ঢাকায় রোগ আতঙ্কে মানুষ!



সুলতান মাহমুদ আরিফ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাজধানীতে বায়ু দূষণ/ছবি: মেহেদি হাসান রানা

রাজধানীতে বায়ু দূষণ/ছবি: মেহেদি হাসান রানা

  • Font increase
  • Font Decrease

কখনও মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া-ডেঙ্গুতে অতিষ্ঠ; কখনও আবার সংক্রামক করোনাভাইরাস। এর সঙ্গে রয়েছে বায়ু দূষণের ফলে নানান রোগ! রাজধানী ঢাকায় দিনরাত রোগ আতঙ্কে বসবাস মানুষের।

বায়ু আর শব্দ দুষণের সঙ্গেই গড়ে উঠেছে ঢাকার মিলবন্ধন। এসব নিয়েই নগরীর মানুষের বসবাস। প্রতিদিনই বাড়ছে বায়ু ও শব্দ দূষণ। নগরীর মানুষকে ক্রমান্বয়ে নিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুঝুঁকিতে। গত পাঁচ বছরে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়েছে গড়ে ১০ থেকে ২০ ভাগ। যা ঢাকার বাতাসকে করেছে আরও বেশি বিষাক্ত। ঢাকার আকাশে প্রতিদিন উড়ছে অন্তত ২ হাজার টন ধুলা। বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকার অবস্থান এখন দ্বিতীয়।

রাজধানীর হাসপাতালগুলো এখন অসুস্থ মানুষে ভরা। প্রতিদিনই হৃদরোগ আর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাসহ নানাবিধ মারাত্বক রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছে সকল বয়স শ্রেণির মানুষ। এর অন্যতম কারণ বায়ু আর শব্দ দূষণ।

সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীতে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হল যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়- রান্নাঘরের বর্জ্য, কাগজ, প্লাস্টিক,  পরিধেয় কাপড়-চোপড়সহ নানান বর্জ্য রাস্তায় ফেলে রাখে। যা পচে দূর্গন্ত তৈরি হয় এবং সেখান থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। যা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে আমাদের পেটে গিয়ে বিভিন্ন রোগের জন্ম দেয়। এর ফলে আমাদের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।

এই নগরের দূষণ এমন ভয়াভহ আকার ধারণ করার অন্যতম দায় কল-কারখানাগুলোর। কল কারখানাগুলোর বর্জ্য মুক্তভাবে খাল, বিল, নদী-নালায় ফেলে রাখা হয়। যার কারণে নানাবিধ দূর্গন্ধ এবং জীবাণুর জন্ম নিচ্ছে হরহামেশ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অনিয়ম বর্ষাকালে আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করে। নদী-নালায় কারখানা, হাসপাতালসহ বাসা বাড়ির বর্জ্য পানিতে ভেসে বেড়ানোর কারণে বর্ষার সিজনে রোগ বালাই নিয়েই আমাদের জীবন কাটাতে হয়।


রাজধানীর শ্যামপুর ও পোস্তগোলা এলাকায় স্টিল ও রি-রোলিং মিল থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় বিষে ভরা থাকে ওই নগরী। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের শ্বাস নেয়াটাই এখন দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু শ্যামপুর আর পোস্তগোলা না রাজধানীর সব জায়গা এখন ধুলার দখলে।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, রাস্তা খোঁড়াখুড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগা প্রকল্প, আশেপাশের ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানাসহ নানাবিধ কারণে এই বায়ুদূষণ হয়ে থাকে। এরফলে বয়স্ক নাগরিকরাসহ সব বয়সের মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বায়ু দূষণের ফলে হৃদরোগ আর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যার পাশাপাশি নারীদের প্রজনন সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এছাড়া এরফলে অর্থনৈতিকভাবে সমস্যাও সৃষ্টি হয়। বায়ুদূষণের ফলে বড় ধরনের রোগ হওয়ায় চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়। আমরা জানি, আমাদের সক্ষমতার অভাব আছে। এজন্য সব জায়গায় অন্তত দিনে দুইবার পানি দিক। আমরা দেখেছি, একবার পানি দিলে অন্তত দেড় ঘণ্টা দূষণ নিম্নমুখী অবস্থানে থাকে।

এ কর্মকর্তা জানান, বায়ুদূষণের সহনীয় মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রাম। সেখানে গাজীপুরের বায়ুর মান প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩ মাইক্রোগ্রাম। মাদারীপুরে এ মান ৪৯ মাইক্রোগ্রাম। মূলত মাদারীপুরে জলাশয়, নদী ও গাছপালার আধিক্যের কারণে বায়ুমান ভালো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ হচ্ছে গাজীপুর জেলায়। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। অন্যদিকে সবচেয়ে কম বায়ু দূষণ হচ্ছে মাদারীপুরে।

