নাটোরে ওসি এলএসডির জিম্মা থেকে ২০০ বস্তা গম উদ্ধার
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ( ওসি এলএসডি) রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত জিম্মা থেকে ২০০ বস্তা সরকারি গম উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন। তার কোয়ার্টারের পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে বিপুল পরিমাণে এই গম উদ্ধার করা হয়।
এসব গম গুদামে না রেখে নিজ জিম্মায় সংরক্ষণ করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুর ১ টায় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আকতারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে এসব গম উদ্ধার করা হয়৷ গমগুলো উদ্ধারের পর গুদামে রাখা হয়েছে।
এদিকে, অভিযুক্ত ওসি এলএসডি রফিকুল ইসলাম জেলা খাদ্য কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে গুদামের বাইরে আলাদা ভবনে গম মজুদ করেছেন জানালেও তা অস্বীকার করেছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তা রবীন্দ্র লাল চাকমা। গুদামের বদলে নিজ জিম্মায় গম রাখার অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তিনি দ্রুত সটকে পড়েন।
খাদ্য গুদামে গম সরবরাহকারী কৃষক, নিয়মিত শ্রমিক ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সরকার ধান ও চাল সংগ্রেহের মৌসুমে কৃষকদের নিকট থেকে খাদ্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করলেও কৃষকদের নানাভাবে হয়রানি করেন ওসি এলএসডি রফিকুল ইসলাম। সিন্ডিকেট করে নির্দিষ্ট কয়েকজনের থেকে ধান, গম কিনে প্রকৃত কৃষকদের শস্যের আদ্রতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফিরিয়ে দেন। গুদামে কর্মরত দীর্ঘদিনের শ্রমিকদের বঞ্চিত করে রাতের আঁধারে বাইরে থেকে শ্রমিক এনে লোড-আনলোডের কাজ করানোর পাশাপাশি নিয়মিত শ্রমিকদের ঠিকমতো মজুরি দেন না। নিজ জিম্মায় রাখা গমগুলোও তিনি রাতের আঁধারে বাইরে বিক্রি করে দেন।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আকতার বলেন, শুক্রবার দুপুরে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে গুদামে এসে পাশ্ববর্তী ভবনের একটি ঘর থেকে ২০০ বস্তা গম উদ্ধার করা হয়। গমগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে গুদামজাত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি অবহিত করে তার বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নিতে জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা রবীন্দ্র লাল চাকমা বলেন, 'গুদামের বাইরে গম রাখতে হলে নিয়ম অনুযায়ী খাদ্য বিভাগকে অবহিত করে অনুমতিপত্র নিতে হয়। এ ক্ষেত্র আমাকে অবহিত করা বা কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। বিষয়টি খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'