কিনে বসতবাড়ি স্থাপন করার স্বপ্নে স্মৃতিরানী পাড়ি দিয়েছিলেন ঢাকার সাভার এলাকায়। এরপর সেখানকার রানা প্লাজার পোষাক শিল্পে চাকরি নেয়। তিনি ৭ম তলায় ফিনিসিং সেকশসনে হেলপার পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজা নামের ভবন ধসে প্রাণ হারায় স্মৃতিরানী। যেন নিমিষে স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে শ্রী পঞ্চনন বাবুর। এই সন্তানকে হারিয়ে এখনো বাকরুদ্ধ তিনি। শুধু পঞ্চনন বাবুই নয়, মাতা সন্ধ্যারানীরও একই অবস্থায় রয়েছে।
নিহত স্মৃতিরাণীর মা সন্ধ্যারানী জানান, পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিল স্মৃতিরাণীর উপর। কিন্তু রানা প্লাজার ধসের ঘটনায় সবকিছুই এলোমেলো হয়েছে। ইচ্ছে ছিল মেয়ের বেতনের টাকায় কয়েক শতক জায়গা কিনে ঘরবাড়ি করা হবে। কিন্তু, সেই ইচ্ছেটুকু পূরণ হওয়ার আগেই স্মৃতিকে প্রাণ দিতে হয়েছে রানা প্লাজা ভবনে। এই মেয়েটির শোক নিয়ে এখনো অন্যের জমিতে বসবাস করতে হচ্ছে।