অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছি: আইভী

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নারায়ণগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ডা. সেলিনা হায়াত আইভী

ডা. সেলিনা হায়াত আইভী

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে টানা তিনবার নাসিক মেয়র নির্বাচিত হওয়া ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন,  নারায়গঞ্জের মানুষ প্রায় ৪০-৪৫ বছর ধরে জিম্মি ছিল। আমার চিন্তা ছিল সেইসব মানুষদের কথা বলানো শেখাতে হবে। সাহসী করতে হবে। শহরের মানুষ চেয়েছিল, একটা মানুষ অন্তত তাদের পাশে দাঁড়াক। ত্বকী হত্যা নিয়ে আমরা প্রচণ্ড আন্দোলন করেছি। আমরা একটা প্লাটফর্ম করেছি। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছি। আমি আমার অবস্থান থেকে কখনো পিছপা হয়নি আর কখনো হবো না।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) “সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন: জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অভিজ্ঞতা” শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

সংলাপে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত ও রাশেদ খান মেনন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে পছন্দ করে। এবারের ভোট খুবই ষড়যন্ত্রমূলক ছিল, আল্লাহর অশেষ রহমতে, মানুষের আস্থা ও ভালোবাসায় বের হতে পেরেছি। এবারের নির্বাচনটা আমার জন্য একটু কঠিন ছিল। ২০১১ ও ২০১৬ সালের ভোটও কঠিন ছিল। কিন্তু কোনো নিবার্চনেই ষড়যন্ত্রেরে বাইরে আমি ছিলাম না। অনেক প্রতিকূলতার মাঝে নির্বাচন করতে হয়েছে। যদিও আমার দল সরকারে আছে তারপরও অনেক বাধা-প্রতিকূলতার মধ্যে ভোট করতে হয়েছে। সাধারণ মানুষের আস্থাভাজন হয়ে জয়ী হয়েছি। আমার আস্থা ও ভরসার জায়গা জনগণ। আমি সবার সঙ্গে মিশি। সবার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। ন্যায়সঙ্গত কাজ করেছি, কারও কাছ থেকে সুযোগ নিইনি। আমার ভোট কমে যাবে এমন চিন্তা করে কোনো কাজ করিনি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমি কোনো ভায়োলেন্স পছন্দ করি না। আমার কোনো বাহিনী নেই। অনেক বাধা-বিপত্তি এসেছে। এমনকি হকার ইস্যুতে আমাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। আমরা কর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কখনো আমি বাহিনী গড়িনি বা প্রতিশোধপরায়ণ হইনি। শান্তিপূর্ণভাবে নারায়গঞ্জের মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমাকে অনেকবার আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই আমি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।

নারায়ণগঞ্জে ভোট কমার কারণ উল্লেখ করে আইভী বলেন, ভোট কমেছে ইভিএমের কারণে। এমন না যে আমার ভোটাররা ভোট দিতে আসেননি। ইভিএম অনেক স্লো ছিল, নষ্ট ছিল। অনেকেই ভোট দিতে পারেননি। ফিঙ্গার মেলাতে পারেনি।

তিনি বলেন, তৈমূর আলম বিএনপি থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন। কিন্তু উনার সব উইং কাজ করেছে। বিএনপি কাজ করবে এটা সত্য। কিন্তু বিহাইন্ডে তিনি যাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন, তারা ভোটে ভয়াবহ ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে। সেটা কাউন্সিলরদের মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে করার চেষ্টা হয়েছে। এমনটি হলে স্থানীয় নিবার্চন আর উৎসবমুখর হবে না।

ধর্মীয় উসকানি দিয়েও অনেক অপপ্রচার করা হয়েছে উল্লেখ করে নাসিক মেয়র বলেন, আমি নাকি মসজিদের জায়গা ভেঙে দিয়েছি, আমি নাকি ‘জয় বাংলা’ পড়ে মরতে চাই, কালেমা পড়ে নয়- এসব কথা ছড়ানো হয়েছে। আমি মসজিদের জায়গা ভাঙিনি, বরং সাতটা মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছি। মন্দির করেছি, শ্মশান করেছি, গির্জা করেছি। আমি ঘোমটা কেন দিলাম না, এ নিয়েও অপপ্রচার হয়েছে। আমার কাছে অবাক লাগে- উনারা এত লেখাপড়া করা মানুষ, এত মিথ্যা কথা কিভাবে বলেন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে জয় পান আইভী। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ১৯২টি কেন্দ্রে মোট ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোট পেয়েছেন আইভী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হাতি মার্কার তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৬৬ ভোট।