‘দিন-রাত বৃষ্টি হলেও পানি যাতে নেমে যায় সেই মহাপরিকল্পনা নিচ্ছি’



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বৃষ্টি হলেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দিনের এই পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধানে ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। তবে দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনার পাশাপাশি চলছে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনাও।

জলাবদ্ধতা নিরসনে সেই পরিকল্পনা কী? নগরবাসী কবে থেকে জলাবদ্ধতামুক্ত মহানগরী দেখতে পাবেন- বার্তা২৪.কমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

মেয়র বলেছেন, জাদুর কাঠি তো কারো কাছে নেই, আলাদিনের চেরাগও নেই। তবে এটুকু বলতে পারি আমরা কোন সময়ক্ষেপণ করি নাই। যেদিন থেকে দায়িত্ব পেয়েছি, সেদিন থেকেই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নিরলসভাবে কাজ করে চলছি। যার সুফল নগরবাসী পেতে আরাম্ভ করেছে।

বার্তা২৪.কম: রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘ দিনের এই পুরনো দুর্ভোগ নিসরনে আপনার পরিকল্পনা কি?

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস: জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মহোদয় সোচ্চার হওয়ার কারণে দীর্ঘদিনের অবহেলিত বিষয়টা স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাহেব নজর দেন। এবং তিনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়ায় আমরা খালগুলো ওয়াসা থেকে পেয়েছি। এরপর আমরা সাথে সাথেই কাজ আরম্ভ করেছি। এ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় প্রায় ১০ লাখ টন পলি এবং বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

ঢাকা ওয়াসা থেকে যে নর্দমা, নালাগুলো পেয়েছি, শাখা প্রশাখা, অন্তর্জাল সেগুলো আমরা পরিষ্কারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এরই মাঝে যে খাল ও বক্স কালভার্ট পরিষ্কার করেছি সেটার সুফল ঢাকাবাসী পাওয়া আরম্ভ করেছে। আগে পানি নিষ্কাশনে যে সময় লাগতো, এখন তার চেয়ে অনেক কম সময় লাগছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন কিছুদিন আগে ঢাকাতে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়া সত্বেও তিন ঘণ্টার মধ্যেই মোটামুটি ঢাকা শহরের পানি সরে গেছে। এটার কারণ হলো পানি প্রবাহ বা পানি নিষ্কাশনের জায়গা পাচ্ছে। আমরা অন্তর্জালগুলো, নালা-নর্দমা যদি পুরোদমে পরিষ্কার করতে পারি তাহলে এটার সুফল আরও পাবে। কিন্তু এটাই সমাধান নয়। সমাধান হলো দীর্ঘমেয়াদি।

যেদিন থেকে দায়িত্ব পেয়েছি, সেদিন থেকেই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নিরলসভাবে কাজ করে চলছি- মেয়র তাপস

বার্তা২৪.কম: জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাটা কী?

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস: আমরা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করছি। যেটার মাধ্যমে ঢাকা শহরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড, ঐতিহাসিক যে তথ্য রয়েছে সেটার ওপর নির্ভর করে ধারণক্ষমতা ও সক্ষমতা সেভাবে বৃদ্ধি করতে চাই। যাতে করে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হলেও দ্রুত পানি নেমে যায়। এখন পর্যন্ত ঢাকা শহরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩৩৩ মিলিমিটার। তাই ঢাকা শহরে ৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতও যদি হয় বা সারা দিন রাত ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিও যদি হয় তাহলে সেই বৃষ্টির পর পানি যাতে উপরিভাগে জমে না থাকে, একটু সময় নিলেও সেটা যেন ভূগর্ভস্থ জায়গায় চলে যেতে পারে এবং সেখান থেকে পরবর্তীতে নিষ্কাশিত হতে পারে, সেই অবকাঠামোর উন্নয়ন করছি। কারণ ঢাকা শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি হবেই, ঢাকা শহরের উন্নতি হবে, আবাসন বাড়বে, চাপ বাড়বে সুতরাং আমরা এমন কিছু করতে চাই না এখন করলাম ৫ বছর পরেই আবার একই সমস্যা বিরাজমান থাকে। সুতরাং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় আমরা সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা সৃষ্টি করলে আগামী ৫০ বছর ঢাকাবাসীকে সুফল দিবে। সেই লক্ষ্যে নিয়েই মহাপরিকল্পনার আওতায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সাজাচ্ছি।

