গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে গণশুনানি মার্চে!
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব যাচাই-বাছা্ই করার জন্য কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাওয়া গেলে গণশুনানীতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিইআরসি কর্তৃক এলপি গ্যাসের দর ঘোষণার ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
কমিশনের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি রিপোর্ট প্রস্তুত করতে চলতি মাস লেগে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, মার্চে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রথম দফায় পেট্রোবাংলা ও বিতরণ কোম্পানিগুলো প্রস্তাব আইন ও প্রবিধান অনুসারে না হলে ফেরত পাঠায়। পরবর্তীতে পেট্রোবাংলা ও বিতরণ কোম্পানিগুলো আইন ও প্রবিধান সংবলিত আবেদন দাখিল করে। কমিশনের বৈঠকে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
মূল্যায়ন কমিটি প্রবিধান ৬ অনুযায়ী কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা রিপোর্ট করবে। তারপর কারিগরি মূল্যায়ন রিপোর্ট দেবে। যে রিপোর্ট গণশুনানিতে দেওয়া হবে বলে জানান বিইআরসি চেয়ারম্যান।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি হলে বিতরণ কোম্পানির ওপর প্রভাব পড়ে না। তারা পেট্রোবাংলা থেকে নির্ধারিত দরে গ্যাস কেনে। সে কারণে বিতরণ কোম্পানি আন্তর্জাতিক দর বৃদ্ধির অজুহাতে দাম বৃদ্ধি প্রস্তাব দিতে পারে না। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আনতে হলে পেট্রোবাংলার আনা উচিত।
এ বিষয়ে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চেয়ারম্যান বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের বেলায় আপস্টিম দর নিয়ে বিইআরসি কাজ করে না, এটা করে সরকার। বিইআরসি শুধু গ্রাহকপর্যায়ে দর চূড়ান্ত করে।
গ্যাসের দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এক চুলা ৯২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০ টাকা, দুই চুলা ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২১০০ টাকা করার প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি)।
আবাসিকে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটারের বিদ্যমান মূল্য ১২.৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭.৩৭ টাকা, সিএনজি প্রতি ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৬.০৪ টাকা, হোটেল-রেস্টুরেন্টে ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৯.৯৭ টাকা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭.০৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৭.০২ টাকা, ১০.৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩.২৪ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩.৮৫ টাকা থেকে ৩০.০৯ টাকা, চা শিল্পে ১০.৭০ টাকা বাড়িয়ে ২৩.২৪ টাকা করার প্রস্তাব করেছে।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় থাকা বিদ্যমান দর ৪.৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯.৬৬ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভারিত বিদ্যমান গড় ৯.৩৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০.৩৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অতীতে কখনই এতো বেশি পরিমাণে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়নি। যে কারণে একে নজীরবিহীন বলে উল্লেখ করেছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।