মায়ের মাথা ফাটালেন ক্লোজআপ ওয়ান তারকা!
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নে জমি নিয়ে দন্দের জেরে মায়ের মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সাজুর বিরুদ্ধে। ঘটনার পরদিন তার বোন বাদি হয়ে উলিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন অভিযুক্ত সাজুর বিরুদ্ধে। শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির অভিযোগ দায়ের হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ৩ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) শিল্পী সাজু আহমেদ তার মায়ের কাছে জমির ভাগ ও টাকা না পাওয়ায় হামলা করে মাথা ফাটিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেছেন তার মা। তার বৃদ্ধা মাকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় আত্মীয়স্বজন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। তার মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে বলে জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। তিনি এখন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
সাজু আহমেদের গর্ভধারিনী মা মোছা. রানীজান বেগম (৬৫) বলেন, ‘আমি অনেক সহ্য করেছি। বাচ্চা মানুষ, আমার কোলের সন্তান। সে আমাকে আর মা বলে পরিচয় দেয় না। ওর জন্য আমি ভিক্ষা করেছি। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। সে অপরাধ করেছে। আমি মা, অনেক সহ্য করেছি, অনেক ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু আর না।’
২০০৮ সালে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভি'তে অনুষ্ঠিত একটি রিয়ালিটি শো'তে সংগীত পরিবেশ করে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা নির্বাচিত হন কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের মৃত আজগার আলী ও মোছা. রানীজান বেগমের কনিষ্ঠ ছেলে সাজু আহমেদ (৩৫)। তিনি সেই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানারআপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৩ সালে মারা যান সাজুর বাবা। প্রায় ১৯ বছর ধরে সাজুকে কোলে করে আগলে রেখেছিলেন তার মা।
থানায় অভিযোগকারী সাজুর বড় বোন আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘সে আমার ওপরও কয়েকবার হামলা করতে এসেছিল। পরে আমার মা প্রতিবাদ করায় সে মাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে। আমার চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় অনেকে বাড়িতে উপস্থিত ছিল।’
সাজুর মা আরও জানান, 'সে চেয়ারম্যান পদে (ইউনিয়ন পরিষদের) নির্বাচন করবে বলে জমির ভাগ চাচ্ছে এবং এজন্য প্রায়ই সে আমাকে অপদস্ত করে আসছে। ২০০৮ সালে তার ক্লোজআপ ওয়ান তারকা হওয়ার জন্য এসএমএসের পেছনে জমি বন্ধক রেখে লাখ লাখ টাকা শেষ করছি। এখন তার নিজের জমানো অর্থ দিয়ে নির্বাচন করতে বলেছি এবং পরে জমির অংশ দিতে চেয়েছি। কিন্তু সে নির্বাচনের আগেই জমির অংশ নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এজন্য আমার ওপর হামলা করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এ ব্যাপারে শিল্পী সাজু আহমেদের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ভুক্তভোগীর বড় মেয়ে বাদি হয়ে অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’