এরজন্য অবশ্যই অর্থায়ন লাগবে। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাছে অর্থায়ন চাইবো। টাকা পেলে সেই কার্যক্রম হাতে নেব, কিন্তু তাই বলে আমরা এখন বসে নেই। আমরা স্বল্পমেয়াদি কাজ হাতে নিয়েছি। এখন যে ধারণ ক্ষমতা আছে সেটা যেন সঠিকভাবে ব্যবহৃত করা যায় সেই লক্ষ্যে সকল নালা-খাল পরিষ্কার করে যাচ্ছি। মধ্যমেয়াদি কাজের অংশ হিসাবে যেখানে যেখানে সংযোগের অবকাঠামো নেই বা নষ্ট হয়ে গেছে, ওয়াসার অনেক অন্তর্জাল নালা-নর্দমা ভেঙে গেছে সেগুলো পরিবর্তন করে প্রয়োজন অনুসারে কাজ করছি। যেখানে যেটা প্রযোজ্য সেভাবেই দিব।

বার্তা২৪.কম: ঢাকাবাসী কবে থেকে এর সুফল পাবে?

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস: এরই মাঝে প্রায় ১০৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে যেটা নিজস্ব অর্থায়নে দরপত্র সম্পন্ন করেছি। কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছর আরো কাজ হবে। নিজস্ব অর্থায়নে ৫০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছি হয়তোবা এই কাজটি হয়ে গেলে আরো ৫০ কোটি টাকা লাগতে পারে সেটাও নিজস্ব অর্থায়নে করব। সুতরাং স্বল্পমেয়াদি-মধ্যমেয়াদি কাজ সম্পন্ন করতে পারলে ঢাকাবাসী সুফল পাবে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হলো অতি ভারী বৃষ্টি হলে তিন ঘণ্টা, ভারী বৃষ্টি হলে ২ ঘণ্টা এবং মাঝারি ভারী বৃষ্টি হলে ১ ঘণ্টার মধ্যেই যাতে করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে পারি। তাহলে জলাবদ্ধতা একটু সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। কিন্তু এটা কিন্তু সমাধান নয়। এটা হলো মধ্যমেয়াদি কার্যক্রম। সমাধান হবে যদি দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে করতে পারি এবং সেই কাজটা আরম্ভ করতে চাই।

বার্তা২৪.কম-এর একান্ত সাক্ষাৎকারে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস

বার্তা২৪.কম: মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময়সীমা কত বছর?

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস: আমরা তো মহাপরিকল্পনার আওতায় কাজ করছি। আমরা ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা করছি। ৩০ বছরের জন্য আমরা ঢাকা শহরকে কি করে রেখে যেতে চাই, সেটার আওতায় কাজ শেষ করব ।

বার্তা২৪.কম: এই বর্ষায় যদি ভারি বা মাঝারি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে কি আবারও পানিতে হাবুডুবু খাবে নগরবাসী?

