জেলায় জেলায় ঘুরে শরবত বিক্রি করেন মোস্তফা

  • হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুর সদরে শরবত বিক্রিতে ব্যস্ত মোস্তফা মিয়া/ ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুর সদরে শরবত বিক্রিতে ব্যস্ত মোস্তফা মিয়া/ ছবি: বার্তা২৪.কম

প্রচণ্ড গরমে একগ্লাস ঠাণ্ডা শরবত দিনের সকল ক্লান্তি মুছে দেয় তৃষ্ণার্তদের। এ এক গ্লাস শরবত শুধু পানির তৃষ্ণা নয়, মনের তৃষ্ণাও মেটায়। আপেল, কমলা, আম, বেল, আঙ্গুর ও মাল্টাসহ বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি শরবতের স্বাদই আলাদা।

এ রকমই এক শরবত বিক্রেতার দেখা মিলেছে লক্ষ্মীপুর সদরে। তার নাম মোহাম্মদ মোস্তফা মিয়া। তার বানানো ২০ টাকা মূল্যের প্রতি গ্লাস শরবতের কদর স্থানীয়দের মুখে মুখে। বর্তমানে লক্ষ্মীপুরে থাকলেও তিনি সারা বছর বিভিন্ন জেলায় গিয়ে শরবত বিক্রি করেন।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু শরবত পাওয়া যায়। বিভিন্ন হাট-বাজারেও ভ্যানে করে শরবত বিক্রি করতে দেখা যায়। সেগুলো স্বাস্থ্যকর নয় মেনে নিয়েও গরমে তৃষ্ণা মেটাতে সাধারণ মানুষ তা পান করে।

মোস্তফা মিয়া শেরপুর জেলার শ্রিবরদি উপজেলার পোড়াঘর গ্রামের হানিফ আলমের ছেলে। তার সংসারে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। ছেলে-মেয়ে দুজনই পড়ালেখা করেন।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Oct/21/1540132544105.jpg

শরবত বিক্রির কাজটি মোস্তফা চট্টগ্রামেই বেশি করেন। তবে মাসব্যাপী মেলা ও ওয়াজ-মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়ান।

মোস্তফা জানান, ভোলার চরমোনাইতে তিনি ওয়াজ-মাহফিলে শরবত বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। সেখানে লক্ষ্মীপুর শিশু পার্কের ইজারাদার শিবলু ও ফয়সালের সঙ্গে তার দেখা হয়। তাদের আমন্ত্রণে গত পহেলা বৈশাখে তিনি লক্ষ্মীপুর আসেন।

প্রথমদিকে মোস্তফা লক্ষ্মীপুর শিশুপার্ক এলাকায় শরবত বিক্রি করতেন। এখন শিশুপার্কে লোকসমাগম কম থাকায় তিনি জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে শরবত বিক্রি করেন। সেই সুবাদে তার সঙ্গে দেখা হয় জেলা শহরের চকবাজার এলাকায়।

একটি ইঞ্জিন চালিত গাড়িতে করে তিনি শরবত বিক্রি করছেন। এসব গাড়ি নসিমন নামে পরিচিত। স্টিলের সিট দিয়ে কাঠামো তৈরি ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত করতে তার প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। দোকানটিতে শরবত তৈরির জন্য পাঁচটি ব্লেন্ডার মেশিন রয়েছে। শরবত তৈরির প্রত্যেকটি উপাদান ঢেকে রাখা হয়েছে।

প্রধান উপকরণ- বিভিন্ন মৌসুমী ফল। পানির সঙ্গে গ্লুকোজ, চিনি, লবন, তোকমায়, শিলাজোট, ট্যাং, ইউসুফগুলের ভুসি, বরফ ও ব্লেন্ডারে পিষানো ফলের রস মিশিয়ে শরবত তৈরি করা হয়।

জানতে চাইলে মোস্তফা বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর শরবত বিক্রি করছি। প্রথমে ভ্যানে করে বিক্রি করতাম। প্রায় চার বছর হয়েছে ইঞ্জিনচালিত গাড়িতে করে শরবত বিক্রি করছি। ঢাকা-গাজীপুর ও ভোলায় শরবত বিক্রি করতে গিয়েছি। এখন অাছি লক্ষ্মীপুরে। তবে চট্টগ্রামই বেশি থাকি।’

‘সেখানে দিনে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার শরবত বিক্রি করতে পারি। লক্ষ্মীপুরে দিনে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার শরবত বিক্রি করতে পারি।’

শীতকালে শরবত বিক্রি কেমন হয় তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শীতকালে চট্টগ্রামেই শরবত বিক্রি করে থাকি। বাইরে যাওয়া হয় না। চট্টগ্রামে শীতের দুপুরেও শরবতের চাহিদা থাকে। তবে অন্য মৌসুমের থেকে কম। আগামী ৩১ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবো।’