রংপুর সিটি বাজার দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য: রসিক মেয়র
রংপুর সিটি বাজার এখন দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
তিনি বলেন, একটি মহল সিটি করপোরেশন থেকে মাসিক ৯০ টাকা হারে দোকান বরাদ্দ নিয়ে অন্যত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে থাকেন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে এক ব্যক্তি একাধিক দোকান বরাদ্দ নিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন তিনি। নগরীর সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ৫ দফা দাবি ও সকাল সন্ধ্যা হরতালের স্বপক্ষে মনগড়া তথ্যের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪ দশমিক ১৬ একর জমির ওপরে সিটি বাজার প্রতিষ্ঠিত। এখানে ছোট বড় মিলিয়ে ১ হাজার ১১২টি দোকান রয়েছে। ওইসব দোকান থেকে শ্রেণিভেদে ৯০ টাকা থেকে শুরু করে ৬৭৫ টাকা পর্যন্ত ভাড়া পায় সিটি করপোরেশন। নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত এই বাজারের দোকানগুলোর ভাড়া এত কম যা সত্যি অবিশ্বাস্য।
এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২২ অর্থবছরে সিটি বাজার, সিটি বাজার সাইকেল স্ট্যান্ড ও গণশৌচাগার ইজারা হতে আয় প্রায় ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এর বিপরীতে কঞ্জারভেন্সি শাখা, বিদ্যুৎ শাখা ও প্রকৌশল শাখা হতে উন্নয়নমূলক কাজে মোট ব্যয় প্রায় ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যা ব্যয়ের হার ১১৭ দশমিক ৩৮ ভাগ। যেখানে সরকার নির্ধারিত ব্যয়ের পরিমাণ মাত্র ৪৫ শতাংশ। তা সত্ত্বেও সিটি বাজার উন্নয়নে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। গণশৌচাগার নির্মাণের কাজ শুরু হলে সমিতির নেতৃবৃন্দ নকশা মনঃপুত হয়নি বলে অত্র সমিতি কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের দাবি অনুয়ায়ী নতুন নকশায় কাজ চলমান রয়েছে। যার ব্যয় ৬৩ লাখ টাকা।
এছাড়া পার্কিং, গেট ছাড়াও পানি নিষ্কাশনের জন্য ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ড্রেন ও ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে। এতকিছু সুবিধা দেওয়ার পরেও সিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে হরতাল পালন করে অর্বাচিনের মতো বক্তব্য রেখেছে। যা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে হতবাক করেছে।
তিনি আরও বলেন, সিটি বাজার ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান ভাড়া পরিশোধ করে সেই মান্ধাতার আমলের হিসেবে। সেটাও কয়েক লাখ টাকা বাকি রয়েছে। এছাড়াও সমিতির নেতৃবৃন্দ অবৈধভাবে দোকানের সামনে দোকান বসিয়ে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করছেন। সেই দোকানগুলো বাজারের ক্রেতা সাধারণের জন্য চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। অচিরেই জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এই অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ক্রেতা সাধারণের জন্য চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল মেয়র আলহাজ্ব মো. মাহামুদুর রহমান টিটু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন মিঞা, সচিব উম্মে ফাতেমা, প্রধান হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, রংপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মাহবুব রহমান হাবু, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, সিনিয়র সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, আফতাব হোসেন, নজরুল মৃর্ধাসহ জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক, রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও অন্যান্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।