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস: দেখুন জাদুর কাঠি তো কারো কাছে নেই। আলাদিনের চেরাগও নেই। সেটা ঢাকাবাসীও উপলব্ধি করবে। তবে এটুক বলতে পারি আমরা কোন সময়ক্ষেপণ করি নাই। যেদিন থেকে দায়িত্ব পেয়েছি সেদিন থেকেই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নিরলসভাবে কাজ করে চলছি। আমাদের প্রাথমিক যে কাজ ছিল সেটা হলো নিচের দিকে নদীর মুখ পর্যন্ত পানি যাওয়ার সুযোগ ছিল না, সেজন্য সেই জায়গাগুলো পরিষ্কার করতে করতে আমরা ভিতরে চলে এসেছি। ঢাকার মধ্যে এখন নালা-নর্দমা অন্তর্জাল রয়েছে যেগুলো আমরা পেয়েছি সেগুলো বন্ধ আছে, নষ্ট আছে সেই জায়গাটা যদি সংস্কার না করি তাহলে পানিটা যাওয়ার কোনো সুযোগ পাবে না নদী পর্যন্ত। সেই কাজটা হাতে নিয়েছি। আমরা যেমন পরিষ্কার করছি আবার সংস্কারও করছি। অবকাঠামোগুলো সংস্কার করতে হয়তো এ বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু আমাদের থেমে থাকলে হবে না, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দিনে দিনে অবস্থা ভালো হবে। খারাপের দিকে আমরা যেতে দেব না। সেই লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। ব্যাপক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। ঢাকা শহরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় অল্প সময়ের মধ্যে সেই বৃষ্টির পানিকে সম্পূর্ণরূপে ভূগর্ভস্থ ধারণ করার ক্ষমতা সৃষ্টি করতে হবে। সেই সক্ষমতা এখন নেই এবং সেই সক্ষমতা নিয়ে কোনো পরিকল্পনাও আগে করা হয়নি। সুতরাং আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করব যাতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জলাবদ্ধতাকে তাদের প্রতিকূলতা হিসেবে দেখতে না পায়।

   

সার্টিফিকেট ছাড়াই দাঁতের চিকিৎসক আবু বক্কর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের কাটখইর বাজারে বেশ কয়েক বছর ধরে দাঁতের ডাক্তার সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের হাঁসাইগাড়ি গ্রামের ছামছুর রহমানের ছেলে। 

প্রায় সাত বছর ধরে উপজেলার কাটখইর বাজারে 'সেবা ডেন্টাল কেয়ার’ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন তিনি। অথচ নেই কোনো চিকিৎসা সনদ, এমনকি নেই মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল, বিএমডিসির নিবন্ধন অথচ নামের আগে ডা. পদবী ব্যবহার করেন তিনি। প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামের মানুষরা দোকানটিতে আসছেন দাঁতের চিকিৎসা নিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দাঁতের ফিলিং, স্কেলিং, লাইট কিউর, ফিলিং ক্যাপ, দাঁত ওঠানো, দাঁত বাঁধানোর সব কাজই করা হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানে। এমনকি নামের আগে ডা. লেখা সিল ব্যবহার করে সাদা প্যাডে প্রেসক্রিপশন লিখেও দিচ্ছেন তিনি। 

বিভিন্ন কাজে রোগীদের কাছ থেকে পাঁচশত টাকা থেকে  শুরু করে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে সে। এসএসসি পাশ বলে দাবি করলেও তবে সেটির সনদপত্রও দেখাতে পারেননি তিনি।

দাঁতের সব রকম চিকিৎসা চলে ভূয়া দাঁতের ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক এর গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানে। আবার দেখা যায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই দাঁতের নানারকম ঔষধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিচ্ছেন তিনি। দিচ্ছেন অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিন আবার কখনো করছেন ঝুকিপূর্ণ দাঁতের সার্জারি, এতে রোগীদের প্রাণ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তি বলেন, ‘তার বড় ভাইয়ের সাথে তাকে প্রায়ই দেখতাম। হঠাৎ করে কয়েক বছর আগে বিদেশ চলে যান তার বড় ভাই। এরপর সে প্রতিষ্ঠান খুলে কোনো সার্টিফিকেট ছাড়াই। নামের আগে ডা. বসিয়ে দাঁতের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাধারণ মানুষদের।

এলাকার আরেকজন বাসিন্দা বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার ও রোববার হাটবারে সকাল থেকে রাত অব্ধি নানা বয়সের মানুষ তার নিকট ভীড় করে দাঁতের চিকিৎসকা নেয়ার জন্য। শুনেছি হঠাৎ করেই সে নামের আগে ডা. পদবী ব্যবহার করে নিজেকে জাহির করেন। 