এখুনি সময় ঢাকাকে রক্ষা করা। কল কারখানাকে পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসা। তানাহলে আরও ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করছেন গবেষক ড. আহমদ কামরুজ্জামান।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক জিয়াউল হক আশা প্রকাশ করে বলেন, ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ ও মেগা প্রজেক্টের কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। যার ফলে ২০২৩ সালের পর বায়ু দূষণের মাত্রা কমে আসতে পারে। ইট থেকে সরে এসে ২০২৫ সালের মধ্যে রাস্তা ছাড়া সব নির্মাণ কাছে হবে পরিবেশবান্ধব ব্লক দিয়ে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয়া হবে। দেশে এখন ৮ হাজার ইটভাটা আছে। তা আগামীতে কমে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

   

মাটির চুলা তৈরি করে চলে বৃদ্ধা সালেহার পেট



সোহাগ হাফিজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বরগুনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির তৈরি চুলা। একসময় গ্রামগঞ্জে এ চুলার বেশ কদর থাকলেও এখন আর তেমন দেখা যায় না। তবে এ চুলা তৈরি করেই বিক্রির টাকায় চলে ৬০ বছর বয়সী বরগুনার বৃদ্ধা বিধবা সালেহার পেট। চুলা বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তার।

বরগুনা পৌরশহরের পুলিশ লাইন এলাকার রাস্তার পাশে বসে প্রতিদিন বিকেলে মাটি দিয়ে চুলা তৈরি করতে দেখা যায় সালেহাকে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার স্বামী মারা গেছে প্রায় ১২ বছর আগে। বৃদ্ধ সালেহার কাছের আপন আত্মীয় বলতে এক ছেলে থাকলেও তিনি পেশায় একজন রিকশা চালক। বেশি টাকা আয় করতে না পারায় মায়ের ভরণপোষণ দিতে পারেন না তিনি। এ কারণে বয়সের ভাড়ে কিছুটা নুয়ে পড়লেও নিরুপায় হয়ে পেটের তাগিদে মাটি দিয়ে চুলা তৈরির কাজ করতে হয় সালেহাকে।


চুলা বিক্রি করে তিনি কোনো মাসে তিন হাজার, আবার কোনো মাসে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন। এ টাকায় খেয়ে না খেয়ে তাকে পার করতে হয় পুরো মাস।

পুলিশ লাইন এলাকায় সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দূর দুরন্ত থেকে মাঠ ঘাটের মাটি সংগ্রহ করে তৈরি করে রেখেছেন ছোট বড় প্রায় ১৫ থেকে ২০টি চুলা। শুকনো মৌসুমে প্রতিটি চুলা তৈরি করতে সালেহার সময় লাগে ৮ থেকে ১০ দিন। এসব চুলার আকার অনুযায়ী প্রতিটি চুলা বিক্রি হয় ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। এতে গড়ে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২টি চুলা বিক্রি করে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিধবা সালেহার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহনাজ নামের এক প্রতিবেশী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এই চুলা বিক্রি করেই তার নিজের পেট চালায়। তার ছেলে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় সেও ঠিকভাবে রিকশা চালাতে পারে না। এ কারণেই আমি তাকে দেখি প্রায় চার পাঁচ বছর ধরে এই চুলা তৈরি করেন। অনেক কষ্ট করে দূর থেকে মাটি নিয়ে এসে ১০ থেকে ১২ দিন পরিশ্রম করে একেকটি চুলা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন। এরপর বড় ছোট আকার অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করেন প্রতিটি চুলা, তাও আবার কোনোদিন বিক্রি হয় আবার কোনোদিন বিক্রি হয় না। আত্মীয় স্বজন বলতে এক ছেলে, সেও অসুস্থ থাকায় কষ্ট হলেও তাকেই এ বয়সে এখন কাজ করতে হয়।


বরগুনার সোনাখালী এলাকার শিউলি বেগম কাজের সুবাদে প্রতিদিন যাওয়া আসা করেন পুলিশ লাইনের ওই রাস্তা হয়ে, বৃদ্ধ বিধবা নারী সালেহার বিষয়ে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই দেখি তিনি দূর থেকে মাটিকাঁদা নিয়ে এসে চুলা তৈরি করেন। তবে এ চুলার বিকল্প গ্যাসের চুলা থাকায় এখন তো তেমন কেউ মাটির চুলা ক্রয় করে না। এতে কোন দিন ১ টা বিক্রি হয় আবার হয়ও না, আবার দু’মাসেও কোন চুলা বিক্রি হয় না এমনও হয়। এই চুলা বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে সে কি খায় কি করে কীভাবে চলে তা তিনিই জানেন।

