আইন করেও থামছে না পাড়া মহল্লায় মোটরচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য

  • মো আরমান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আইন করেও থামছে না পাড়া মহল্লায় মোটরচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য

আইন করেও থামছে না পাড়া মহল্লায় মোটরচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য

করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রাস্তায় চলছে পায়ে চলা রিকশার সাথে ব্যাটারি চালিত রিকশা। তাড়াতাড়ি নির্দিষ্ট জায়গায় যাওয়া, দুই তিন জন সমস্যা নেই এবং ভাড়া সামান্য কমে যাতায়াত করা যায় বিধায় অনেকে পায়ে চলা রিকশার চেয়ে ব্যাটারি রিকশায় যেতে পছন্দ করেন।

রাজধানীর মূল সড়কে না চললেও স্থানীয় সড়কগুলোতে বেশ বেপরোয়া ভাবেই চলছে এই ব্যাটারি চালিত রিকশা। নিয়ন্ত্রণহীন গতি এবং চালকদের বেপরোয়া আচরণ এবং হর্নের মাধ্যমে শব্দ দূষণের কারণে নিয়মিত ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে পাড়া মহল্লার মানুষদের।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় রিকশা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অলিতে-গলিতে চলাচল থাকলেও শুধু ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনেই এই ধরণের রিকশার সংখ্যা লাখের বেশি। আর রাজধানী জুড়ে এ ধরণের ব্যাটারি চালিত রিকশার সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় পায়ে চালানো রিকশার চেয়ে ব্যাটারি চালিত রিকশার সংখ্যা বেশী। আবার হারমশাই চলছে রাস্তায়। মূল সড়কে তাদের তেমন একটা দেখা না গেলেও পাড়া মহল্লায় তারা রাজত্ব করছে।

বিজ্ঞাপন
নিয়ন্ত্রণহীন গতি এবং চালকদের বেপরোয়া আচরণ এবং হর্নের মাধ্যমে শব্দ দূষণের কারণে নিয়মিত ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে পাড়া মহল্লার মানুষদের

নাখালপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মারুফ সাহেবকে প্রতিদিন নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়া, বাজার করা, ঔষধের দোকানে যাওয়াসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে বাসার বাইরে বের হতে হয়।ব্যাটারি চালিত রিকশার কারণে এখন বের হতে ভয় লাগে উল্লেখ করে বলেন, এগুলোতে ব্রেকের সিস্টেমও দুর্বল ও অপ্রতুল। এগুলো যখন হঠাৎ ব্রেক করে তখন প্যাসেঞ্জারসহ উল্টে যায়।

তিনি বলেন, সরকার আইন দ্বারা নিষেধ করার পরেও কেন তারা রাস্তায় চলছে বুঝতে পারছি না।বাসা থেকে বের হলে নামাজ কিংবা ওষুধ আনতে তাদের কারণে রাস্তায় চলা যায় না।

শিহাব নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র বলেন, বিশ্বজুড়ে চলমান করোনার এই মহামারীরতে সব থেকে ক্ষতির শিকার হয়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা। এদের অনেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যাবসা করতো। এটি ছিলো নিন্মশ্রেণির মানুষ বা খেটে খাওয়া মানুষের একটা কর্মস্থল। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি, ব্যাবসায়ে লোকসানসহ নানাবিধ কারণে হয়েছে অবাধে কর্মীছাটাই। ছাটাইকৃত এই কর্মীদের একাংশ সংসাসের ভার বইতে অন্যদের ন্যায় আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছেন অটো বা ইঞ্জিন চালিত রিকশাকে।যাদের বেশির ভাগ চালকের কোন পুর্বের অভিজ্ঞতা নেই। ফলে প্রতিনিয়ত রাস্তায় সমষ্যা করবে এটা স্বাভাবিক। 

ফরিদ নামে একজন ব্যাটারি চালিত রিকশার চালক বলেন, কাম নাই, খামু কি, বইয়া থ্যাকলে খাওন কি হাইট্যা আইব। প্যান্ডেল চালাইয়া পায়ে ফোঁসা উঢাইছি।এখন একটু আরাম কইরা চালামু সহ্য হয় না। সরকার না করলে তো গেছুনু গ্যাঁ কিন্তু সব বন্ধ হইলে আবার আনু। কে কি কউক চ্যালামুই মুই।

ফারুক নামে একজন বলেন, করোনায় মাইনসে বাইর হয় না, ফাঁকা রাস্তা সমস্যা হয় না অলি গলিতে যা একটু চালাই মেইন রোডে যাইতে পারি না পুলিশ পিড্যাইবো।

রাস্তায় মোটর চালিত রিকশা বন্ধ স্বত্ত্বেও চলাচলের বিষয়ে রাজধানীর সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন বার্তা২৪.কমকে জানান, আমার এলাকায় কোন ব্যাটারি চালিত রিকশা নেই। বিভিন্ন এলাকা থেকে যদিও কোন রিকশা আসে আমরা তাদের ফিরিয়ে দেই।প্রয়োজনে সার্জেন্টকে দিয়ে মামলা দেই।

তবে করোনাকালে তাদের প্রতি আমরা একটু সহানুভূতিশীল হলেও সরকারের নির্দেশনা মানাতে আমরা বদ্ধ পরিকর।