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে ডাক্তার বনে যাওয়া দেখে আমরাও অবাক হয়েছি তবে জানতাম না তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, আমাদের এলাকাবাসীর দাবি তার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষকে তার হাত থেকে রক্ষা করা।

ভুয়া দাঁতের ডাক্তার, আবু বক্কর সিদ্দিক নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো দাঁতের চিকিৎসক না, আমার কোনো সার্টিফিকেট নেই।নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিস থেকেও নিবন্ধন নেই আমার তবে আমরাই একটা সংগঠন বানাতে চেয়েছিলাম। বড় ভাই এর কাছ থেকে শিখেছে, তিনি বিদেশ চলে যাওয়ার পড়ে আমি প্রতিষ্ঠান দিয়েছি ,আমি কোনো দাঁতের ডাক্তার নই।’ 

এ বিষয়ে হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান  জানান, সে প্রায় অনেক বছর ধরে ডাক্তারি করে। তার সার্টিফিকেট (আরএমপি) আছে মনে হয়, চিকিৎসাও ভালোই।

সার্টিফিকেট ছাড়া কিভাবে ডাক্তার হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাটিফিকেট লাগবে ঠিক আছে তবে তার চিকিৎসা ভালো। ইউএনও মহোদয় আমাকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে আমি তার সার্টিফিকেটটা দেখবো এখন। ডেন্টালে আমি দেখি অনেক মানুষ তার কাছে ভিড় করে তবে ভুল চিকিৎসার জন্য যদি ক্ষতি হয় এটাও বিষয়।  ইউএনও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’ 

এ বিষয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আনন্দ মুঠোফোনে বলেন, এমবিবিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না। গ্রাম্য চিকিৎসক হয়ে থাকলে গ্রাম্য চিকিৎসক লিখতে পারে সেটা আইনে বলায় আছে। ভুয়া ডাক্তার হলে আমরা তো কিছু করতে পারবো না, তবে কোর্টে পাঠাতে পারবো। সেটা কোর্টের ব্যাপার। সে যদি ভুয়া হয় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করতে হবে।

;

ফেনীতে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়ছেন জেলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সারাদিন আকাশ মেঘলা ছিল। আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) জেলায় অস্থায়ী বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত কয়েক দিনের গরমের পর বৃষ্টিতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। তবে বিভিন্ন উপজেলায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতাও দেখা দিয়েছে। কিছু সড়কে ​​​​​​​অবৈধ মাটি পরিবহনের সময় ট্রাক থেকে মাটি পড়ে তা বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও খেটে-খাওয়া মানুষজন ও বিভিন্ন শপিং মল ও বিপনী বিতানের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন দুর্ভোগে।

ফেনী শহীদ মার্কেটের বস্ত্র ব্যবসায়ী ফাহিম রিমু বলেন, ঈদ পর্যন্ত এখন প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখন বেচাবিক্রির সেরা সময়। বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। দোকানে ক্রেতাও খুব একটা নেই। মানুষজন বৃষ্টিতে সচারাচর ঘর থেকে বের হতে চায়না।

আবুল কাশেম নামে এক রিকশাচালক বলেন, রমজানে সারাদিন রোজা রেখে এমন আবহাওয়া স্বস্তির। তবে বৃষ্টির জন্য বাইরে রিকশা চালিয়ে কষ্ট হয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো রাস্তায় তেমন যাত্রী ছিল না।

অন্যদিকে বৃষ্টির কারনে ফসলের বিভিন্ন ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি অফিস দিচ্ছে স্বস্তির খবর।

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, জমিতে পানি না জমলে বৃষ্টিতে ফসলের খুব বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বরং আউশ আবাদের জন্য এই সময়ের বৃষ্টি কৃষকের উপকার হবে। তবে সূর্যমুখী ও ভুট্টার গাছ নুয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নিচু জমির পানি না নামলে ফলন কম হবে।

;