বৃদ্ধ বয়সে কোনো ধরনের কষ্টের কাজ না করে ঘরে থাকার কথা। কী কারণে প্রতিদিন চুলা তৈরির মত পরিশ্রম করছেন জানতে চাইলে বৃদ্ধ সালেহা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ১১ বছর ধরে এই চুলা তৈরির কাজ করি। আগে কম কাজ করলেও এখন প্রায় গত তিন বছর কষ্ট করে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে অনেক বেশি কাজ করতে হয়। অভাব না থাকলে কী কেউ এ কষ্টের কাজ করে? আগে ছেলে কিছু টাকা পয়সা দিত, এখন সে অসুস্থ থাকায় আগের মত কোনো টাকা পয়সা দিতে পারে না। ছেলের বউ সেও বাসা বাড়িতে কাজ করে তাদের সংসার চালায়। আমাকে কীভাবে খাওয়াবে? বয়সের কারণে অন্য কোনো কাজ করতে না পারায় বাধ্য হয়েই চুলা তৈরি করেই চলতে হয়। এছাড়া চুলাগুলো ঢেকে রাখতে ভালো দুটি পলিথিন দরকার, তাও কিনতে পারি না। যে টাকা আয় করি তা দিয়ে প্রতিদিন বাজার কিনেই খেতে হয়। আমার এ কষ্টের কথা কাউকে বলতে পারি না। আল্লাহ যদি আমারে কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে আর এত কষ্ট করতে হত না।

;

পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে আশ্রয়ণের ঘর বাতিলের হুমকি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিলের হুমকি দিয়েছেন ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে তিনি বলেছেন, পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করো; নয়ত আশ্রয়ণের ঘর বাতিল করে দেব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৩ মে) উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের রাজষপুর আশ্রয়ণে গিয়ে বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলেন ভূমি কর্মকর্তা সাহাবউদ্দি। এ সময় তিনি ওই আশ্রয়ণের সর্দার মো. শাহাদাতকে মঙ্গলবারের (১৪ মে) মধ্যে বাসিন্দাদের নিয়ে পরশুরাম সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ছবি ও আইডি কার্ড দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে নির্দেশনা দেন। পেনশন স্কিম চালু না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিল করবেন বলেও জানান তিনি। একইসময় তার সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহম্মদও আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের দ্রুত পেনশন স্কিম চালু করতে বলেন। 

রাজষপুর আশ্রয়ণের বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, ঘরবাড়ি না থাকায় আমরা আশ্রয়ণে থাকি। সেখানের সবারই আর্থিক অবস্থা খারাপ। তারমধ্যে যদি এমন কিছু করে আমাদের আর যাওয়ার জায়গা থাকবে না। গরিব মানুষ কাউকে কিছু বলতেও পারিনা। খুব কষ্টে দিন পার করেছি।

আরেকজন বাসিন্দা বিজলি আক্তার বলেন, আশ্রয়ণের সর্দার শাহাদাত ও ইউপি সদস্য পেয়ার আহাম্মদ একটি লিফলেট দিয়ে ব্যাংকে পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তাদের কথা মতো ছবি, এনআইডি আর লিফলেট নিয়ে সোনালী ব্যাংকে গিয়েছি। কিন্তু সঙ্গে ৫০০ টাকা না নেওয়ায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনমতে বেঁচে আছি। এসব পেনশন স্কিমের বিষয়ে কিছু জানিনা। ভূমি অফিসের একজন স্যার পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে আমাদের ঘর বাতিল করে দেবেন বলেছে। এখন কিভাবে কি করব জানিনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহম্মদ বলেন, আমি ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে সেখানে গিয়েছি। তাদের পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চিথলিয়া ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলেছি। কাউকে জোর করা বা ঘর বাতিলের কথা বলিনি৷  

পরশুরাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, পেনশন স্কিম নিবন্ধন করতে সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দারা নিবন্ধন না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিলের বিষয়টি সঠিক নয়। 

পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ভালো কাজের জন্য মানুষকে বলতে হয়। কিন্তু খারাপ কাজের জন্য বলতে হয় না। পেনশন স্কিম চালু করলে তাদের ভবিষ্যতের জন্যই উপকার হবে। তবে নিবন্ধন না করলে তাদের ঘর বাতিল করে দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। 

;

লিচুর ফলনে ধস, হাজার টাকা শ’



