জোয়ারে প্লাবিত লক্ষ্মীপুরের উপকূল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। অমাবস্যার প্রভাবে নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে আড়াই থেকে তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ও বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুই দিনই জোয়ারে প্লাবনের এমন চিত্র দেখা গেছস। এ দুইদিন দুপুর ১টার পর থেকে নদীতে জোয়ার আসতে শুরু করে। মঙ্গলবার এ জোয়ারের স্থায়িত্ব ছিলো সন্ধ্যা পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

জোয়ারের পানিতে জেলার কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর ফলকন, পাটওয়ারীর হাট, রামগতির চর আলেকজান্ডার, চর রমিজ, বড়খেরী, চর গাজী, চর আবদুল্যাহ, সদর উপজেলা চররমনী মোহন ও রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চর বংশী এবং উত্তর চর বংশী ইউনিয়নের নীচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় বেড়িবাঁধ না থাকায় এসব ইউনিয়ন অরক্ষিত হয়ে পড়ে।

গত রোববার ও সোমবার একই কারণে ওইসব এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা সাময়িক দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। কারো কারো বসতঘর এবং গোয়াল ঘরেও ঢুকে পড়ে জোয়ারের পানি। তবে কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. দুলাল হোসেন বলেন, দুপুরের দিকে মেঘনা নদীর অতিরিক্ত জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে। এতে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। বিকেলের দিকে পুনরায় পানি নেমে যায়। জোয়ারের পানি অনেকের রান্নাঘরের মাটির চুলোয় ঢুকে পড়ায় রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

মেঘানার জোয়ারে প্লাবিত লক্ষ্মীপুরের উপকূল। ছবি: বার্তা২৪.কম
মেঘানার জোয়ারে প্লাবিত লক্ষ্মীপুরের উপকূল। ছবি: বার্তা২৪.কম

কমলনগরের চর মার্টিন ইউনিয়নের নাসিরগঞ্জ এলাকার গৃহবধূ নাসরিন আক্তার জানান, গত দুইদিন ধরে জোয়ারের পানি তার কাঁচা ঘরে ঢুকেতেছে। পানি নামার সময় ঘরের ভিটার মাটি ধুয়ে চলে যায়।

রামগতির মেঘনা নদী বেষ্টিত বিচ্ছিন্ন চর আবদুল্যাহ ইউনিয়নের চর গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সাদ্দাম হোসেন জানান, গত তিনদিন থেকে অমাবস্যার প্রভাবে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে তাদের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিমজ্জিত হয়ে যায়। কয়েকঘণ্টা পর পুনরায় জোয়ারের পানি নেমে যায়।

মেঘনা তীরের বাসিন্দা মো. সানা উল্যা জানান, চলতি বছরে চার বার জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। রামগতির বয়ারচর থেকে কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত মেঘনী নদী সংলগ্ন প্রায় ৩৭ কি. মি. এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় অতিরিক্ত জোয়ারের পানি প্রতিনিয়ত উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করে। জোয়ারের পানি নামার সময় নদীর তীরে ভয়াভহ ভাঙন দেখা দেয়।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহম্মেদ বলেন, সাধারণত অমাবস্যা বা পূর্ণিমার প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির স্তর আড়াই থেকে তিন ফুট বৃদ্বি পায়। যার কারণে এ সময়টাতে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তীররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হলে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পাবে উপকূলের বাসিন্দারা।