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন ব্যবহারে কমেছে উৎপাদন খরচ 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় এ বছর গমের ফলন ভাল হয়েছে। কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনে গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। হার্ভেস্টার মেশিন ব্যবহারে উৎপাদন খরচও কমেছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালি হাসি। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট সহ নানা কারণে একসময় গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার কৃষকরা। 

সরকারি প্রণোদনায় কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে অর্ধেক খরচে কম সময়ে গম কাটা ও মাড়াই করতে পারায় গম চাষ বেড়েছে কুষ্টিয়ায়। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবছর জেলায় ১২ হাজার ৭১৬ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায় চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে। 

মেশিনে প্রতি বিঘা জমির গম কাটা মাড়াইয়ে কৃষকের খরচ হচ্ছে মাত্র ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা; যা শ্রমিক দিয়ে গম কাটা ও মাড়াইয়ের মজুরির অর্ধেকেরও কম। ফলে কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গমের ফলন ভাল হয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে গমের ফলন হচ্ছে ১৮ মণ থেকে ২০ মণ হারে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের আয় হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। এখন গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। 

দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চুয়ামল্লিকপাড়া গ্রামের কৃষক রানা হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গমের ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে গমের ফলন হচ্ছে গড়ে ১৮ মণ থেকে ২০ মণ হারে। 

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনে গম কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে। ফলে কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। 

মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের খয়েপুর এলাকার কৃষক তিন কৃষক (পার্টনার প্রোগ্রাম) এর আওতায় দুই একর জমিতে বারি-৩০ গম আবাদ করেছেন। এতে করে গম আবাদে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হওয়ায় এবং লাভ বেশি হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি করে গমের আবাদ করবেন। 

মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মতিয়র রহমান জানান, ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ এ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার প্রোগ্রাম) এর আওতায় আমাদের উপজেলার আমলা ব্লকে আব্দুল হালিম, আব্দুস সাত্তার ও মোস্তফা কামাল তারা যৌথভাবে দুই একর জমিতে গমের আবাদ করেন। এতে আমরা সার বীজ প্রণোদনা করেছি। পাশাপাশি কৃষি অফিসের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে গম কাটা ও মাড়াই যন্ত্র প্রদান করেছি।’  

এদিকে সরকারি প্রণোদনায় পাওয়া কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ১৫ বিঘা থেকে ২০ বিঘা জমির গম কাটা ও মাড়াই করছেন মেশিন মালিকরা। এতে তাদের উপার্জন বেড়েছে।

উন্নতজাত সরবরাহ, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ও প্রণোদনা প্রদানসহ সবধরনের সুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা গম চাষে আগ্রহী হয়েছেন এবং এ বছর গমের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে দেশ হবে সমৃদ্ধ। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন কৃষকদের সবধরনের সুযোগ সুবিধার।

;

পায়ুপথে ৭০ লাখ টাকার সোনা, 'পাচারকারী' আটক



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় মনোরউদ্দিন নামে এক যুবককে ৭০ লাখ টাকা মুল্যের ৬টি স্বর্ণের বারসহ আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। আটক পাচারকারী মনোরউদ্দিন বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামের কদর আলীর ছেলে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান ২১ ব্যাটালিয়নের বিজিবি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে সীমান্তের পুটখালি মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোষ্টের সামনে থেকে তাকে আটক করে বিজিবি। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শরীরের পায়ু পথে লুকিয়ে স্বর্ণপাচারের কথা স্বীকার করলে এ স্বর্ণের বার উদ্ধার হয়।

বিজিবি জানান, গোঁপন একটি তথ্যের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন পাচারকারীরা স্বর্ণের একটি চালান ভারতে পাচার করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করে। এক পর্যায়ে রাতে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ইজিবাইক চালিয়ে সীমান্তের দিকে প্রবেশের সময় তাকে ধরা হয়। এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস সোনার বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায় এবং তা উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭০০ গ্রাম। এবং যার মূল্য আনুমানিক ৭০ লাখ টাকা।

খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার সোনাসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্ধার সোনার চালানটি যশোর ট্রেজারিতে এবং আসামিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

;