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লিচুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবার ফলন বিপর্যয় ও অধিক দামের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মানুষ। তাপপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদী হওয়ার কারণে বেশিরভাগ লিচু বাগানের লিচুর গুটি রোদে পুড়ে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে; ধারণ করেছে কালো রঙ।

গত কয়েক দিনের অতি তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচু বাগানের অধিকাংশ গাছের লিচু ঝরে পড়েছে; যার ফলে এখন লিচুশূন্য হয়ে পড়েছে বাগানগুলো অথচ কিছুদিন আগেও এলাকার লিচু বাগানগুলো লিচুর গুটিতে ভরপুর ছিল।

কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার লিচু উৎপাদনকারী গ্রামের নাম মঙ্গলবাড়িয়া। দেশ এবং বিদেশে এই মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের লিচুর বেশ খ্যাতি রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, অল্প কিছু গাছে সামান্য পরিমাণ লিচু টিকে আছে। গাছের নিচে অনেকেই লিচু বিক্রি করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে মানুষ। ১০০ লিচু এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ অল্প হলেও নিচ্ছেন আবার কেউ দাম শুনে কিনার আগ্রহ হারিয়েছেন। 

লিচুর গুটি রোদে পুড়ে, শুকিয়ে কালো রং ধারণ করেছে

মনোহরদী থেকে আসা শাহ বকুল বলেন,' আগ্রহ নিয়ে এসেছিলাম দেখতে কিন্তু হতাশ হলাম। এবার লিচু কম। যাও আছে চড়া দাম। এর চেয়ে এলাকা থেকে লিচু কিনব ভাবছি।'

কাপাসিয়া থেকে আসা রাজিব মাহমুদ বলেন, দাম বেশি তাই ৫০ টি লিচু পাঁচশো টাকা নিয়ে নিলাম। শুধু খেয়ে দেখার জন্য৷ নেওয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু সিদ্ধান্ত বদল করতে হলো দামের কারণে৷ 

জানা যায় প্রায় দুইশত বছর পূর্বে সুদূর চীন দেশ থেকে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা সর্বপ্রথম এ জাতের লিচুর চারা নিয়ে এসেছিলেন এই গ্রামের । পরবর্তীতে এ লিচুর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পর কলম পদ্ধতিতে সংগৃহীত চারা উক্ত গ্রামের ছড়িয়ে পড়ে এবং শুরু হয় লিচুর আবাদ।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের এক লিচু চাষী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব দুইশত লিচু গাছ আছে। এছাড়াও আমি শতাধিক লিচু গাছ কিনে রেখেছিলাম। লিচু গাছগুলোতে মৌসুমের শুরুতে মকুলে ভরপুর ছিল। কিন্তু এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও গত কয়েকদিনের অতি গরমের কারণে লিচু বাগানের অধিকাংশ গাছের লিচু ঝরে পড়েছে। এর ফলে এখন লিচু বাগানের গাছগুলো লিচু শূন্য হয়ে পড়েছে। এর ফলে এখন আমাদের মাথায় হাত পড়েছে।’

তিনি বলেন, প্রতিবছর এই গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হলেও এবার লিচু চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

লিচু আকারেও বেশ ছোট

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর ই আলম জানান, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লিচু গাছ রয়েছে। এই গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ দশ কোটি টাকার লিচু বেচাকেনা হতো তবে এবার প্রাকৃতিক প্রচণ্ড গরমের কারণে অন্যান্য ফসলাদীর ন্যায় লিচু চাষিরা অনেক ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন। আমরা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এলাকায় লিচু চাষীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে লিচু চাষের করণীয় বিষয় নিয়ে প্রচারপত্র বিতরণ করেছি। এছাড়াও ৪ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে লিচু বাগানের খোঁজখবর নেওয়া এবং লিচু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার লিচু চাষীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামার বাড়ি) উপপরিচালক মো. আবদুস সাত্তার বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহ এবং উপযুক্ত সেচ সুবিধার অভাবে এবার মঙ্গল বাড়িয়া জাতের লিচুর ফলনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সেচ সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে চাষীদের কৌশলী ভূমিকা পালন করতে হবে।

;

রংপুরে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে নগরীতে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশকিছু তুলার বস্তা পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বুধবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার গুদামে এ ঘটনা ঘটে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার  গোডাউনে আগুন জ্বলে উঠে। এতে প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। 

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক শওকত আলী জানান, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের দোতলায় একটি পাকা গোডাউন ঘর ছিল, সেখানে আগুন লাগলে আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। তুলার বস্তা ছাড়া অন্য কিছু পোড়া যায়নি।

তিনি বলেন, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।

;