ব্যয়বহুল মাদক 'আইস', কয়েক হাত ঘুরে আসছে ঢাকায়

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা ২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ভয়ংকর মাদক আইস (ক্রিস্টাল মেথ) পাচারের রুট বদলে ফেলেছে মাদক কারবারিরা। অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই মাদক নানা কৌশলে কয়েক হাত ঘুরে আসছে রাজধানী ঢাকায়। এর ক্রেতা মূলত বিত্তবানদের বখাটে সন্তানরা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, এতদিন এই মাদক আকাশপথে দেশে ঢুকিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দিত কারবারিরা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে আকাশপথ এড়িয়ে এখন মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢোকানো হচ্ছে আইসের চালান। এরপর সড়কপথে নানা কৌশলে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই মাদক।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আইস পাচার চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) গুলশান বিভাগের সদস্যরা। এরপরই এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবারের অভিযানে গ্রেপ্তাররা হলো নাজিম উদ্দিন, আব্বাস উদ্দিন, নাছির উদ্দিন, মোছা. শিউলি আক্তার, মোছা. কোহিনুর বেগম, সনজিত দাস ও মো. হোসেন আলী। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫০০ গ্রাম আইস, ৬৩ হাজার পিস ইয়াবা ও একটি প্রাইভেট কার।

বিজ্ঞাপন

ওই অভিযানে অংশ নেওয়া ডিবির গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) দেবাশীষ কর্মকার গণমাধ্যমকে বলেছেন, চক্রটি কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে মাদক পাচার করে। মোহাম্মদপুর থেকে যাদের গ্রেপ্তার করেছি তারা মাদকটি বহন করছিল। আর যাত্রাবাড়ী থেকে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তারা ছিল রিসিভার (গ্রহণকারী)। চক্রের বড় একটি অংশ কক্সবাজারে অবস্থান করছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এতদিন আইস আকাশপথে দেশে প্রবেশ করানো হলেও এখন মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে সড়কপথে দেশে ঢুকছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

আইস পাচারকারীদের বিষয়ে জানাতে বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেছেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে তারা মিয়ানমার থেকে ইয়াবার সঙ্গে অত্যন্ত ব্যয়বহুল মাদক আইস দেশে ঢোকায়। এসব মাদক কক্সবাজার থেকে তারা চট্টগ্রাম নিয়ে আসে। সেখান থেকে মোংলা বন্দর অভিমুখী এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বহনকারী একটি বড় ট্রাকে করে কুমিল্লা নিয়ে আসে। সেখান থেকে প্রাইভেট কারে ঢাকায় আনে।

তিনি আরও বলেন, ইয়াবা ও আইসের মতো মাদক সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করে গোয়েন্দা পুলিশ এসব মাদক প্রবেশে আরও কঠোর হবে।

আইসের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে হাফিজ আক্তার বলেন, আইস অত্যন্ত ব্যয়বহুল, বিত্তবানরা এটি সেবন করে। আইস সেবনকারীদের কাছে 'ক্রিস্টাল মেথ' বা 'ডি মেথ' নামে বেশি পরিচিত। এটি একটি স্নায়ু উত্তেজক মাদক। মারাত্মক উত্তেজনাকর ও গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ মাদক। রাজধানীর ধানমণ্ডি, গুলশান ও বনানী এলাকায় এই মাদক সেবনকারীর সংখ্যা বেশি বলেও জানান তিনি।